সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনকে সামনে রেখে নীরবে শুরু হয়েছে নির্বাচনী পূর্বাভাস। বর্তমান কমিটিতে ক্ষমতাসীন দলের জয়জকার ছড়িয়ে পড়ায় দলের সমর্থন পেতে উঠেপড়ে লেগেছেন আইনজীবীরা। তবে বর্তমান কমিটিতে আসীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলয়ের আইনজীবীদের মাঝে আবারও মনোনয়ন পাবার গুঞ্জন উঠলেও সেখানে নতুন মুখের আবির্ভাব ঘটতে উঠেপড়ে লেগেছেন আরও দুই আইনজীবী। ফলে দীর্ঘদিন পরে পুনরায় আওয়ামী বলয়ের অভ্যন্তরেই প্রতিযোগীতা মূলক নির্বাচন দেখার সম্ভাবনা রয়েছে।
বারের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী একজন আইনজীবী একই পদে ২বারের বেশী নির্বাচিত হতে পারবেন না। সে সুবাদে বারের বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাসান ফেরদৌস জুয়েল সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন না। তার স্থলে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোহসিন মিয়া দাঁড়াবেন সভাপতি পদে। তবে সভাপতি পদ পেতে আগ্রহী রয়েছেন বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিব আল মুজাহিদ পলু। আদালতে তিনি সিনিয়র আইনজীবী আনিসুর রহমান দিপু সমর্থক হিসেবেই পরিচিত। ফলে বর্তমান কমিটি বিরোধী একাংশের সমর্থন বেশ সহজেই পেয়ে যাবেন বলে ধারণা করছেন অনেকেই।
তবে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোহসিন মিয়ার জনপ্রিয়তা অন্যান্য সকল সময়ের তুলনায় বেশী হওয়ায় সভাপতি পদে মনোনয়ন পেতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না বলেই মনে করছেন বারের আইনজীবীরা। কারন হিসেবে নির্মানাধীন বার ভবনের কার্যক্রম পরিচালনা ও অতীতের ধারাবাহিকতায় আদালতে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের শক্ত অবস্থান ধরে রাখার ক্ষেত্রে মোহসিন মিয়ার বিকল্প চিন্তা করা হচ্ছে না। পাশাপাশি রাজনৈতিক ভাবে নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের আস্থাভাজন হওয়ায় নিজ মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন তিনি। আর এতে করে আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী প্যানেলে লড়াই করতে মোহসিন মিয়ার নেতৃত্ব প্রায় নিশ্চিত।
বারের সভাপতি পদে মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে আইনজীবীদের মাঝে তেমন আগ্রহ না থাকলেও সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন নিয়ে আগ্রহ রয়েছে তাদের। কারন এই পদে বারের বর্তমান যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এড. মাহবুবুর রহমান ও এড. আলী আহমদ ভুঁইয়া উভয়ের নজর রয়েছে। এদের ভেতর মাহবুবুর রহমান শামীম ওসমানের বলয়ের একনিষ্ঠ কর্মী ও আলী আহমদ ভুঁইয়া পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলয়ের কর্মী বলে জানা যায়। দীর্ঘদিন বারে সাংসদ শামীম ওসমান সমর্থকদের একচেটিয়া দাপট থাকলেও সেই দুর্গে হানা দিতে সেনাপতি হয়ে আবির্ভুত হয়েছে আলী আহমদ ভুঁইয়া।
বারের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সভাপতি পদের মনোনয়ন নিয়ে আইনজীবীদের ভেতর তেমন প্রতিযোগীতা দেখা না দিলেও সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন পেতে বেশ দৌড়ঝাঁপ করতে হতে পারে উভয় বলয়ের কর্মীদের। আর এর মাঝে বারের এককালের প্রভাবশালী নেতা আনিসুর রহমান দিপুর অবস্থান হাবিব আল মুজাহিদ পলু ও আলী আহমদ ভুঁইয়ার পক্ষে বলে শোনা গেছে। আর এতে করে বারের রাজনীতিতে নতুন প্রবাহের সৃষ্টি হয়েছে।
আওয়ামী লীগের এক আইনজীবী নেতা বলেন, শামীম ওসমান বলয়ের আইনজীবীরা বেশ কিছুদিন দাপিয়ে বেড়ালেও বর্তমানে কেন্দ্রীয় ভাবেই তার বলয়ের লোকজনদের একটি ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখা হচ্ছে। তবে তার অনুসারীদের ভেতর বিতর্কিত কোন অভিযোগ না পাওয়া গেলেও দলটির সর্বস্থরে ভারসাম্য ফেরাতে মন্ত্রী গাজীর অনুসারীদের সুযোগ করে দেয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাছাড়া উপরমহলে শামীম ওসমানের চাইতে মন্ত্রী গাজীর গ্রহণযোগ্যতা অনেকাংশেই বেশী। সুতরাং বারের নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে মনোনয়নে চমক দেখা যেতে পারে আওয়ামী প্যানেলে।