সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
গ্রীন ডেলটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফলতি ও অদক্ষ চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় আলভির মৃত্যুর আগেও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছিলো বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসি। এছাড়াও এমন আরও অসংখ্য অভিযোগ থাকলেও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নেতাদের ম্যানেজ করে দিনের পর দিন চালানো হয়েছে হাসপাতালের সকল কার্যক্রম। সবশেষ গত ২৩ আগস্ট মেধাবী স্কুল ছাত্রী আলভির ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর পর ক্ষিপ্ত এলাকাবাসি ও পরিবারের লোকদের সামাল দিতে অভিযুক্ত গ্রীন ডেলটা ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন।
তবে সচেতন মহলের প্রশ্ন, এবার কত দিন বন্ধ থাকবে গ্রীন ডেলটা হাসপাতাল? নাকি পূর্বের ন্যায় কিছুদিন পর আবারও খুলে দেয়া হবে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ আগস্ট বিকেলে প্রতিদিনের মতো সমবয়সীদের সাথে ছাঁদে খেলতে গিয়ে হঠাৎ পা পিছলে পড়ে ডান পায়ের ব্যথা পায়। পরে চিকিৎসা নিতে গ্রীন ডেলটা নামের স্থানীয় একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে গেলে ডাক্টার জানায় একটি হাড় ভেঙে গেছে। পরে ২ দিন চিকিৎসা দিয়ে ব্যথা না কমায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তার শাহীন জানায় অপারেশন করালে ভালো হবে আলভির পা নয়তো পঙ্গু হয়ে যেতে পারে। তাদের কথায় পরিবারের লোকজন একপ্রকার ভয় পেয়ে অপারেশন করতে রাজি হয়।
পরে ১৮ আগস্ট বিকেলে ডাক্তার শাহীনের অদক্ষ সহকর্মীরা আলভিকে অজ্ঞান করার ইনজেকশন পুশ করে অস্ত্রপাচাড়ারের জন্য প্রস্তুত করে। তবে অস্ত্রপাড়ার কক্ষে নেয়ার পর সকলেই বুঝতে পারে অজ্ঞান করার ইনজেকশন তারা ভুল জায়গায় পুশ করেছেন। আর তাই অজ্ঞান করার জন্য সাথে সাথে আরও একটি ইনজেকশন পুশ করে। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দুটি অজ্ঞান করার ওভার ডোজের কারনে মূহুর্তের মধ্যেই নিস্তেজ হয়ে যায় আলভীর পুরো শরীর। পরে অপারেশন সম্পূন্ন করলেও জ্ঞান ফিরেনি তার। একপর্যায়ে কোমায় চলে যেতে হয় আলভীকে।
তার শরীরের এমন অবস্থা দেখে ডাক্তার ও গ্রীন ডেলটা কর্তৃপক্ষ জানায় আলভির আইসিইউ সাপোর্ট লাগবে। পরে রাতেই তড়িঘড়ি করে যাত্রাবারিতে অবস্থীত তাদের আন্য শাখার আই সি ইউ সাপোর্টে রাখে। টানা ৩ দিন সেখানে চিকিৎসা অবস্থায় থাকলেও পরিবারের কারও সাথে আলভিকে দেখা করতে দেয়নি। পরে গত ২৩ আগস্ট সকালে বড় ভাই তার বোনকে দেখতে জায়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ভাবে বাধা দেয়। এক প্রকার জোর করে আই সি ইউর ভিররে প্রবেশ করে আলভির বড় ভাই। তবে ভিতরে গিয়ে বোনের চেহারা দেখেই কান্নায় ভেঙে পরে। পরে ডাক্তার জানায় অতিরিক্ত ব্যথার কারনে তার বোনের মৃত্যু হয়েছে।
আলভির বড় ভাই হাসিবুল হাসান শান্ত জানান, সকাল ৭ টার দিকে তিনি আইসিইউ রুমে প্রবেশ করে দেখতে পায় যে আলফির সমস্ত শরীর ঠান্ডা এবং পালস বন্ধ। তখন আর বুঝতে বাকি নেই আমার বোন আর বেচে নেই। পরবর্তীতে ডাক্তারদের পক্ষ থেকেও মৃত্যুর বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের নিশ্চিত করা হয়। আলফির ভাই আরো জানান, অজ্ঞান করার ইনজেকশন দেয়ার পূর্বেও আমার বোন স্বাভাবিক ছিলো, কথা বলছিলো। চোখের সামনে এভাবে হারিয়ে ফেললাম আমার বোনকে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
উল্লেখ্য, ফতুল্লার পাগলা নয়ামাটি এলাকায় মিজান মিয়র মেয়ে আয়েশা আক্তার আলফি (১৪)। পাগলা উচ্চ বিদালয়ের ৮ম শ্রেনীর একজন মেধাবী ছাত্রী তিনি। ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে আলভির এমন খবর নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই পরিবারে কান্না যেনো কোনো ভাবেই থামছে না। পরিবার ও এলাকাবাসির দাবি জরিত সকলকেই আইনের আওতায় আনা হোক।




