নিজস্ব প্রতিবেদক:
জরায়ু অপারেশন করতে গিয়ে মলদ্বারের অংশ কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে গাইনী ডাক্তার কামরুন নাহার ও তার ছেলে আব্দুল্লাহ বিন আসরাফের বিরুদ্ধে। শনিবার বিকেলে শহরের কালির বাজারের চারারগোপ এলাকার মেডিপ্লাস মেডিকেল সার্ভিসেস এন্ড জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ওই অপারেশনের জন্য ৩০ হাজার টাকা চুক্তি করেছিলো চিকিৎসক। চুক্তির বাইরে নিজের ব্যয়ে ওষুধ কিনতে হয় রোগীর স্বজনদের। এদিকে ঘটনার পর পুলিশ ও রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল ঘেরাও করে রাখে। অবস্থা বেগতিক দেখে আত্মগোপনে চলে যায় ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিক। ফলে তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, শুক্রবার রাতে বেসরকারি এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ডালিয়া বেগম (্৫০)। শনিবার দুপুর থেকে তার জরায়ু অপারেশন শুরু করে ডা.কামরুন নাহার। তার সাথে অপারেশন রুমে ছিলেন তার ছেলে ডা. আব্দুল্লা বিন আসরাফ। এছাড়া আরও ২ জন ছিল হাসিম আহম্মেদ ও জি এম ফরিদ নামে। জানা গেছে, প্রায় ৫ ঘন্টা ধরে এই অপারেশন করে মা ছেলেসহ ওই দুইজন। তারা জরায়ু কাটার সময় মলদ্বারের অংশ কেটে ফেলেছে বলে রোগীর স্বজনরা জানায়। এছাড়া ডাক্তার কামরুন নাহার নানা অজুহাতে স্বজনদের দিয়ে মেডিসিন কিনিয়ে আপারেশন রুমে নেন। আরও জানা গেছে, প্রায় ২ ঘন্টা পর সাগর নামে একজন সার্জন ডাক্তার এসে সেই কাটা অংশের অপারেশন করে। তবে রোগী ডালিয়া বেগমের কোমরের অংশ কেটে সেখানে পাইপের মাধ্যমে মলদ্বারের অংশ করার একটি লাইন করে দেয় ডাক্তার।
রোগীর মেয়ে জানান, ৩০ হাজার টাকায় জরায়ু অপারেশনের চুক্তি হয়েছে ডাক্তার কামরুন নাহারের সাথে। সে তার অজ্ঞ ছেলে নিয়ে অপারেশন করে আমার মাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। ডালিয়া বেগমের মা বলেন, সকাল ৯ টা ভর্তি হয়েছি দুপুরে অপারেশন করতে নিয়ে যায়। ৪০ মিনিটে অপারেশন হওয়ার কথা ৩ ঘন্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর আমরা ক্লিনিকের ম্যানেজারের কাছে যাই। কিন্তু তারা কিছুই বলে না। কিছুক্ষণ পর পর কয়েকটি মেডিসিন কিনতে পাঠায় আমাদের। ৫ ঘন্টা পর ডাক্তার কামরুন নাহার অপারেশন রুম থেকে বেরিয়ে জানান, জরায়রু সাথে পায়খানার নাড় ছিল তা ৪ ইঞ্চি কেটে গেছে। তাই দেরি হয়েছে। তবে রোগী ঠিক আছে বলে সে চলে যায়।
ক্লিনিকে ডিউটিরত ডাক্তার পরিচয়দানধারী ডাক্তার কামরুন নাহারের ছেলে আব্দুল্লাহ বিন আসরাফ প্রথমে জানান তিনি অপারেশন রুমে ছিলেন না। পরে আবার জানান অপারেশন রুমে ছিলেন। তিনি ভুল হয়েছে স্বীকার করে বলেন, রোগীর আগে পেটে একটি অপারেশন হয়ে ছিলো। পূর্বের অপারেশনের কারনে এই জরায়ুর পিছনে মলদ্বারের অংশ রাস্তার সাথে একটু বেশি আঠালো ভাবে লেগেছিল। যেটা আগে বুঝতে পারেননি ডাক্তারা।
তিনি আরও বলেন, মলদ্বার জরায়ুর অংশের সাথে লেগে থাকায় সেই অংশ আলাদা করতে গিয়ে একটা মলদ্বারে ইঞ্জুরি হয়েছে। এই ইঞ্জুরি হওয়ার অংশকে রিপ্রেয়ার করে অন্য একটি পথ ব্যবহারের জন্য ব্যবস্থা করে দিয়েছে আরেকজন ডাক্তার। পরে জরায়ু কেটে ফেলা হয়। পাইপের মাধ্যমে করা সেই মলদ্বার দুই মাস ব্যবহার করতে হবে। যদি এটা করা না হতো তাহলে রোগীর মারা যাওয়ার সম্ভনা দেখা দিত। ২ মাস পর আরেকটি অপারেশন করে তা এই সমস্যা সমাধান করা হবে।