আজ বুধবার, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিজয়ের উল্লাসের আড়ালে-“বেদনারসুর” ইন্সপেক্টর সেলিম মিয়া

মোঃ  সেলিম মিয়া: জাতী-ধর্ম-বর্ন-নির্বিশেষে দেশ ও দেশের বাইরে যারা আমার বন্ধু মহল জীবিত আছেন তাদের সকলকে-মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ও মুজিবীয় ছালাম। যারা জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ করেছেন এবং যুদ্ধের সময় কালে শহীদ হয়েছেন অথবা স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে না-ফেরার দেশে চলে গেছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত শান্তি কামনা সহ তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে শোকের সমবেদনা প্রকাশ করে 16 ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস 2017 উদযাপন উপলক্ষ্যে কিছু অপ্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের মনের কথা আমার লিখনীর মাধ্যমে প্রকাশ করছি। গত ছিচল্লিশ বছর যাবৎ বিজয় দিবস উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি ভাবে কুচকাওয়াজ-শরীর প্রদর্শনী,খেলা-ধুলা, আলোচনা সভা,নাচ-গান, ভূড়ি-ভোজ সহ আরো কত কী ই পালন করছি আমরা।

এগুলো সবই ঠিক আছে।  জাতীয় চেতনায় বাংলাদেশ সহ সারা দুনিয়া জুড়ে বাংলাদেশীদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে এবং শিশু-কিশোরদের বিজয় দিবসের সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া সহ আনন্দ-উল্লাস করার সুযোগ সুবিধা প্রদান  উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করে জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ বাসির পক্ষ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিশ্ব সভায় স্বীকৃতি প্রাপ্ত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান 1971 সালের সাত ই মার্চের 18 মিনিটের 1108 টি শব্দের ঐতিহাসিক ভাষনের মূল স্তম্ভ রাজনৈতিক, সামাজিক,অর্থনৈতিক,সাংস্কৃতিক মুক্তির নিমিত্তে সমাজের শোষিত-নিপীড়িত,লাঞ্ছিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে স্বাধীনতা সংগ্রামের আহ্বানে জীবন বাজি রেখে যারা যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলেন তাদের মধ্যে থেকে যারা সুস্থ শরীর নিয়ে 16 ই ডিসেম্বর ফিরে এসে মুক্তিযোদ্ধা সনদ গ্রহণের মাধ্যমে বিজয়ের স্বাদ পেয়েছেন। তাদের কে শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু সরকারি চাকরিতে অধিষ্ঠিত করেছেন। চাকূরিরত অবস্থায় যারা যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে জীবিত ফেরত এসেছেন তাদেরকে স্ব-স্ব পদে যোগদান করার সুযোগ দিয়েছেন। সার্ভিসবুকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ পত্র সংযুক্ত করেছেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের পৃথক কোনো বেতন ভাতা না থাকায় অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র নিরাপদ হেফাজতে রাখেনি। সত্তর/আশি/নব্বই দশকের সময় কালে যে সকল মুক্তিযোদ্ধা সরকারি চাকরিতে কর্মরত অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে যান তাদের পরিবার পেনশন পেয়েছেন ঠিকই কিন্তু কর্তৃপক্ষ সার্ভিসবুক থেকে মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেননি। পরিবারের সদস্যরা ও সচেতন না থাকায় নিজ হেফাজতে নিতে পারেন নি। সরকারি ভাবে যখন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা শুরু হলো তখন থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গন সরকারি চাকূরিজীবিদের সার্ভিসবুকের ফটোকপি চাইলেন। সরকারি এ জি অফিসে যাওয়ার পর সার্ভিস বুক খুঁজতে গিয়ে অনেকে সার্ভিস বুক পেলেও কেউ-কেউ অদ্যাবধি  পাননি।

অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে আছে এমন অনেক মৃত/শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সত্য সনদপত্র উম্মোচন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক ভালো মনের মানুষ কিন্তু তার কাছে গিয়ে এসব কথা বলার সুযোগ পাওয়া খুবই কঠিন। যারা তার কাছে কিছু বলার সুযোগ পায় তারা হয়তো সমসাময়িক অনেক দামিদামি কাজের ভীড়ে এই ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষে কথা বলে বিকল্প পদ্ধতিতে সরকারি সুযোগ সুবিধা প্রদান করার সময় পাননি। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে আমার নিবেদন মনুষ্য তৈরী বিধান”সার্ভিস বুকের ফটোকপি” না পাইলে তার পরিবর্তে বিকল্প পেনশন বহিঃ সহ গ্রামবাসীর স্বাক্ষপ্রমান সংগ্রহ করে অথবা যেকোনো বিকল্প ব্যবস্থা পুনরায় আপনার সুঅভিজ্ঞতার আলোকে নতুন বিধান চালু করে বঞ্চিত মৃত্যু মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সুযোগ সুবিধা প্রদান করে তাদের বেদনার সুরের মূর্ছনা থেকে বিজয়ের উল্লাসে উল্লাসিত করার সুযোগ দিয়ে মৃত্যু মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার শান্তি দিতে আপনাকে জোর অনুরোধ করছি।

এখনো আমাদের দেশে অনেকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্র নিয়ে সরকারের বড় বড় কর্মকর্তা সহ নানা পেশায় নিয়োজিত থেকে অধিক সুযোগ সুবিধা পাইতেছেন। এদের মুখোশ উন্মেচন করে সনদপত্র বাতিল করা সহ কঠিন শাস্তি দেওয়া উচিৎ।যার জন্য আমরা স্বাধীনতার বিজয় দিবসের জয়গান গাই,যার পরিচয়ে আমরা বিশ্ব সভায় সমাদর পাই তার আত্মার মাগফেরাত কামনা সহ তার আদর্শকে ধারণ করিয়া লালন করিয়া,বহন করিয়া বিজয়ের উল্লাসে উল্লাসিত হয়ে আনন্দ উপভোগ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ