আজ শনিবার, ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস

স্টাফ রিপোর্টার :

আসন্ন বন্দর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মূল লড়াইটা হচ্ছে তিন প্রার্থী মধ্যে। তারা হলেন উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান এম.এ রশিদ যিনি কিনা ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির সভাপতি এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের সমর্থন প্রাপ্ত। অন্য প্রাথীরা হলেন উপজেলা পরিষদের দুই বারের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বিএনপি থেকে বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল ও মুছাপুর ইউনিয়ন থেকে তিনবারের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন।
নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা তিন প্রার্থীকে নিয়ে সাধারণ মানুষের মতামত পর্যালোচনা করলে দেখা যায় লড়াইয়ের মাঠে অনেকটাই এগিয়ে আছেন আতাউর রহমান মুকুল ও মাকসুদ হোসেন। সাধারণ মানুষের ধারণা যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট অনুষ্ঠিত হয় তবে মুকুল ও মাকসুদের মাঝেই মূল লড়াইটা দেখা যাবে।
তবে সাধারণ মানুষের মাঝে পিছিয়ে থেকেও নিজের জয়ের ব্যাপারে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান এম.এ রশিদ। একদিকে তার দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে অপরদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান প্রকাশ্যে তার জন্য ঘোষণা দিয়েছেন। সেই সাথে মাকসুদ হোসেন ও আতাউর রহমান মুকুলকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় এমপি সেলিম ওসমানের মধ্যস্থতা করে আগেই সম্ভাব্য তিন প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। পরবর্তীতে আরো একজন প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ানকে সমঝোতার মাধ্যমে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় এম.এ রশিদকে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে।
যা কিনা এম.এ রশিদের নির্বাচনী মত বিনিময় সভাগুলোতে তার বক্তব্যের মধ্য দিয়েই ফুটে উঠতে শুরু করেছে। কলাগাছিয়া ইউনিয়নের আদমপুর এলাকায় একটি উঠান বৈঠকে এম.এ রশিদ মাকসুদ হোসেনকে ইঙ্গিত করে বলে ছিলেন আজকে যারা আমাকে নিয়ে সমালোচনা করছেন তারা এখন পর্যন্ত আমাকে নিয়ে সমালোচনা করা যোগ্য হয়ে উঠেন নাই।
অপরদিকে ২১ এপ্রিল ফরাজিকান্দায় থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে একটি সভায় মুকুলকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন আপনি অনেক বলে ফেলেছেন। আপনি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কথা বলেছেন। আপনার বক্তব্য থেকে আপনি সরে আসুন নয়তো আমরা তার জবাব দিবো। সেই সাথে তিনি মুকুলকে রাজাকার পরিবারের সন্তানের তকমা দিয়েছেন।
সেই সাথে তিনি এবারের নির্বাচনকে মুক্তিযোদ্ধা বিপরীতে রাজাকারের নির্বাচন বলে আখ্যায়িত করে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার ওভার কনফিডেন্স নিয়ে এগিয়ে চলেছেন।
অপরদিকে অন্য দুই প্রার্থী আতাউর রহমান মুকুল এবং মাকসুদ হোসেনকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য অব্যাহত চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে খরব প্রকাশিত হয়েছে।
তবে এসব বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমের সাথে কোনো প্রকার কথা বলতেই রাজি নন বিএনপি থেকে বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল। তিনি নিজের মত করে নির্বাচনী গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। গণসংযোগের পাশাপাশি নিজস্ব কর্মী-সমর্থকদের সাথে নিয়মিত নির্বাচনী রণকৌশল পরিচালনা করে যাচ্ছেন। তবে তিনি নির্বাচন নিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে কোনো প্রকার মন্তব্য করতেই নারাজ। তার এমন নীরবতাই তার উপরে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ চাপের বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠে।
অন্যদিকে এসব বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই অপর প্রার্থী মাকসুদ হোসেনের। তিনি এসব বিষয়কে কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার চাপ হিসেবে দেখছেন না। বরং তার মতমত তিনি নির্বাচন করছেন বলেই এবার উপজেলা নির্বাচনে সাধারণ ভোটাররা উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট দিতে পারবেন। নয়তোবা গত বারের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতো। এতে করে জনগনের আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটতো না বলেই মনে করে তিনি।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ