আজ শুক্রবার, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সেলিম প্রধানের প্রতীক বরাদ্দের সুযোগ থাকছে না

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত এবং অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি সেলিম প্রধানের প্রার্থীতা ও প্রতীক বরাদ্দের জন্য দেয়া উচ্চ আদালতের রায়ের উপর স্থিতি অবস্থা জারি হয়েছে। ফলে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীতার বৈধতা হারিয়েছেন সেলিম প্রধান। প্রতীক বরাদ্দের সুযোগ থাকছে না আলোচিত অনলাইন ক্যাসিনো সম্রাট ডন সেলিম প্রধানের।

বৃহস্পতিবার ২ মে সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত উচ্চ আদালতের রায়ের উপর এই স্থিতি অবস্থা জারি করে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহিন এম রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং আপিল বিভাগ (জেলা প্রশাসক) সেলিম প্রধানের মনোনয়ন বাতিল করেন। বাতিলের আদেশের বিরুদ্ধে ৩০/০৪/২৪ ইং তারিখে রিট পিটিশন দায়ের করে মনোনয়ন বৈধ ও প্রতীক বরাদ্দের আদেশ নেন তিনি। সেলিম প্রধানের আদেশের বিরুদ্ধে মোঃ হাবিবুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে আপিলেট ডিভিশন বিজ্ঞ চেম্বার জজ আদালতে আপিল দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার ২ মে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিজ্ঞ চেম্বার জজ আদালত রিট পিটিশন বিষয়বস্তুর উপর স্থিতি অবস্থা জারি করেন। যার ফলে সেলিম প্রধানের প্রতীক বরাদ্দের সুযোগ থাকছে না। মোঃ হাবিবুর রহমানের পক্ষে সিনিয়র এডভোকেট খুরশীদ আলম খান এবং ব্যারিষ্টার মাহিন এম রহমান শুনানি করেন।

মাহিন এম রহমান জানান, রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি সেলিম প্রধান। গত ২৩ এপ্রিল যাচাই বাছাই শেষে মানি লন্ডারিং ও দুদকের মামলায় সাজার কারণে রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়ন বাতিল করে। পরে মনোনয়নের বৈধতা চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর সেলিম প্রধান আপিল করলে গত ২৮ এপ্রিল জেলা প্রশাসক আপিল খারিজ করে মনোনয়ন বাতিল বহাল রাখেন। ৩০ এপ্রিল উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চে নিজের প্রার্থীতার বৈধতা ও প্রতীক বরদ্দ চেয়ে রীট করেন সেলিম প্রধান। রীটের প্রেক্ষিতে সেলিম প্রধানের প্রার্থীতার বৈধতা ও প্রতীক বরাদ্দের আদেশ দেয় উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার সেই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালতে আপিল করেন রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান।  আগামী ৫ মে এবিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে।

জানা গেছে, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাইল্যান্ডগামী বিমান থেকে নামিয়ে এনে সেলিম প্রধানকে আটক করেছিলো র‌্যাব। এরপর তার বাসা ও অফিসে অভিযান চালিয়ে দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। তখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বলেছিল, সেলিম প্রধান বাংলাদেশে অনলাইন ক্যাসিনো বা অনলাইন জুয়ার মূল হোতা। তিনি প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। সেই সঙ্গে সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে ঢাকার গুলশান থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি মামলা হয়। এসব মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তবে সেলিম প্রধান এখন জামিনে রয়েছেন।

একই সঙ্গে দুদকের এক মামলায় ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল রায় দিয়েছেন আদালত। তাতে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের দুই ধারায় সেলিম প্রধানকে চার বছর করে কারাদন্ড দেন আদালত। একই সঙ্গে এ সাজার বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেছেন, যা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী ২ মে প্রতীক বরাদ্দ ও ২১ মে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ