আজ শুক্রবার, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সোনারগাঁয়েই দুর্বল হচ্ছে জেলা আ.লীগ

সংবাদচর্চা রিপোর্ট

টানা তৃতীয় মেয়াদে দল ক্ষমতায় থাকার পরেও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা এখনও এক হতে পারেনি। কোন্দলের কারণে কমছে দলটির সাংগঠনিক শক্তি। সম্প্রতি সোনারগাঁ আহবায়ক কমিটি নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দদের মধ্যে বিভাজনের সৃষ্টি হয়েছিলো যা এখনও দৃশ্যমান। এরই মধ্যে নতুন করে ওই উপজেলাতেই আবার ক্ষমতাসীন দলের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এছাড়া এ কমিটির পর নতুন করে আর কোন কমিটি গঠন কিংবা সম্মেলন হয়নি। রাজনীতি বোদ্ধারা মনে করেন, সোনারগাঁ নিয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তাদের ভুলে এক উপজেলার ঘা ক্রমস গোটা জেলায় ছড়াচ্ছে।
তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে, শীর্ষ নেতারা নিজ বলয়কে শক্তিশালী করতে বিতর্কিতদের দলে সম্পৃক্ত করছেন। ব্যাপক উন্নয়ণে সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বহুগুন বেড়ে গেলেও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উল্টো দলের ইমেজ ক্ষুন্ন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ফলে চাঙ্গা হয়ে উঠা নেতাদের মধ্যে আবারও চরম হতাশা বিরাজ করছে। নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। এই দ্বন্দ্ব নিরসনে খোদ কেন্দ্রীয় নেতারাও ব্যর্থ হয়েছে। বলা চলে, স্থানীয় কোন্দল নিরসনে কেন্দ্র থেকে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিলেও তেমন কোন ফল আসেনি।
গত ১৫ জুলাই সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটির অনুমোদন দেয় আবদুল হাই ও আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল। সূত্র মতে, কাউকে না জানিয়ে বিতর্কিত আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে তোপের মুখে পড়েন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, আর্থিক লেনদেন ও ব্যবসায়িক সুবিধা পাইয়ে দেয়ার মাধ্যমে ওই কমিটি দেয়া হয়েছে। একের পর এক বিতর্কে জর্জরিত হয়েছেন তারা। সবকিছু ছাপিয়ে সম্প্রতি তাদের বিতর্কিত কর্মকান্ডে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ অনেক সিনিয়র নেতারাও তাদের এড়িয়ে চলছেন।

জানা যায়, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে দীর্ঘদিন কর্মসূচী পালন করে আসছে। সম্প্রতি করা আহবায়ক কমিটি নিয়ে ওই উপজেলাতে বিভক্তির মাত্রা আরও বহু গুনে বেড়ে গেছে। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই জেলা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ এর তীব্র প্রতিবাদ করে। এমনকি আবদুল হাই ও ভিপি বাদলের নামে ৩৮ সদস্যের স্বাক্ষরিত অভিযোগ কেন্দ্রে জমা দেয়া হয়। তাদের দেয়া বিতর্কিত কমিটিকে কেন্দ্র করেই সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জন আহত হয়। ওই সময় একটি পূজা মন্ডপ ভাংচুর করা হয়। বুধবার উপজেলা জামপুর ইউনিয়নের পাকুন্দা গাবতলি গ্রামে আয়োজিত লক্ষ্মী পূজায় সাবেক উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম সমর্থক জামপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার হুমায়ন কবির ভূইয়া ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ডা. বিরু সমর্থকদের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নিলে পূজা মন্ডপ ভাংচুর ও ১০ জন আহত হয়।

ক্ষমতাসীন দলটির সিনিয়র পর্যায়ের নেতারা ব্যক্তিগত বলয় শক্তিশালী করতেই ব্যস্ত। তাই নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে একের পর এক বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দিচ্ছে তারা। এভাবে চলতে থাকলে ক্ষমতাসীন দলটির স্থানীয় কমিটিগুলো আরও দুর্বল হয়ে যাবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ