আজ শনিবার, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সরকারের বাড়া ভাতে খালেদা জিয়ার ছাই

সরকারের বাড়া ভাতে খালেদা জিয়ার ছাই

সরকারের বাড়া ভাতে খালেদা জিয়ার ছাইসরকারের বাড়া ভাতে খালেদা জিয়ার ছাই

মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ:

বাংলাদেশে একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদ হচ্ছে ”কারো জন্য গর্ত খুড়লে সেই গর্তে নিজেকেই পরতে হয়”।প্রবাদটি পুরোপুরি ফলেছে সরকারের প্রতি।সরকার মনে করেছিল ০৮ই ফ্রেরুয়ারীর রায়ের মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপার্শন ও ৩ বারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে ৫ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির বিএনপির চরিত্র হরণ করে এবং প্রধান প্রতিপক্ষ বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে ২০১৪ সালের মত আগামী নির্বাচনী বৈতরনী পার হওয়ার একটা মোক্ষম সুযোগ তৈরী হবে।বিধি বাম,সরকারের ভাবনার সাথে বাস্তব পরিস্থিরি মিল নেই।খালেদা জিয়া তহবিল তছরুপ করেছেন এমন কথা সরকার শত ঢাক ডোল পিটিয়েও এদেশের মানুষকে ্িবস্বাস করাতে পারে নাই।আওয়ামী লীগ ও বিশ্ব বেহায়া ছাড়া ডান বাম কোন রাজনৈতিক দলই সাজানো রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারে নাই।রিক্সা চালক থেকে চাকুরী জীবি,গৃহিনী,শিক্ষক,সুশীল সমাজ এবং বর্হিবিশ্বের কেউ মনে করে না খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান তহবিল তছরুপ করেছেন বা ন্যায় বিচার পেয়েছেন।কারণ দুদকের আইনজীবি এড.মোশারফ হোসেন কাজল নিজেই রায়ের দিন সাংবাদিকদের বলেছেন,টাকা একাউন্টেই আছে।এবং মিডিয়া ও আদালত সূত্রে জানা যায় অর্থ তছরুপ তো দূরের কথা,তহবিলের ২ কোটি টাকা এফডিয়ার করে রাখায় উক্ত টাকা লাভে আসলে এখন ৬ কোটিতে পরিনত হয়েছে।ইতিমধ্যে দেশবাসী খালেদা জিয়ার ২ কোটি টাকার মামলার পাশাপশি ১৪ হাজার কোটি টাকা লোপাট,ব্যাংক ও শেয়ার বাজারের হাজার হাজার কোটি টাকার মামলার ফলাফল দেখার জন্য উদগ্রিব হয়ে আছে।

বেগম খালেদা জিয়া ভূয়া মামলায় জেলে যাওয়ায় বেগম জিয়া ও বিএনপির বদনাম হওয়ার চেয়ে জনমত বহু গুণ বেড়ে যাওয়ায় এবং খালেদা জিয়ার কঠিন নির্দ্দেশের কারনে রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি হরতাল অবরোধের মত কর্মসূচী না করে অহিংস আন্দোলন করায় সরকারের ভারা ভাতে ছাই পরেছে। সরকার ও আওয়ামী লীগ ভেবেছিল বিএনপির সকলের মা’য়ের মত নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠালে স্বভাবতই বিএনপি নেতাকর্মীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে জ্বালাও পোড়াওয়ের মত কর্মসূচী দিয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করবে।ফলে জনমত বিএনপির বিপক্ষে চলে যাবে। আর এই সুযোগে হামলা,মামলা,খুন,গুমের মাধ্যমে বিএনপিকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে আসবে যাতে ফেয়ার নির্বাচন হলেও বিএনপি নেতাকর্মী সংকটে পরে।
তিন বারের প্রধানমন্ত্রী ও আপোষহীন নেত্রী খালেদা জিয়া ঠিকই সরকারের ষড়যস্ত্র আচ করতে পেরে স্থায়ী কমিটি থেকে শুরু করে নির্বাহী কমিটি ও জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের পর্যন্ত সবাইকে জানিয়ে দিয়েছেন,”আমি যেখানেই থাকি না কেন আমি আপনাদের ও দেশবাসীর সাথে আছি।আমার জন্য জনগনের কোন কষ্ট হয় এমন কোন কর্মসূচী নেয়া যাবে না।গণতন্ত্র পুনুরুদ্ধার ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অহিংস ও জন সম্পৃক্ত আন্দোল গড়ে তুলতে হবে”। রায়ের পরে বিএনপি মহাসচিব থেকে শুরু করে তৃণমুলের নেতাকর্মীরা কেদে বুক ভাসালেও একটি ঢিলও ছুড়েনি কোথাও।ফলে খালেদা জিয়া-তারেক রহমান তথা বিএনপির চরিত্র হরণ ও বিএনপিকে সহিংসতার পথে ঠেলে দেয়ার আওয়ামী সরকারের পরিকল্পনা বা নীল নক্সা ব্যার্থ হওয়ায় তারা প্রচন্ড রকমের হতাস হয়েছেন।

কিছু না হওয়ার পরেও জালিম সরকার সাড়া দেশে রায় ঘোষনার আগে ও পরে প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার ও ৩ লক্ষ নেতাকর্মীর নামে নাশকতার মামলা দায়ের করেছে।আগে কোন একজন একটা গাড়ীতে ঢিল দিলে আরো ১০ জনের নাম জড়িয়ে মামলা হতো।এবার কোন ঘটনা ছাড়াই ভৌতিক বিবরণ দিয়ে ৪ঠা ফ্রেরুয়ারী থেকে শুরু করে ৮ ই ফ্রেরুয়ারী পর্যন্ত বাংলাদেশের সকল থানায় একই বিবরণে,একই কায়দায় ভৌতিক মামলা দায়ের ও গণ গ্রেফতার করা হয়েছে। এখনো যা চলমান আছে। ১লা ফ্রেরুয়ারী দায়িত্ব গ্রহন কালে নতুন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী তার বক্তব্যে বলেছিলেন পুলিশ কোন দলের নয়।আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী।বিধি মোতাবে আমি কাজ করবো।কিন্তু দায়িত্ব গ্রহনের এক সপ্তাহের মধ্যে সাড়া দেশে প্রায় কয়েক শত মিথ্যা ও ভৌতিক মামলা দায়ের হয়েছে স্বয়ং তার পুলিশ বাদী হয়ে।

বিএনপিকে যেন উত্তেজিত করে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেয়া যায় তার জন্য অনির্বাচিত এমপি-মন্ত্রী,চ্যালা চামুন্ডা থেকে শুরু করে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বিএনপির নেতাকর্মীদের সুরসুড়ি দিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (২২ ফ্রেরু) বিকালে সরকারী খরচে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেছেন, ‘বিএনপি নেতারা কিসের আন্দোলন করে? টাকা চুরি করে নেত্রী জেলে গেছে।ওবায়েদুল কাদের প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও বলছেন,বিএনপির আন্দোলন করার মুরোদ নাই।সিনিয়র নেতা তোফায়েল আহম্মেদ,আমির হোসেন আমু,মোহাম্মদ নাসিম থেকে শুরু কওে হাই ব্রিড হাসান মাহমুদ,কামরুল,হানিফদের মুখে নিয়মিত অশ্লীলতার বান ছুটছে বিএনপিকে সুরসুড়ি দেয়ার জন্য। সাবেক ৩ বারের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যে ধরনের অশ্লীল কথা ও মিথ্যাচার করেন আওয়ামী এমপি মন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী,তা কোন বিবেকবান মানুষের শ্রবন যোগ্য নয়।

আওয়ামী লীগের গালি, অশ্লীল কথা ও মিথ্যাচার বিএনপির জন্য শাপেবর হয়ে দাড়িয়েছে।খালেদা জিয়াকে বলা চলে ইচ্ছা করেই ৩ দিন সাধারন কয়েদীর মত রাখা,ডিভিশন দেয়া নিয়ে টালবাহানা,নকল প্রদানে বিলম্ব,অহিংস শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে বাধা,একুশের প্রভাত ফেরীতে বিএনপির শ্রদ্ধান্জ্ঞলী দিতে অহেতুক হয়রানি এখন এদেশের মানুষের কাছে পানির মত পরিস্কার।তাই সরকা যে ইচ্ছায় বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন সেই একদলীয় নির্বাচনের ভারা ভাতে ছাই পরেছে।

বেগম খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ায় তার জনপ্রিয়তা কতটুকু বেড়েছে আর সরকারের কতটুকু পতন হয়েছে তা খালেদা জিয়ার ১৫ দিনের কারাবাসেই সরকার হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।সরকারের মধ্যে ভয়ের উদ্রেক হয়েছে খালেদা জিয়া কারাবাস যত দীর্ঘায়িত হবে হাসিনা সরকারের পতন তত নিশ্চিত হবে।সরকারের মধ্যে যে ভীতি বিরাজ করছে তার প্রমান পাওয়া যায় ২৩শে ফ্রেরুয়ারী জাতীয় প্রেস ক্লাবের হলরুমে বাংলাদেশ ডিএইচএমএস ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহবুবুর রহমানের এক স্মরণ সভায় খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের বক্তব্য শুনলে।তিনি বলেছেন, বিএনপির আইনজীবীদের অহেতুক গড়িমসির কারণেই খালেদা জিয়াকে বেশি দিন কারাগারে থাকতে হচ্ছে। যাতে করে বেশি দিন খালেদা জিয়া কারাগারে থাকে সেই ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছে বিএনপি।কামরুল ইসলামের কথা শুনলে মনে হচ্ছে তারা আর খালেদা জিয়াকে আটকে রাখতে চাচ্ছে না। কারণ তারা যে দুটি আশায় বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন তা বুমেরাং হয়ে তাদের দিকে এগিয়ে আসছে।খালেদা জিয়ার জন্য খোড়া কবরে এখন আওয়ামী লীগকে যেতে হচ্ছে।মনে রাখা দরকার অপকর্মের ফল কখনো ভাল হয় না।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ