আজ শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পুরুষের দরকার নেই সন্তান জন্মদানে

সন্তান জন্মদানে

পুরুষের দরকার নেই সন্তান জন্মদানে

সন্তান জন্মদানে

সংবাদচর্চা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্টেম সেল নামে প্রভাবশালী একটি মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে  সন্তান জন্মে আর পুরুষের প্রয়োজন হবে না।

জার্নালে নানজিং মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী ড. জিয়াহাও শা এক সাক্ষাৎকারে জানান, তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষকদল কৃত্রিম শুক্রাণু তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। আর এই শুক্রাণুর সাহায্যে এরই মধ্যেই জন্ম নিয়েছে ইঁদুর।

ড. জিয়াহাও শা বলেন, গবেষণা ঠিকপথে এগোলে সেদিন আর বেশি দূরে নেই, যখন সন্তান জন্মের জন্য আর পুরুষের শরীরে সৃষ্ট শুক্রাণুর প্রয়োজন হবে না। পরীক্ষাগারে উৎপন্ন শুক্রাণুর সঙ্গে নারীর ডিম্বাণুর মিলন ঘটিয়েই সৃষ্টি করা যাবে সন্তান।

এদিকে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানিয়েছে, যে পদ্ধতিতে ড. জিয়াহাও গবেষণাটি চালান, তাঁর নাম ‘স্টেম সেল টেকনিক’। যদিও পদ্ধতিটি অনেক পুরোনো। তবে এই পদ্ধতিতে কিছু নতুন সংযোজন বিজ্ঞানীদের এই গবেষণাকে সফল রূপ দিয়েছে।

ড. জিয়াহাও জানান, এই পদ্ধতিতে চিকিৎসকরা প্রথমে ইঁদুরের ভ্রুণ থেকে স্টেম সেল সংগ্রহ করেন। এরপর সেটিকে বিশেষ কিছু রাসায়নিক মিশ্রণে রাখা হয়। মিশ্রণে রাখার পর স্টেম সেলটি ভেঙে গিয়ে ‘জার্ম সেলে’ রূপান্তরিত হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, এটিই হলো শুক্রাণু তৈরির প্রথম ধাপ।

এরপর কৃত্রিমভাবে তৈরি ‘টেস্টিকিউলার সেলের’ মধ্যে রাখা হয় ওই জার্ম সেলটিকে। ল্যাবরেটরিতেই শুক্রথলির মতো পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য ওই টেস্টিকিউলার সেলের মধ্যে মেশানো হয় টেস্টোস্টেরন হরমোনও। এভাবেই তৈরি হয়েছে বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম শুক্রাণুটি।

তবে এই সাফল্যের পরও বিজ্ঞানীরা অবশ্য একে পুরোপুরি শুক্রাণু বলছেন না। পরিবর্তে এর নাম দিয়েছেন ‘স্পার্মাটিডস’। এর কারণ হলো, কৃত্রিমভাবে তৈরি শুক্রাণুতে মাথার অংশ ঠিক থাকলেও এতে লেজের অংশটি থাকে না। এই ‘স্পার্মাটিডস’ শুক্রাণুর মতো সাঁতার কেটে এগিয়ে যেতেও অক্ষম।

ড. জিয়াহাও জানিয়েছেন, এই স্পার্মাটিডসকেই পরীক্ষাগারে মানুষের কৃত্রিম গর্ভধারণের পদ্ধতি আইভিএফের (ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) মতো করে ইঁদুরের ডিম্বাণুর মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। কৃত্তিমভাবে ডিম্বাণু প্রবেশের এই পদ্ধতিটির বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন আইসিএসআই (ইনট্রাসাইটোপ্লাজমিক স্পার্ম ইনজেকশন)। পরে ল্যাবরেটরিতেই স্মার্টাটিডস ও ইঁদুরের ডিম্বাণুর মিলনে কৃত্রিমভাবে ইঁদুরের নতুন ভ্রুণ তৈরি হয়। পরে এটি স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে উঠতে থাকে।

গবেষকদলের আশা, পরীক্ষাটি সফল হলে পুরুষদের শুক্রাণুসংকট ও শুক্রাণুজনিত অক্ষমতার কারণে বন্ধ্যাত্ব সমস্যা দূর হবে। এতে নারীরা পুরুষের শরীরে সৃষ্ট শুক্রাণু ছাড়াই গর্ভধারণ ও সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম হবে।

 

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ