আজ বুধবার, ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চোখের জলে শ্রীদেবীর দাহ সম্পর্ণ

শ্রীদেবীর দাহ সম্পর্ণ

চোখের জলে শ্রীদেবীর দাহ সম্পর্ণশ্রীদেবীর দাহ সম্পর্ণ

সংবাদচর্চা ডেস্ক:

শেষ যাত্রায় সবাইকে কাঁদিয়ে বলিউডের প্রথম ‘ফিমেল সুপারস্টার’চলে গেলেন।চোখের জলে প্রিয় অভিনেত্রী শ্রীদেবীকে বিদায় জানালেন অগণিত ভক্ত।

দুবাই থেকে শ্রীদেবীর মরদেহ ভারতে নেওয়ার পর বুধবার সকাল থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মুম্বাইয়ের সেলিব্রেশন স্পোর্টস ক্লাবে তা রাখা হয় বলে আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়।

সেখান থেকে শ্রীদেবীর শববাহী গাড়ি দুপুর ২টা ২৬ মিনিটে তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রওনা হয় ভিলে পার্ল শ্মশানের দিকে। সেখানেই সন্ধ্যা সোয় ৫টার দিকে শ্রীদেবীর শেষকৃত্যের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, ‘লমহে’ ছবির শুটিং-এর সময়ই শ্রীদেবী ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তার মৃত্যুর পর যেন সব কিছুই যেন সাদা কাপড়ে মুড়ে ফেলা হয়। নায়িকার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাই সব কিছুই সাজানো হয়েছিল তার প্রিয় রং সাদায়।

সাদা ফুল দিয়ে সাজানোর পাশাপাশি শ্রীদেবী-র বাংলো ‘ভাগ্য’ও মুড়ে ফেলা হয়েছিল সাদা কাপড়ে। অন্ত্যেষ্টিয়াতেও সকলকে অনুরোধ করা হয়েছিল সাদা পোশাকে আসতে। সেই মতো প্রায় সব বলিউড তারকাকেই এ দিন দেখা গিয়েছে সাদা পোশাকে লোখণ্ডওয়ালার সেলিব্রেশন স্পোর্টস ক্লাবে।

মুম্বাইয়ের সেলিব্রেশন স্পোর্টস ক্লাবে মাকে শেষ দেখা দেখতে হাজির হন জাহ্নবী কাপুর এবং খুশি কাপুরও। বাবা বনি কাপুরের সঙ্গে জাহ্নবী এবং খুশি হাজির হলেও, মাকে হারিয়ে যেন বিহ্বল হয়ে পড়েন শ্রী কন্যারা।

স্পোর্টস ক্লাবে কেউ এসেছিলেন কলকাতা থেকে। কেউ বা আবার সুদূর মলদ্বীপ থেকে। সকলের একটাই ইচ্ছে, শ্রীদেবীকে শেষ বারের মতো দেখা। বুধবার সকাল ৬টা থেকেই মুম্বাইয়ের লোখণ্ডওয়ালার রাস্তায় ভিড় জমতে শুরু করে। বেলা যত গড়িয়েছে ভিড় চলতে শুরু করেছে লোখণ্ডওয়ালার সেলিব্রেশন স্পোর্টস ক্লাবের দিকে।

শ্রীদেবীর ফ্যানেদের জন্য সকাল সাড়ে ৯টায় খুলে দেওয়া হয় ক্লাবের দরজা। তবে তার আগে থেকেই ক্লাবের গেটের সামনেটা ভিড়ে ভিড়াক্কার। প্রয়াত নায়িকাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে একে একে এসেছেন অসংখ্য বলিউডি তারকা। আর তাদের ছাপিয়ে গিয়েছে শ্রী-র ফ্যানেরা। অনেকেই স্মৃতিচারণ করেছেন। অনেকে আবার শ্রী-র ফিল্মের গান গেয়ে শুনিয়েছেন।

 

এ দিন সকালে সবচেয়ে আগে স্পোর্টস ক্লাবে পৌঁছে যান প্রযোজক-পরিচালক কর্ণ জোহর। এসে পৌঁছান শ্রীদেবীর দেওর সঞ্জয় কপূরও। ক্রমশই ভিড় জমতে থাকে স্পোর্টস ক্লাবের বাইরে। স্বপ্নের নায়িকাকে বিদায় জানাতে আজ অফিস ছুটি নিয়ে চলে এসেছিলেন অগণিত ভক্ত। রাত ১২টা থেকেও অধীর অপেক্ষায় কেউ কেউ লাইন দিয়েছিলেন স্পোর্টস ক্লাবের সামনে।

শ্রীদেবীর মৃতদেহ দুবাই থেকে মুম্বাই ফেরে মঙ্গলবার। ভারতের দূতাবাস কর্তৃপক্ষ ও তার পরিবারের কাছে অনুমতিসংক্রান্ত কাগজ ও মরদেহ এরই হস্তান্তর করে এদিন।

ছোট মেয়ে খুশী কাপুর এবং স্বামী বনি কাপুরের সঙ্গে শ্রীদেবী দুবাই গিয়েছিলেন এক বিয়ের অনুষ্ঠানে। শনিবার রাতে সেখানকার একটি হোটেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি; তার বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর।

জনপ্রিয় অভিনেত্রীর মৃত্যুতে বলিউডে শোকের ছায়া নেমে আসে। ভক্তরা শোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন।

শ্রীদেবীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দুবাইয়ের জুমেইরাহ ইমিরেটস টাওয়ারস হোটেলের একটি কক্ষে ছিলেন শ্রীদেবী-বনি। বনি কাপুর আগেই দুবাই থেকে মুম্বাই চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু শ্রীদেবীকে চমকে দিতে তিনি আবার শনিবার দুবাই যান।রাতের খাবারের জন্য শ্রীদেবীকে প্রস্তুত হতে বলেন বনি কাপুর। এসময় শ্রীদেবী বাথরুমে যান।

দীর্ঘ সময় পরও শ্রীদেবী বের না হলে বনি তাকে ডাকেন। কোনো সাড়া না মিললে বনি দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। তিনি ভেতরে গিয়ে শ্রীদেবীকে পানিভর্তি বাথটবে নিথর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।

সঙ্গে সঙ্গে তিনি তার এক বন্ধুকে ডাকেন। শ্রীদেবীকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক জানান,হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।

তার এমন মৃত্যুতে গোটা পরিবার শোকে বিহ্বল হয়ে পড়ে। বনি কাপুরের ছোট ভাই সঞ্জয় কাপুর জানিয়েছেন, শ্রীদেবীর হৃদরোগের কোন লক্ষণ ছিল না।

পরে ময়নাতদন্তের বরাত দিয়ে দুবাই পুলিশ জাানায়, বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীদেবীর মৃত্যু হয়েছে বাথটাবের জলে দম আটকে।

শ্রীদেবীর রক্তের নমুনায় পাওয়া গেছে অ্যালকোহলও। তবে সব কিছু খতিয়ে দেখে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন- এটি দুর্ঘটনাই, এর পিছনে অন্য কিছু নেই।

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রীদেবীর শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

শ্রীদেবীকে ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র নারী সুপারষ্টার বলা হয়। ‘সাদমা’, ‘লামহে’, ‘মি. ইন্ডিয়া’, ‘চাঁদনি’, ‘হিম্মতওয়ালা’- ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য শ্রীদেবী এখনও স্মরনীয় হয়ে আছেন। শুধু হিন্দি নয়, গুণী এই অভিনেত্রী তামিল, তেলেগু এবং কন্নড় ছবিতেও সমান সাফল্য পেয়েছেন।

মেয়ে জান্ববী বলিউডে অভিষেকের মাত্র এক মাস আগে শ্রীদেবী চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ