আজ শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শেষ মুহুর্তের প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা

রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার নির্বাচন আর মাত্র এক দিন বাকী। শেষ মুহুর্তের প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন তারা। জোরেশোরে চালাচ্ছেন প্রচারণা। উৎসবে পরিণত হয়েছে নির্বাচন। নির্বাচান প্রক্রিয়া, গ্রহণ আর সরকার বিরোধী প্রচারণায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও এখন পর্যন্ত সংঘর্ষ, মারামারি, ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। তবে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম সহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছে তৎপর। তাতে ভোটারদের মধ্যে শান্তি ও স্বস্তি বিরাজমান আর ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে।

এবারের নির্বাচনে লড়াই হবে ত্রি মুখী। বিএনপিতে হবে পরিবারের ঐতিহ্য রক্ষার লড়াই। সেখানে বিএনপির দুটি পরিবার সক্রিয় রয়েছে । একটি দেওয়ান পরিবার অপরটি ভূইয়া পরিবার। এ দুই পরিবারের দুই জন সদস্যসহ বিএনপির ৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন। দেওয়ান পরিবারের পক্ষে লড়ছে বর্তমান মেয়র দেওয়ান আবুল বাশার বাদশা। আর ভূইয়া পরিবারের পক্ষে লড়াই করছেন সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান। এ দুই পরিবারের রাজনীতি টিকে রাখতে হলে ভোটের শেষ পর্যন্ত দুই লড়াই করতে হবে। আর যদি এ দুই পরিবারের কোন এক পরিবার নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ান তাহলে সে পরিবার কালে গর্ভে রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাবে। এখন দেখার বিষয় ভূইয়া এবং দেওয়ান পরিবারের মধ্যে কোন পরিবার মীর জাফরের পরিচয় দিয়ে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ান। আর যদি এ দুই পরিবারের সদস্য শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকে তবে জনগণ তাদের পল্টিবাজ বলবে না। তাদের কে সেলুট করবে।

এদিকে কাঞ্চন পৌরসভাকে বিএনপির হাত থেকে উদ্ধার করতে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ। তারা দিন রাত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

এবারের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ রফিকুল ইসলাম (নৌকা), কাঞ্চন পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র দেওয়ান আবুল বাশার বাদশা (নারিকেল গাছ), কাঞ্চন পৌর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র আলহাজ্ব মজিবুর রহমান ভুঁইয়া (জগ) ও নারায়ণগঞ্জ জেলা যুব দলের সহ-সভাপতি এডভোকেট মোঃ আমিরুল ইসলাম ইমন (মোবাইল ফোন) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

আজ ২৩ জুলাই কাঞ্চন পৌরসভা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পোষ্টারে পোষ্টারে ছেয়ে গেছে কাঞ্চন। দোকান-পাট, হাট-বাজার ও চায়ের দোকানে চলছে চুল-চেরা বিশ্লেষণ কে হবেন আগামী দিনের পৌর পিতা। এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত হলে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন হবে এমনই অনেকে মত প্রকাশ করছেন। এছাড়া গত ৫ বছরে আলহাজ্ব মোঃ রফিকুল ইসলাম তার ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে পৌরবাসীর জন্য বিশুদ্ধ পানির সরবরাহে ২৮৮ সাবমারসিবল স্থাপন করেছেন। এছাড়া ৮৮ টি মসজিদের উন্নয়ন, ২৫০ অস্বচ্ছল পরিবারকে ঘর নির্মাণ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানায় ৫০০ লোকের কর্মসংস্থান, এক হাজার গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীর শিক্ষার ব্যায় বহন, দরিদ্রের মাঝে রিক্সা ও শেলাই মেশিন প্রদান ও ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস দিয়ে আসছেন। সে কারনে পৌরবাসীর কাছে আলহাজ্ব মোঃ রফকুল ইসলামের গ্রহন যোগ্যতা আলোচনার শীর্ষে।

কাঞ্চন পৌরসভার চরপাড়া গ্রামের বৃদ্ধ সায়েদ আলী বলেন, গত ৬৫ বছর ধরে প্রথমে কাঞ্চন ইউনিয়ন পরিষদ ও পরে কাঞ্চন পৌরসভার নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন ভুঁইয়া ও দেওয়ান পরিবারের লোকজন। তারই ধারাবাহিকতায় আলহাজ্ব মজিবুর রহমান ভুঁইয়া ও দেওয়ান আবুল বাশার বাদশা এবারের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচিত হলে কাঞ্চন পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করবো। মাদক, সন্ত্রাস র্নিমূল, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, চিকিৎসা প্রদান ও পানি সরবরাহ সহ সার্বিক উন্নয়নে সচেষ্ট হবো।

স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান আবুল বাশার বাদশা বলেন, পুনরায় নির্বাচিত হলে কাঞ্চনকে অত্যাধুনিক পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলবো। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব মজিবুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, জলাবদ্ধতা নিষ্কাশনের জন্য কাজ করবো। স্বতন্ত্র প্রার্থী এডভোকেট মোঃ আমিরুল ইসলাম ইমন বলেন, মাদক র্নিমূলে সচেষ্ট হবো ও যুব সমাজের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রির্টানিং অফিসার বলেন, কাঞ্চন পৌরসভার মোট ভোটার রয়েছে ৩৫ হাজার ৬৭৫ জন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম বলেন, কাঞ্চন পৌরসভা নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, নির্বাচনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রত্যেকটি কেন্দ্রেই আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের নজরে থাকবে। নির্বাচনে কেউ কোন অস্থীতিশীল করার চেষ্টা করলে কঠোরভাবে তা দমন করা হবে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ