আজ শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শর্তাবলী দিয়ে চলছে মোবাইল অপারেটরগুলোর কো-ব্র্যান্ডিং

শর্তাবলী দিয়ে চলছে

শর্তাবলী দিয়ে চলছেনিজস্ব প্রতিবেদক:

মোবাইলফোন অপারেটরগুলো স্মার্ট বা ফিচার ফোন আমদানি করতে পারে না। ফলে অপারেটরগুলো তাদের বিশেষ অফারের সঙ্গে যদি স্মার্টফোন জুড়ে দিতে চায়, তাহলে হ্যান্ডসেট আমদানিকারকদের সঙ্গে পৃথক চুক্তি করে কো-ব্র্যান্ড হিসেবে বাজারে সেই অফার প্যাকেজ আকারে ছাড়তে হয়। কিন্তু এ বিষয়ে কোনও নীতিমালা নেই। আছে কেবল নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিটিআরসি’র দুই পৃষ্ঠার সাধারণ শর্তাবলী।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই বিষয়ে একটি নীতিমালা থাকা জরুরি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বিষয়ে নীতিমালা তৈরির কোনও উদ্যোগ এখনও নেওয়া হয়নি। যে শর্তাবলী তৈরি করা হয়েছে, সেটি বিটিআরসির স্পেক্ট্রাম বিভাগ গত ১৫ জুলাই হালনাগাদ করেছে। কো-ব্র্যান্ডিংয়ের ১৫টি শর্তাবলীর এই নিয়ম হ্যান্ডসেট ও ইউএসবি মডেমের ক্ষেত্রেই কেবল প্রযোজ্য।

এ ব্যাপারে বিটিআরসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন খাঁন বলেন, ‘মোবাইল ব্যবহারকারীদের বেশি সুবিধা নিশ্চিত করতেই এই শর্তাবলী দেওয়া হয়েছে। এতে গ্রাহকেরই লাভ। গ্রাহকের স্বার্থ যাতে কোনও অপারেটর ক্ষুণ্ন করতে না পারে, সেজন্য এসব শর্ত অপারেটরগুলোকে মেনে চলতে হয়।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মোবাইলফোন ব্যবহারকারীদের সুবিধা দিতেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। স্বল্প খরচে, কিস্তিতে এবং বান্ডেল প্যাকেজ-সহ এই উদ্যোগ গ্রাহককেই বেশি সুবিধা দেয়। অন্যদিকে, স্মার্টফোন বিক্রেতা তথা আমদানিকারকরা বিশ্বে হৈ চৈ তোলা স্মার্টফোন বড় বড় অপারেটরগুলোর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বাজারে ছাড়তে পারে। বাজারে একটা হাইপ তৈরি হয়। গ্রাহকও এসব স্মার্টফোন কেনার অপেক্ষায় থাকেন।

এ প্রসঙ্গে মোবাইলফোন অপারেটর বাংলা লিংকের হেড অব রেগুলেটরি অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স তাইমুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা তো হ্যান্ডসেট আনতে বা বিক্রি করতে পারি না। এ কারণে আমাদের কো-ব্র্যান্ডিং করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এই সূত্রে আমরা সেটও বিক্রি করতে পারছি। হ্যান্ডসেটের সঙ্গে আমরা গ্রাহককে স্পেশাল ভয়েস কল, ডাটা (ইন্টারনেট)প্যাক দেই। অনেক সময় বিনামূল্যেও ডাটা প্যাক দিয়ে থাকি। এটা গ্রাহকের জন্য লাভজনক। এক জায়গায় সব একসঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শর্তাবলী আগেও ছিল। সম্প্রতি তা রিফ্রেশ করে তা আরও ব্রড আকারে করা হয়েছে।’

দেশে শাওমি ফোনের পরিবেশক সোলার ইলেক্ট্রো বাংলাদেশ লিমিটেড’র (এসইবিএল) প্রধান নির্বাহী দেওয়ান কানন বলেন, ‘‘এই উদ্যোগটি গ্রাহকের জন্য ভালো। সেটের সঙ্গেই সব (সিম, টক টাইম, ইন্টারনেট প্যাকেজ ইত্যাদি) পেয়ে যাচ্ছেন। এই উদ্যোগে যেকোনও স্মার্টফোন বাজারে ছাড়ার আগে একটা ‘বাজ’ তৈরি করা যায়।’’

দেশে মটোরোলা ফোনের পরিবেশক স্মার্ট টেকনোলজিসের পরিচালক শাকিব আরাফাত জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানই দেশে নতুন করে মটোরোলা বাজারজাত শুরু করেছে। মূলত স্মার্ট টেকনোলজিই দেশে মটোরোলাকে নতুন করে প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও জানান, তারা গত সেপ্টেম্বর মাসে মোবাইল ফোন অপারেটর রবির সঙ্গে কো-ব্র্যান্ডিং করে মটোরোলার তিনটি স্মার্টফোন নিয়ে যাত্রা শুরেু করেছেন।

কো-ব্র্যান্ডিংয়ের সঙ্গে জড়িত স্মার্টফোন আমদানিকরকরা এই উদ্যোগকে ক্রেতা তথা গ্রাহকবান্ধব বলে মনে করেন। তারা বলেছেন, এই উদ্যোগে মোবাইলফোন অপারেটরগুলো বড় ধরনের প্রচারণায় নামে। প্রিন্ট, অনলাইন ও টিভি মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন প্রচার করে। ডিজিটাল মার্কেটিং করে। এই প্রচারণাটা সংশ্লিষ্ট স্মার্টফোনের ব্র্যান্ডিংয়ে বেশ কাজে লাগে।

বিটিআরসির কো-ব্র্যান্ডিংয়ের শর্তাবলীতে উল্লেখ রয়েছে— স্মার্টফোন ও মডেমে সিম লক করা যাবে না, এসবে কোনও অপারেটরের লোগো বা নামসহ কোনও কিছু লেখা যাবে না, মোবাইল ব্র্যান্ডের নাম, মডেল নম্বর দৃশ্যমান থাকতে হবে, স্মার্টফোনে অনুমোদিত অ্যাপস থাকতে হবে এবং তা একটি ফোল্ডারের মধ্যে থাকতে হবে। কোনও অ্যাপের জন্য অর্থ নেওয়া যাবে না এবং অ্যাপস মুছে ফেলা যায়, এমন ব্যবস্থা থাকতে হবে। স্মার্টফোন প্যাকেজিংয়ের সময় এর নাম ও মডেল নম্বর দৃশ্যমান থাকতে হবে। প্যাকেটের গায়ে মোবাইলফোনের কোনও প্যাকেজের নামও উল্লেখ থাকতে পারবে না। শর্তাবলীতে আরও উল্লেখ রয়েছে— স্মার্টফোনের র‌্যাম সর্বনিম্ন এক জিবি এবং রম হতে হবে অন্তত ১৬ গিগা। এছাড়া, ইএমআই (কিস্তি)-এর ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন কিস্তি হতে হবে ছয়টি। এসব ছাড়া আরও কয়েকটি শর্ত উল্লেখ রয়েছে কো-ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ