আজ শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

লালপুরে থৈ থৈ পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফতুল্লা ইউনিয়নের লালপুর, পৌষার পুকুরপাড়, টাগারপাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় দেড় মাস ধরে অর্ধ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ড্রেনের পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় ও ডাইংয়ের ময়লা পানিতে সড়ক ডুবে বন্ধ হয়ে গেছে দোকানঘর। নোংরা পানি ও মলমূত্রের সাথে যোগ হয়েছে শিল্প-কারখানার ক্যামিকেলযুক্ত বিষাক্ত পানি। এ পানিতে চলাচল করে অসুস্থ্য হয়ে পরছেন স্থানীয়রা। শুকনো মৌসুমে এমন জলাবদ্ধতার জন্য ডাইং মালিকদের দায়ী করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এদিকে জলাবদ্ধতায় মানুষ কষ্ট করলেও তাদের দেখতে আসেননি স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান।
সূত্রে জানা গেছে, পানি অপসারণে তিনটি পাম্পের বিদ্যুৎ বিলের ৫০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। ডিপিডিসি কর্তৃক বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয়ায় জলাবদ্ধতায় দেখা দেয় বিভিন্ন এলাকা জুড়ে। রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, দোকান, প্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে ময়লা ও বিষাক্ত পানিতে। পানি বন্ধি এলাকার বসবাস করেন ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন, বক্তাবলীর চেয়ারম্যান শওকত আলী ও কলাগাছিয়ার চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান। এরমধ্যে শওকত আলী ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, লুৎফর রহমান সদ্য বিলুপ্ত থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। দেলোয়ার জাতীয় পার্টি নেতা। এ এলাকার এমপি হলেন শামীম ওসমান।
এলাকাবাসির অভিযোগ, বেশির বাগ এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে গেছে নোংরা ও ডাইং কলখারখানার গরম পানিতে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। বন্ধ হয়ে রয়েছে এলাকার দোকান গুলো। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। মলমূত্র ও শিল্প-কারখানার কেমিক্যালযুক্ত বিষাক্ত পানি রান্নাঘরে ঢুকে দুর্ভোগের সৃষ্টি করেছে। চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এমনি মসজিদে যেতে মুসল্লিদেরও সমস্যা হচ্ছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ।
ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন জানিয়েছেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে এলাকার সবার সিদ্ধান্তে ৯০ হর্স পাওয়ারের তিনটি মোটরের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন চলছে। মূলত তিনটি ডাইং ফ্যাক্টরির এই ময়লা পানির জলাবদ্ধতার জন্য দায়ী। তিন বছরে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হয়ে পড়েছে ৫০ লাখ টাকা। আমরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ছয় লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিষদ করেছি কিন্তু এখনো ৪৪ লাখ টাকা বিল বাকি। জলাবদ্ধতা নিরসনে পানির পাম্প ছাড়া উপায় নেই, কারণ এলাকা নিচু হওয়ায় ড্রেনগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক জানান, পাম্পের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের কাজ চলছে। অনেক পানি হওয়ায় সময় লাগছে। ফতুল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তদারকি করছেন বলে জানান তিনি।
তবে স্থানীয়রা জানান, জলাবদ্ধতার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর ফের পাম্প চালু হয়েছে। এদিকে জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে অনেকেই বলছেন, এ জলাবদ্ধতার জন্য স্থানীয় কয়েকটি ডাইং দায়ী। বিষয়টি প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে তবে এরপরও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ