আজ শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রবীন্দ্রনাথ ও আইনস্টাইন-এর প্রথম দেখা আর কথোপকথন

রবীন্দ্রনাথ প্রথম জার্মানীতে যান ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে। সেবার আইনস্টাইনের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয় নি। এরপর রবীন্দ্রনাথ দ্বিতীয় সফর করেন করেন ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে। এবারের সফরের সময় ১৪ই সেপ্টেম্বর আইনস্টাইনের সাথে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ ঘটে। এদিন সকালে রবীন্দ্রনাথের সম্মানে জার্মানীর সাংস্কৃতিক মন্ত্রী বেকার একটি চা-চক্রের আয়োজন করেন। আমন্ত্রিত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন আলবার্ট আইনস্টাইন এবং জার্মানির অনেক বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক। একই দিন বিকেলে আইনস্টাইন রবীন্দ্রনাথকে চা-চক্রে আপ্যায়িত করেন।

রবীন্দ্রানাথ বিকেলে কাপুথে (Caputh) অবস্থিত আইনস্টাইনের বাসভবন ‘আইনস্টাইন ভিলায়’ যান। সেখানে রবীন্দ্রনাথের সাথে আইনস্টাইন যে কথাবার্তা হয়, তার অংশবিশেষ ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই আগস্ট নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত হয় Einstein and Tagore Plumb the Truth- নামে। এর প্রতিবেদক ছিলেন জার্মানীর বিখ্যাত সাংবাদিক দিমিত্রি মারিয়ানফ (আইনস্টাইনের সৎ-কন্যা মার্গোর স্বামী দিমিত্রি মারিয়ানফ্)।

১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে রবীন্দ্রনাথ আবার জার্মানী সফর করেন এবং ১৪ই জুলাই আইনস্টাইনের বাসভবনে তাঁদের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো সাক্ষাৎ ঘটে। আইনস্টাইন তখন বার্লিনের কাইজার ভিলহেলম ফিজিক্যাল ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক। কবি ও বিজ্ঞানীর মধ্যে সেদিন অনুষ্ঠিত দীর্ঘ আলোচনার সময়ে উপস্থিত ছিলেন কবি অমিয় চক্রবর্তী। তাঁদের মধ্যে তৎকালীন বিশ্বপরিস্থিতি, সমাজ, সংস্কৃতি, রাজনীতি এবং ইহুদী ও ফিলিস্তিনী সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। রবীন্দ্রনাথ ও আইনস্টাইনের মধ্যে তৃতীয়বার সাক্ষাৎ ঘটে ১৯৩০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে।

তাঁদের মধ্যে চতুর্থবার এবং শেষবার দেখা হয় ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই ডিসেম্বর আমেরিকার নিউ ইয়র্কে। সেবার রবীন্দ্রনাথ নিউ ইয়র্কে এক চিত্রশিল্পীর বাসায় আতিথ্য গ্রহণ করেছিলেন এবং আইনস্টাইন সেই বাসায় এসে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করেন। আইনস্টাইন ও রবীন্দ্রনাথের মধ্যে সাক্ষাৎকার ছাড়াও দু’জনের মধ্যে অনেকবার পত্র বিনিময় হয়। রবীন্দ্রনাথকে জার্মান ভাষায় স্বহস্তে লেখা আইনস্টাইনের দু’টি চিঠি শান্তি-নিকেতনের রবীন্দ্রভবন সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত আছে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ