আজ বুধবার, ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

যত্রতত্র গাড়ী পার্কিংয়ে তীব্র যানজট নগরজুড়ে!

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
দেশের শীর্ষ ধনী জেলা নারায়ণগঞ্জের অন্যতম সমস্যা যানজট। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় অসঙ্গতি ও জনবল সংকট, চালকদের খামখেয়ালীপনা, মার্কেটগুলোতে গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা না রাখাসহ অসংখ্য কারণে যানজটের সৃষ্টি হয় পুরো শহরে। নগরীতে যানজটের অন্যতম কারণ অবৈধ গাড়ী পার্কিং। চাষাড়া থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু রোড হয়ে ২নং রেল গেট পর্যন্ত সড়কের দু’পাশের বেশীরভাগ মার্কেটগুলোতে কোন পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় যত্রতত্র যেখানে খুশী সেখানে গাড়ীগুলো পার্কিং করে ড্রাইভাররা। যার ন্যায় সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে নগরীতে।

গতকাল সরেজমিনে দিনব্যাপী নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়ক প্রদিক্ষিণ করে দেখা যায় এ দৃশ্য। যার যার প্রয়োজনে মার্কেটগুলোতে গাড়ী নিয়ে এসে রাস্তার মধ্যে পার্কিং করা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি মার্কেটগুলোতে পার্কিং ব্যবস্থা থাকা কথা থাকলেও অনেক মার্কেটেই পার্কিং ব্যবস্থা নেই। আর তাই ড্রাইভাররা ইচ্ছে খুশী অনুযায়ী রাস্তার পাশেই করছে গাড়ী পার্কিং।

রিক্সাচালকদের অভিযোগ, বঙ্গবন্ধু সড়কে রিক্সা ও ইঞ্জিন গাড়ীর লেন আলাদা থাকলেও বড় গাড়ীর রাস্তাতেই বেশীরভাগ রিক্সাচালক রিক্সা চালায়। কারণ রাস্তার একপাশে প্রাইভেট কার পার্কিং করে রাখা হয়। রিক্সার জন্য যেই লেন রাখা হয়েছে ওই লেন প্রাইভেটকার ওয়ালাদের দখলেই থাকে। যার কারণে রিক্সাওয়ালারা বড় গাড়ীর রাস্তাতে গাড়ী চালায়। আর সে কারণেই যানজটের সৃষ্টি হয়।

অন্যদিকে অবৈধ গাড়ী পার্কিং করা প্রাইভেটকার চালকদের দাবী, প্রয়োজনেই রাস্তাতে গাড়ী বের করা হয়। প্রয়োজনেই মার্কেটে আসা হয়। সেক্ষেত্রে মার্কেটের মালিকদের উচিৎ গাড়ী পার্কিংয়ের জায়গা রাখা। তারা তাদের সুবিধা অনুযায়ী নিচ তলাতেও দোকান করেছে। তারা যদি নিচ তলায় গাড়ী পার্কিং এর ব্যবস্থা করতো তাহলে তো আমরা রাস্তায় গাড়ী রাখতাম না। আমরা গাড়ী নিয়ে মার্কেটে আসলে কোথায় পার্কিং করবো? জায়গা না পেয়ে আমরা রাস্তার পাশে গাড়ী পার্কিং করি। এছাড়া তো আমাদের আর কোন উপায় নেই। পার্কিং তো করতে হবে।
যত্রতত্র গাড়ী পার্কিং করায় বঙ্গবন্ধু সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। মার্কেটগুলোর ভিতর পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় যে যার ইচ্ছেখুশী অনুযায়ী সড়কে গাড়ী পার্কিং করে। এই সমস্যা সমাধানের বিষয়ে কোন হস্তক্ষেপ করা হবে কিনা এমন প্রশ্নে উত্তর জানতে চেয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ মইনুল ইসলামকে দৈনিক সংবাদচর্চা পত্রিকা অফিস থেকে মুঠোফোন করা হলে তিনি বলেন, এই বিষয়গুলো অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) দেখেন। বেশ কিছু বিল্ডিংয়ের অনুমতি রাজউকের দেয়া আছে। রাজউক, প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশন এই তিন প্রতিষ্ঠান মিলে ঈদের পরেই ব্যবস্থা নিবো। ফুটপাত দখল মুক্ত রাখা সেই সাথে পার্কিংয়ের জায়গায় পার্কিং হয়। আমরা সেই ব্যবস্থা করবো।

তিনি আরও বলেন, ফুটপাতটা যেনো পথচারীরা ব্যবহার করতে পারেন সেই সাথে পার্কিংয়ের জায়গা গুলোতে যেনো পার্কিংয়ের কাজে ব্যবহার করা হয়। পপুলারের সামনে যে রিক্সাগুলো দাড়িয়ে থাকে তারপর এসএ পরিবহনের সামনে তাদের গাড়ীগুলো দাড় করিয়ে রাখে। এসকল জিনিসগুলো আমরা আমাদের আমলে নিয়ে এসেছি। তবে এই কর্মসূচীগুলো আমরা ঈদের পরপরই গ্রহণ করবো।

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সালেউদ্দিন আহমেদকে মুঠোফোন করা হলে তিনি বলেন, প্রত্যেকদিন দু’বেলা আমরা অভিযান করি। আমাদের যে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আছেন তিনি এ বিষয়গুলো দেখেন। সড়কে যানজট নিরসনে আমাদের অভিযান অব্যহত আছে।

এ বিষয়ে ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) শরফুদ্দিন বলেন, প্রত্যেকদিন আমাদের অভিযান অব্যহত আছে। অবৈধ পার্কিং করা হচ্ছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। হয় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছি না হয় জরিমানা করছি। এতে করে স্থায়ী কোন সমাধান কিন্তু হচ্ছে না। প্রত্যেকদিন মামলা কিংবা জরিমানা কিন্তু ঠিকই হচ্ছে কিন্তু গাড়ী পার্কিং কিন্তু বন্ধ হচ্ছে না। তাছাড়া সকলেই তো শহর কেন্দ্রীক। তারা গাড়ী দিয়ে শহরে আসলে গাড়ীগুলো রাখবে কোথায় এটাও কিন্তু একটা বিষয়। তাহলে আমাদের করণীয় কি?

তিনি আরও বলেন, যানজট নিরসনে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নেই। কিন্তু তারপরেও যানজন নিরসন কিংবা অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং কিন্তু বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছেনা। মামলা জরিমানা করেও এগুলো বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রয়োজন সকলে একত্রে বসে একটা স্থায়ী সমাধানের। তবে আমাদের অভিযান অব্যহত আছে। আমরা শহরের যানজট নিরসনে প্রাণপনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ