আজ শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মানুষ তাদের ভোট দিয়েছিলো

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০০৯ সালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের মাঝে লড়াইটা জমেছিলো বেশ। চেয়ারম্যান পদে আরও প্রার্থী থাকলেও চারজনের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিলো। আওয়ামী লীগের প্রার্থী থাকায় শেষতক বিএনপির প্রার্থী জয়ী হয়। তবে ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাত্তা পায়নি বিএনপির প্রার্থীরা। মানুষের ভোটে নির্বাচিত এ তিন জনপ্রতিনিধির মেয়াদ ২০১৪ সালে শেষ হলেও নির্বাচন না হওয়ায় এখনও পদে থেকে সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। তবে দুঃসময়ে মানুষের পাশে তাদের খুব একটা দেখা যায় না বলে মনে করেন সচেতন মহল।

ওয়ান ইলেভেনের পর সবেমাত্র ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগ। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ৯ম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে জেতে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে সদর উপজেলা নির্বাচন হয়। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তিনজন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তারা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুল কাদির, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাতা মো. শহীদ বাদল (ভিপি বাদল) ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। তাদের বিপরীতে সে সময়ে বিএনপির সমর্থনে প্রার্থী হন জেলা বিএনপির সহ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস।

রাজনীতি সচেতন মহলের মতে, আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থী থাকায় বেশী ভোট না পেলেও জিতে যান বিএনপির আজাদ বিশ্বাস। তবে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয় জেলা কৃষক লীগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন আহমেদ ও সে সময়ে জাতীয় পার্টির বর্তমানে আওয়ামী লীগের পরিচয়দানকারি ফাতেমা মনির। তাদের মেয়াদকাল শেষ হয়েছিলো ২০১৪ সালে তবে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে হাইকোর্টে একটি রিট করায় নির্বাচন আটকে যায়। তা এখনও নিষ্পত্তি না হওয়ায় একবার নির্বাচিত হয়ে দুইবারেরও বেশী সময় ধরে পদে রয়েছেন তারা।

অভিযোগ রয়েছে, যে তিনজন হাইকোটে রিট করেছেন তারা তিনজনই আজাদ বিশ্বাসের লোক। তাদের মধ্যে একজন ফতুল্লার চৌধুরী বাড়ির আসাদ চৌধুরী, যিনি এলাকায় মানুষের ফুটফরমাশ খাটেন। অপরজন গোগনগর ইউনিয়নের সুকুমপট্টির হোসিয়ারী শ্রমিক হামিম মুন্সি। আরেকজন হলেন মাসদাইরের ব্যবসায়ী বজলুর রহমান। এ তিনজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তারা আজাদ বিশ্বাসের পরামর্শে রিট করেছেন। তারা কেউই জানতেন না এ রিটের কারনে উপজেলা নির্বাচন এত বছর বন্ধ থাকবে।

এদিকে নির্বাচন না হওয়ায় দীর্ঘ দিন নানা সুবিধা ভোগ করলেও উপজেলাবাসীর দুঃসময়ে খুব একটা পাশে পাওয়া যায়নি সদর উপজেলার তিন জনপ্রতিনিধিকে। দুই ভাইস চেয়ারম্যানকে মাঝে মধ্যে দেখা গেলেও চেয়ারম্যান আজাদ বিশ্বাস একেবারেই নেই। এমনকি করোনা ভাইরাসের মতো পরিস্থিতিতেও তাকে মানুষের পাশে দেখা যায়নি। অথচ সদর উপজেলা করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশী ছিলো। এ নিয়ে ক্ষুব্দ মানুষজন। সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, উপজেলা চেয়ারম্যান-ভাইসচেয়ারম্যানরা আসলে কী কাজ করেন।

সূত্র জানায়, উপজেলার আওতাধীন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের বিভিন্ন প্রকল্প চেক পাশ করতে উপজেলা চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর লাগে। এছাড়া বাড়িঘর নির্মাণের ক্ষেত্রে কিছু অনুমোদন নিতে হয়। এসব করে আর ক্ষমতাবানদের তেল দিয়ে আজাদ বিশ্বাস ভালো অবস্থায় আছেন বলে জানা গেছে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ