আজ শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছি: আইজিপি

বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, যেভাবে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ রুখে দিয়েছি ঠিক, তেমনি মাদকের বিরুদ্ধেও আমরা লড়াইয়ে নেমেছি। একজন মাদকসেবী শুধু তার পরিবার ও সমাজের জন্য বোঝা নয়; দেশের জন্যও বোঝা।

তিনি আরও বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছেন, সেখানেই আমরা কাজ করছি এবং সামনে আরও বেশি কঠোর হব।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকায় কমিউনিটি ব্যাংক পঞ্চবটি শাখার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন , আমরা আপনাদের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে চাই সেবা। আপনাদের জানমালের নিরাপত্তার জন্য যেমন আমাদের ওপর নির্ভর, আপনাদের সম্পদ আমানতের নিরাপত্তাও আমাদের দায়িত্ব।

তিনি বলেন, প্রতিদিনই দেশের আনাচে-কানাচে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগছে। এ জন্য আমরাও আপনাদের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে যেতে চাই।

যদি এ দায়িত্ব আমাদের দিয়ে আপনারা এ ব্যাংকের মাধ্যমে আসেন, তা হলে আপনাদের আমানতের নিরাপত্তা দেব। আপনার আমানত আমাদের কাছে সুরক্ষিত থাকবে সে ব্যাপারে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন।
আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা দেশের জন্য যেসব ভূমিকা রাখছে, তার জন্য দেশবাসী আজ বাংলাদেশ পুলিশকে নিয়ে গর্বিত। বাংলাদেশ পুলিশকে নিয়ে এ কমিউনিটি ব্যাংক। বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের পুলিশ এবং এ ব্যাংকটিও জনগণের।

তিনি বলেন, মাত্র দুমাস আগে এ ব্যাংকের শুভ উদ্বোধন হয়েছিল। এই দুমাসে আমরা ছয়টি শাখার অনুমোদন পেয়েছি এবং উদ্বোধন করেছি। প্রতিটি উদ্বোধনেই এত ব্যবসায়ী ছিল, যা এর আগে কখনও দেখা যায়নি। এ ব্যাংকটি আপনাদের ব্যাংক আর আমরা আপনাদের জন্য।

আইজিপি বলেন, আমাদের কল্যাণ ট্রাস্টে প্রতি বছর যেসব লভ্যাংশ আসে, সেখান থেকে আমাদের লক্ষাধিক পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের কাছে তা বুঝিয়ে দেয়া হয়। এখানে একজন কনস্টেবলের যত পরিমাণ টাকার শেয়ার রয়েছে, আমার আইজিপিরও তত পরিমাণ শেয়ার। এটি একটি অন্যরকম দৃষ্টান্ত।

মহাপরিদর্শক বলেন, বাবা-মাকে অবশ্যই সন্তানদের দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে, আপনার সন্তান কোথায় যাচ্ছে কার সঙ্গে মিশছে, তারা আপনাদের সন্তানদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে যারা মাদকসেবী হয়ে গেছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্য চেষ্টা করছি আমরা।

তিনি বলেন, একটা সময় নিয়ম ছিল– সন্ধ্যায় মাগরিবের আজান দিলেই বাসায় আমাদের চলে যেতে হতো। এটি পরিবারের অলিখিত নিয়ম ছিল। এখানে অনেক মুরব্বি রয়েছেন, তারাও মাথা নাড়ছেন।

তিনি আরও বলেন, আগে মুরব্বিদের একটি বিশাল কন্ট্রোল ছিল, দূর থেকে আগে সিগারেট হাতে থাকলেও মুরব্বি দেখলে তা ফেলে দিলেও এখন আর তা হচ্ছে না। টিচারদের ভয়ে আগে আমরা স্কুলে নিয়ম মেনে চলতাম, এখনো সেই শিক্ষকদের দেখলে আমরা সালাম করি; কিন্তু এখন সেই দিন হারিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষকদেরও তাদের সম্মানের জায়গা অর্জন করে ধরে রাখতে হবে।

আইজিপি বলেন, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে আমরা চেষ্টা করছি এবং মানুষকে নিয়ে আমরা সামাজিক সমস্যা ও সোশ্যাল ক্রাইম দূর করতে হবে। দ্রুত সমস্যা সমাধানে আমরা জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯ খুলেছি। এটি চালু হওয়ার পর দুই বছরের মধ্যে আমরা পুলিশি, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের সেবা দিতে পারছি। ইতিমধ্যে অনেক অপরাধ হওয়ার আগেই আমরা তা উদ্ঘাটন করতে পেরেছি।

জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, আমাদের ১০০টি ডেস্ক রয়েছে, যেটি আমরা ৫০০ সেন্টারে উন্নিত করতে চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে ৯৯৯-এর মাধ্যমে আমরা কয়েক কোটি কল রিসিভ করেছি, ৭৮ লাখ লোকজনকে সহযোগিতা করতে চেষ্টা করেছি। আমাদের প্রতিটি ডেস্ক সার্বক্ষণিক ব্যস্ত থাকে এবং সেখানে সবাই কল সেবা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন।

এ সময় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক জসিমউদ্দিন, জেলা পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুল ইসলাম, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ আলী, পরিচালক প্রবীর সাহা প্রমুখ।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ