আজ শুক্রবার, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মন্ত্রী গাজীর এলাকায় প্রস্তুত

নবকুমার:

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের নিজ নির্বাচনী এলাকা রূপগঞ্জে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ৪৯৮ টি ঘর নির্মাণ হচ্ছে । তার মধ্যে ২০০ টি ঘরের নির্মাণ কাজ প্রায় সমাপ্ত হয়েছে । আগামী ২৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ ঘর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন। পরে উপকারভোগীদের নিকট চাবিও কবুলিয়ত সনদ হস্তান্তর করা হবে।

বৃহস্পতিবার ( ২১ জানুয়ারি) দুপুরে মুড়াপাড়া ইউনিয়নের দড়িকান্দি এলাকায় আশ্রয়ণ -০২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘর পরিদর্শন করেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। এসময় উপস্থিত ছিলেন রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ নুসরাত জাহান, সহকারী কমিশনার ( ভূমি) আফিফা খাঁন, আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই তিনি প্রথম পর্যায়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার মধ্যে আমার নির্বাচনী এলাকায় সবচেয়ে বেশি ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু সারাজীবন দুঃখী মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। তার কন্যা, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ৬৯ হাজার ৯০৪ টি গৃহহীন পরিবারকে ঘর দিয়ে প্রমাণ করলেন তিনি যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা। এ বাংলা তার নেতৃত্বেই বদলে যাচ্ছে।

তিনি বলেন , অতীতে অনেকে সরকার গঠন করেছে তারা কেউ ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য বিনামূল্যে ঘর বাড়ি তৈরী করে দেয় নাই। তারা দুনীতি করে এখন জেল খাটছে। কেউ পলাতক রয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ভূমি-গৃহহীনদের আবাসন প্রকল্প মুজিববর্ষ ভিলেজে ইতিমধ্যেই পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহসহ সকল নাগরিক সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশে কোন গৃহহীন থাকবে না। পর্যায়ক্রমে সকল গৃহহীনদের এ প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।

এর আগে বুধবার ( ২০ জানুয়ারি) রূপগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পের গৃহ নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মাহবুব হোসেন ( অতিরিক্ত সচিব)। প্রকল্প পরিচালক ঘর গুলো ঘুরে দেখেন। সরকারের পক্ষ থেকে ঢাকা থেকে সাংবাদিকরা এসেছিলো। এসময় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সেলিম রেজা, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ নুসরাত জাহান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফিফা খাঁন, প্রধানমন্ত্রীর ফটো সাংবাদিক ইয়াসিন কবীর জয়, মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব তোফায়েল আহমেদ আলমাছ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আমান উল্লাহসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মাহবুব হোসেন। তিনি নির্মাণ কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীনদের জন্য একই সময়ে এত বিপুল পরিমাণ ঘর প্রদান করা সারা পৃথিবীতে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। সারাদেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার গুলোর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার এই ঘরগুলো একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। স্বপ্নময় নারায়ণগঞ্জ বিনির্মাণের পথে এটি একটি দৃঢ় পদক্ষেপ।


আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০ নং ঘরের মালিক মুড়াপাড়া ইউনিয়নের বানিয়াদী এলাকার সন্ধ্যারানী বলেন, শিশুকালে তিনি পিতা হারান। ৩৫ বছর আগে স্বামীর মৃত্যু হয়। ভিক্ষা করে তিনি কষ্টের জীবন যাপন করছেন। মাঝে মধ্যে মুড়াপাড়া বাজারে পেয়াঁজের দোকানে পরিছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করেন। তার আয়ের টাকার বেশিরভাগই বাড়ি ভাড়ায় খরচ হয়েছে। তার জীবনে সঞ্চয় বলতে কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পেয়ে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীককেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম জানান, প্রতিটি পরিবারের জন্য দুই শতাংশ জমি বরাদ্দ দিয়ে ঘর তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ১ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, নারায়ণগঞ্জে ভূমি ও গৃহহীন ৬৬৭ পরিবারের মাঝে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত , গত বছর ১২ নভেম্বর মুড়াপাড়া ইউনিয়নের দড়িকান্দী গ্রামে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক । মন্ত্রী এ নির্মাণ কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন । প্রশাসনকে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ঘেঁষে উপজেলার কাঞ্চন, আধুরিয়া ও মুড়াপাড়ায় ভূমি-গৃহহীন পরিবারের জন্য টিনশেড ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এ প্রকল্পের নির্মিত টিনশেড গৃহে রয়েছে দু’টি শয়ন কক্ষ, একটি রান্না ঘর, সংযুক্ত বাথরুম ও গোসলখানা। সামনে বারান্দা সহ রঙ্গিন টিনের চালা।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ