আজ সোমবার, ১৩ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভোটের লড়াই থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন কাসেমী !

ভোটের লড়াই থেকে

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জ-৪ (সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লা) নিয়ে গঠিত আসনটি। এ আসনটিতে ভোট রয়েছে, ৬ লাখ ৫১ হাজার ১২৩ জন। জেলার মধ্যে বাকি চারটি আসন থেকে সর্বোচ্চ ভোটার এ আসনে। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ভোটার বেশি হওয়ার কারণ হলো আদমজী ও ফতুল্লা ইপিজেড।

দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে নারায়ণগঞ্জে বসবাস করার সুবাধে অনেকেই ভোটার হয়ে গেছেন এ নির্বাচনী এলাকায়। আবার অনেকেই নিজের ভোটার স্থানান্তর করে নিয়ে আসায় এ সংসদীয় আসনে ভোটার বেড়েছে। গত ১০ম সংসদ নির্বাচনে এ আসনে ভোটার সংখ্যা ছিল কম। ১১তম সংসদ নির্বাচনে ভোট বেড়েছে।

এ আসনে ভোটের মাঠে আলোচনায় আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় ও ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা যিনি নারায়ণগঞ্জসহ দেশে বেশ পরিচিত রাজনীতিবিদ একেএম শামীম ওসমান। অপরদিকে শামীম ওসমানের সাথে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ঐক্যফ্রর্ন্টের নেতা মুফতি মনির হোসেন কাসেমী। শামীম ওসমান নৌকা ও কাসেমী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়তেই দল থেকে প্রতীক পেয়েছেন।

প্রতীক পেয়ে শামীম ওসমান, স্ত্রী লিপি ওসমান, ছেলে অয়ন ওসমানসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা পুরোদমে গণসংযোগ, পথসভা, উঠান বৈঠক, আলোচনা সভা করে যাচ্ছেন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। আগেই বলা হয়েছে, শামীম ওসমান রাজনৈতিক পরিবার থেকে উঠে এসে রাজনীতি করছেন। ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মুফতি মনির হোসেন কাসেমী শিক্ষকতা থেকে রাজনীতিতে এসেছেন। আর এসেছেন মাত্র কয়েক দিন আগে। তিনি নির্বাচন করার লোক নয় এমনটিই জানালেন নেতাকর্মী থেকে সাধারন ভোটারগন। নির্বাচনে যারা ভোটের লড়াই করে তারা সকলেই পরিচিত হয়েছেন কয়েক বছর আগে থেকে। আর কাশেমী এসেছেন হঠাৎ করে।

সংঘর্ষে ফুলে ভুতের মতো করে তিনি নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে যেমন এসেছেন ঠিক তেমনি ভোটের মাঠ থেকে তেতুল গাছের রূপকথার হারিয়ে যেতে পারেন বলে মনে করে ফতুল্লার মুসলিম নগরের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা গতকাল ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদককে নিয়ে কাশেমীর বাড়ির সামনে সমাবেশ করে এমন মন্তব্য করেছেন।

জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ক্ষমতার বাহিরে ১০ বছর ধরে। এ দলের অনেক পদধারী নেতা ধানের শীষ প্রতীক প্রত্যাশীরা চিঠিও পেয়েছিলেন। তারা কেউ ধানের শীষ প্রতীক পায় নি। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ আসনে দলীয়ভাবে অপরিচিত মুখ মুফতি মনির হোসেন কাসেমীকে ধানের শীষ প্রতীক দিয়েছেন। গত ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে কাসেমী কোন প্রকার গণসংযোগ, পথসভা, আলোচনা সভা, উঠান বৈঠক করতে পারেন নি। পরেন নি দলীয় ত্যাগী নেতাদের সাথে আলোচনায় বসার পরিবেশ করতে।

কাসেমী মিডিয়া সম্পর্কে উদাসীন। জেলা থেকে নিয়মিত প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলো বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীদের আলোচনা, সমালোচনা, গণসংযোগ, পথসভা, উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন কর্মসূচির সংবাদ প্রকাশ করছেন তা দেখার ও জানার ব্যাপারেও উদাসীন তিনি। তিনি জানেনই না তাকে নিয়ে সংবাদপত্রগুলো কি ধরনের মন্তব্য করছে। নারায়ণগঞ্জের সাধারন মানুষ তাকে নিয়ে কি ভাবছে? সে বিষয়ে তিনি শুধুমাত্র উদাসীনই নন বরং অজ্ঞও বলে মনে করছেন সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা।

কাসেমী পারেনি নিজ এলাকা মুসলিম নগরে জনমত তৈরি করতে। এমনকি স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করতে। সরেজমিনে ঘুরে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা এলাকায় একাধিক বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলেন, আধ্যাপক মামুন মাহামুদ, সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন, ব্যবসায়ী শাহআলম, সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদসহ দলের অনেক ত্যাগী নেতাদের সাথে যোগাযোগ না রাখায় ও পরামর্শ না নেয়ায় কাসেমী অচেনাই রয়ে গেছেন। তারা এমনটাও বলছেন, ছাত্রদল, যুবদল, মহিলাদল, যুব মহিলাদলসহ সংগঠনের কোন নেতাদের সাথে পরিচয় হওয়ার মতো কোন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না তার।

ভোটের বাকি মাত্র ১১ দিন। শামীম ওসমানের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো ক্ষমতা কাসেমীর নেই বলেও দাবি তাদের। তারা শঙ্কা করে বলছেন, ভোটের আগেই কাসেমী ভোটের মাঠ ছাড়তে পারেন! কারন কাসেমী শিক্ষক মানুষ। তিনি রাজনীতিতে নতুন। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি সম্পর্কে তার জ্ঞান না থাকায় বেশ বেকায়দায় আছেন ধানের শীষ প্রতীক দেয়া প্রার্থী কাসেমী।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ