আজ শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

না’গঞ্জ বেওয়ারিশ কুকুরের নগরী!

বেওয়ারিশ কুকুরের নগরী

বেওয়ারিশ কুকুরের নগরী

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুকুরের দখলে পুরো নারায়ণগঞ্জ। নগরবাসী বলছেন, অবস্থা এমন যে এই নগরী এখন কুকুরের নগরী। নারায়ণগঞ্জে বেওয়ারিশ কুকুরের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে শহর ও শহরতলীর মানুষ। নারায়ণগঞ্জ শহর এবং ফতুল্লা সহ সর্বত্র কুকুরের কামড়ের ভয়ে ঘর থেকে বের হতে সাহস পাচ্ছে না সর্ব স্থরের সাধারন মানুষ। অনেক পাড়া মহল্লা রাতের আধারে সম্পূর্ণ রুপে কুকুরদের দখলে চলে যায়। পরিস্থিতি এখন এমন দাড়িয়েছে যে দিনেরবেলায়ও অনেকে কুকুরের ভয়ে ঘর থেকে বের হতে সাহস পান না।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে কুকুরের কামড়ের আহত হয়ে গড়ে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ জন করে কুকুরের কামড়ে আক্রান্তরা চিকিৎসা নিচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুই বেশি। ফলে শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী মানুষের মধ্যে কুকুর আতঙ্ক বিরাজ করছে। কিন্তু কারো কিছু করার নেই। কারণ উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০১২ সাল থেকে কুকুর নিধন বন্ধ রয়েছে। এতে করে কুকুরে উপদ্রপ দিন দিন বেড়েই চলছে।
শহরের প্রতিটি পাড়া মহল্লায় বেওয়ারিশ কুকুর অস্বাভাবিকভাবে ঘুরতে দেখা যায় প্রতিদিন। কুকুরের উগ্রভাব দেখে মনে হয়, যে কোনও মুহূর্তে যে কাউকে কামড় দিতে পারে। শহরের বিভিন্ন স্থানে ডাস্টবিন ও রাস্তার ওপরে ময়লা আবর্জনা জমে থাকে। সেখানে দল বেঁধে আসছে বেওয়ারিশ কুকুর।
প্রায়ই স্কুলগামী কোমলমতি শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী মানুষকে কুকুরের দল ধাওয়া করে। এর মধ্যে কাউকে কাউকে কামড় ও বসিয়ে দেয়।
নারায়ণগঞ্জে বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে বা আঁচড়ে প্রতিদিন গড়ে ৭০ থেকে ৮০ জন শুধু নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল (ভিক্টোরিয়া) থেকে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন বলে হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে। এর বাইরে জেলার বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক হাসপাতালে ও বিভিন্ন ফার্মেসী থেকে জলাতঙ্কের টিকা ক্রয় করে দেওয়া হয়। সে হিসাব ধরলে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত ও জলাতঙ্ক রোগীর সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি হবে। কুকুরের কামড় খেয়ে টিকা না নিলে মানুষের জলাতঙ্ক রোগ হয়।
সরকারি হাসপাতালে রোগীর পরিসংখ্যান পাওয়া গেলেও বেসরকারি কিছু হাসপাতালেও জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া হয়। তবে তারা এর হিসাব সংরক্ষণ করেন না।কুকুরের সংখ্যা বেড়ে গেলে সাধারণত সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো তা নিধন করত। কিন্তু অমানবিক হওয়ায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০১২ সাল থেকে সারা দেশে কুকুর নিধন বন্ধ আছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কুকুর নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় সারা দেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জেও কুকুরের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। বেড়েছে কুকুরের কামড়ে আক্রান্তের সংখ্যাও। কুকুরের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়বে। তাই কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ দরকার।
এ বিষয়ে জানতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, গত কয়েক বছর ধরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে কুকুর নিধন বন্ধ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাদের কিছুই করার নেই।
এদিকে নারায়ণগঞ্জের সাধারন মানুষ মনে করেন, সরকারের উচিৎ অবিলম্বে আদালতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করে কুকুর নিধনের ব্যবস্থা করা।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ