আজ শনিবার, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিভীষিকাময় ১৫ আগস্ট আজ

বিভীষিকাময় ১৫ আগস্ট আজ

 বিভীষিকাময় ১৫ আগস্ট আজ

নবকুমার:

বাঙালির ইতিহাসের বেদনাবিধুর ও বিভীষিকাময় ১৫ আগস্ট আজ । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩ তম শাহাদাৎ বাষির্কী

।এটি বাঙালি জাতির শোকের দিন। আগস্ট মানেই আ.লীগের হারানোর মাস । বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতে বাঙালির ইতিহাসের মহানায়ক স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাধীনতা বিরোধীরা।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর একদল চক্রান্তকারী ও উচ্চাভিলাষী ক্ষমতা লোভী হায়েনার দলের নির্মম বুলেটের আঘাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সহ পরিবারে হত্যা করা হয়। জাতির পিতার হত্যার মধ্য দিয়ে একাত্তরের পরাজিত শত্রুরা বিষাক্ত সাপের মতো ফণা তুলে গর্ত থেকে বেরিয়ে আসে এবং দেশকে মুক্তিযুদ্ধের মহান আদর্শ ও চেতনা থেকে বিচ্যুত করার দিকে ঠেলে দেয়।
ঘাতকরা সে দিন শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই থেমে থাকে নি। বাঙালি জাতিকে নেতৃত্ব শূণ্য করতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে হত্যা করে তার প্রিয় সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, তিন ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, সেনা কর্মকর্তা শেখ জামাল, ১০ বছরের শিশুপুত্র শেখ রাসেল এবং নবপরিণীতা দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল। প্রবাসে থাকায় জীবন রক্ষা পান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

নির্মম সেই হত্যাযজ্ঞে আরও নিহত হন বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ সেরনিয়াবাত, মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, শিশু পুত্র সুকান্ত বাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, নিকটাত্মীয় শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নঈম খান রিন্টু এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদসহ কয়েকজন নিরাপত্তা কমকর্তা-কর্মচারী।

ইতিহাসের নির্মম সেই হত্যাকান্ডের বিচারের পথ বন্ধ করতে ইনডেমনিটি বিলও পাস করা হয় সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের শাসনামলে। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে। চলে ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র।

বিদেশে থাকায় সেই কালোরাতে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বাবা নিহত হওয়ার ছয় বছর পর বাংলাদেশে ফিরে এসে দলের হাল ধরেন শেখ হাসিনা। বাবার মতো তাকেও হত্যার ষড়যন্ত্র হলো। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামীলীগের জনসভায় বিএনপি জামায়াত গ্রেনেড হামলা করে নারী নেত্রী আইভী রহমানসহ আওয়ামীলীগের ২১ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করে। সে দিন অল্পের জন্য প্রাণে বেচে যান তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু থেমে যাননি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। তারই নেতৃত্বে প্রাণ পেয়েছে গণতন্ত্র। বিচার হয়েছে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের।

বহু সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একুশ বছর পরে
১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় ফিরে এসে দেশকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় ফেরানো শুরু করলেও ঐ কালো অধ্যায় জাতির ইতিহাস থেকে মুছে যেতে পারে না, যেখানে রয়েছে জাতির জন্য শিক্ষার অনেক ঐতিহাসিক উপাদান।

সেই হত্যাকান্ডের বিয়োগান্তক অধ্যায় সূত্রে জাতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টের শহীদদের।  ঘৃণা-ধিক্কার জানাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শবিরোধী চক্রান্তকারী ঘাতকদের।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ