আজ শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আড়াইহাজারে বিএনপির ভরাডুবির নেপথ্যে ছিল জুঁ….জুঁ’র ভয়, সুষ্ঠু পরিবেশ দিতে ব্যর্থ ইসি

বিএনপির ভরাডুবির নেপথ্যে

বিএনপির ভরাডুবির নেপথ্যে

আড়াইহাজার প্রতিনিধি: আড়াইহাজার দুইপৌরসভায় বিএনপির ভরাডুবির কারন কি? এর নেপথ্যেই বা কি ছিল। এর কারন অনুসন্ধ্যান করতে গিয়ে বের হয়েছে বিএনপির কর্মীÑসমর্থকদের মাঝে ছিল জুঁ….জুঁ’র ভয় এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট পুলিশ, র‌্যাব, রিাটনির্ং অফিসারদের শৈথিলমনভাব। এছাড়াও বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতা চরমভাবে ক্ষতি করেছে।

সম্বনয়ের অভাব: দুইপৌরসভায় নির্বাচনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী হতে মাঠে নামেন থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউছূফ আলী ভূঁইয়া, পৌরসভা যুবদলের সভাপতি কবির হোসেন, থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মঞ্জুর হোসেন মোল্লা, আবুল কালাম ভূঁইয়া ও ফৌজিয়া ইয়াছমিন পপি। এদের মধ্যে অনেকের লোকজনই প্রকাশ্যেই নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করেছেন। প্রার্থীর পরাজয়ে তারা ভিতরে ভিতরে পারভীন ও নজরুল ইসলাম আজাদের বিরুদ্ধে তারা অপপ্রচার চালায়। বিএনপির নেতা আঙ্গুরপন্থী জাকির ছিলেন নৌকা প্রতীকের এজেন্ট অপরদিকে পৌরসভা বিএনপির সভাপতি খসরু জাহিদসহ ও আঙ্গুরপন্থী আরো অনেকেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যেই প্রচার চালায়।

সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর দলীয় মেয়র প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ছিলেন নিরব। প্রয়াত নেতা আড়াইহাজার থানা বিএনপির সভাপতি শারীরিকভাবে অসুস্থ্য থাকায় তিনি ছিলেন নিরব। তাদের লোকজন গণসংযোগে ব্যাপক সবর ছিলেন। কিন্তু ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মেরেছেন। কারন প্রার্থী ছিল আদাজের। তাকে পরাস্থ করাই ছিল আঙ্গুর ও খসরু’র অনুসারীদের মূল উদ্দেশ্য। গত পৌরসভা নির্বাচনেও একই ঘটনা ঘটেছিল। পৌরসভা বিএনপির সভাপতি জাহিদ প্রকাশ্যেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী সুন্দর আলীর নির্বাচন করেন।

তবে দীর্ঘদিন ধরেই থানা বিএনপির নেতৃত্বে ছিল চরম দুর্বলতা। এটি দলের প্রার্থীর জন্য ‘কাল’ হয়ে দাঁড়িয়ছে। পদ-পদবী না থাকার অনেকে দলীয় কর্মকান্ড থেকে নিরব ছিলেন। এতে করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে মাঠে নামতে ভয়ে ভয়ে ছিলেন বিএনপির নেতারা। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে যেতে সাহস করে উঠতে পারেনি। তারা প্রকাশ্যেই নৌকায় সিল মেরেছেন।
ছিল ভোট কেন্দ্র দখলের মহোসৎব: ৮ নং বিএনপির নেতা ও আড়াইহাজার সরকারি সফর আলী কলেজ ভোট কেন্দ্রের ধানের র্শীষের

এজেন্ট আমির আলী বলেন, নানা প্রতিকূল পরিবেশেও বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রামে বলিষ্ঠ ভুমিকা ছিল পারভীনের। সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপির ধানেরশীর্ষের পক্ষে একটি নিরব বিল্পব হয়ে যেতো। আড়াইহাজার পৌরসভায় বিএনপির বিপুল পরিমাণ ভোট রয়েছে। ২৫ জুলাই নির্বাচনে দলীয় ভোটাররা ভোট দেওয়ার প্রস্তুতিও ছিল। কিন্তু প্রতিহিংসার রাজনীতির কারনে বিএনপির প্রার্থীদের এজেন্টরা শক্ত অবস্থান করতে পারেনি। এখানে সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর ও বদরুজ্জামান খসরু’র অনুসারীদের ভোট প্রদানে ছিল অনিহা। অনেকেই প্রকাশ্যেই আওয়ামী লীগের এজেন্ট হয়েছেন অথবা নৌকা প্রতীকে ভোট প্রয়োগ করেছেন। একই অবস্থা হয়েছিল গতপৌরসভা নির্বাচনেও।

নাম না প্রকাশের শর্তে থানা বিএনপির একনেতা বলেন, ‘পারভীন আক্তার ছিলেন উপযুক্ত প্রার্থী। তিনি ছাড়া অন্যযারা এখানে প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তারা এতোদূর এগুতে পারত না। কারন এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তার লোকজন নির্বাচনের প্রথম থেকেই ছিলেন মারমুখী ভুমিকায়। তাদের সাথে এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর কুলিয়ে উঠতে পারেনি। সুন্দর আলীর কাছে শেষ পর্যন্ত পরাস্থ হয়ে হয়েছে তাকে।

ভোটের সমিকরণ: গত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ‘প্রতীক’ ছাড়াই ৩,৮০০ ভোট পেয়েছিলেন। এবার ভোট পেলেন ২,৩২৬ ভোট। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন হাবিবুর রহমান পেয়েছিলেন ৫,২০০ ভোট। বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুন্দর আলী পেয়েছিলেন ৪,৫০০ ভোট। ‘২০১৩ সালের ৬ জুলাইয়ের ওই নির্বাচনে কেন্দ্রে যাতে কোন প্রকার গোলযোগ করতে না পারেন সুন্দর আলীর ব্যাক্তিগত কর্মী-বাহিনী ছিলেন তৎপর। আর সরকার দলীয় লোকজন ছিলেন হাবিবুুুুুরের পক্ষে তৎপর। বিএনপির প্রার্থী ছিলেন অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থানে।’

১ নং ওয়ার্ডের বিএনপির এজেন্ট বাদশা বলেন, ভোটাররা ভূঁতের ঘরে গিয়ে ভোট দিতে পারলে হাবিবুরের ভোট সব ধানের শীর্ষ প্রতীকে দিতেন। বিএনপির নতুন ভোটার ছিল প্রায় ৪,০০০। ধানের র্শীষের প্রতি নারী ভোটারদের ব্যাপক সউৎসাহ ছিল। এতে করে দুই মেয়রপ্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারত।

২০১৩ সালের ওই নির্বাচনটি মূলত নির্বাচনটি ছিল আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর মধ্যে লড়াই। কিন্তু এবার দেখা গেছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর লোকজন নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ায় বাধ্য করেছেন। এতে বিএনপির বিপুল পরিমাণে ভোট নিয়ে নেয়। গত পৌরসভা নির্বাচনে এমন ধরনের পরিস্থিতি ছিল না। এবার আওয়ামী লীগের প্রাথীর মারমুখী এজেন্টের তৎপরতার কাছে দাঁড়াতেই পারেনি বিএনপির এজেন্টরা। এতে নির্বাচনটি পুরোপুরি ‘কালিমা লেপন’ হয়ে গেছে।

ভেঙে পড়ে আইনশৃঙ্খলা: নির্বাচন কমিশনার সচিব হেলালুউদ্দিনের নির্দেশ মাফিক নির্বাচনের দিন একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি ছিল উপজেলা নির্বাচন কমিশনের। সেভাবেই সাজানো হয়েছিল আইনশৃঙ্খলা। লক্ষ্য করা গেছে সকাল ১০টা পর্যন্ত মূষলধারে বৃষ্টির মধ্যেও ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে আসতে শুরু করেন। নিয়ম অনুযায়ী ভোট কেন্দ্রে ভূঁতের ঘরে গিয়েই ভোট দিচ্ছিল সবাই। কিন্তু ১১টা থেকেই ভোট প্রকাশ্যে দেওয়ার জন্য বাধ্য করতে থাকেন বিভিন্ন কেন্দ্রে।

বেলা বাড়ার সাথে সাথেই পাল্টে যায় পুরো চিত্র। বিএনপির বিপুল পরিমাণ ভোট হুমকীর মুখে নিয়ে নেয় আওয়ামী লীগের এজেন্টরা। কেন্দ্রের মধ্যে করা হয় মারধর। কেন্দ্রের বাইরে ব্যার ও পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি থাকলেও প্রার্থীদের অভিযোগের পর তাদের কোন প্রকার ব্যবস্থাই নিতে দেখা যায়নি। এরই মধ্যে ক্ষমতাসীনদলের লোকজনের নানা চাপের মুখে জুঁ….জুঁর ভয়ে বেলা ১২টার মধ্যে সবক’টি ভোট কেন্দ্রেগুলো বিএনপির এজেন্ট শূন্য হয়ে পড়ে। ক্ষমতাসীনরা সাংবাদিকদেরও নানা কৌশলে হুমকী দিয়ে কেন্দ্র ত্যাগে বাধ্য করেন। এতে করেই বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা। একই অবস্থা ছিল গোাপলদী পৌরসভায়ও। এতে করে নির্বাচনটি জনগণের কাছে পুরোপুরিই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে। এতে করে ভালো একটি নির্বাচনি পরিবেশ উপহার দিতে ব্যর্থ হয়েছেন উপজেলা নির্বাচন কমিশন আফরোজা খাতুন। একারণেই আড়াইহাজার পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী পারভীন আক্তার সবক’টি ভোট কেন্দ্র স্থগিতের আবেদন করেন। গোপালদী পৌরসভায় মুসফিকুর রহমান ভোট বর্জন করেন।

কথা দিয়ে রাখেনি: নির্বাচন কমিশনার সচিব, এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, জেলা পুলিশ সুপার একটি সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু ভোটারগণ নির্বাচনের দিন কি দেখতে পেলেন।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ