আজ মঙ্গলবার, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিএনপির এমপিদের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকায় ত্রাণ দিলেও সরকারিভাবে ত্রাণকাজে সমন্বয়ের অভাব দেখছেন বিএনপির সাত এমপি। তাদের অভিযোগ, সরকারিভাবে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারি ত্রাণ বিতরণ করা হলেও এ সম্পর্কে জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের কিছুই জানানো হয় না। এমপিদের মাধ্যমে বিতরণের জন্য ত্রাণসামগ্রী বরাদ্দ না থাকলেও সরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণে জেলা কমিটির উপদেষ্টা রয়েছেন স্থানীয় এমপিরা। তবে সরকারি ত্রাণ বিতরণে ক্ষমতাসীন দল ও দলটির জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা বা পরামর্শ করেই ত্রাণ বিতরণ চলছে। বিএনপির এমপিদের এ কাজে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে না, এমনটাই অভিযোগ দলটির প্রতিনিধিদের।

সরকারি ত্রাণ সরাসরি জনপ্রতিনিধিদের জন্য বরাদ্দ নেই উল্লেখ করে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান  বলেন, ‘সরকারি ত্রাণ সরাসরি ডিসি, ইউএনও, পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা বিতরণ করবেন। তবে সংসদ সদস্যদের উপদেষ্টা করে ত্রাণ সমন্বয় করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা চাইলে এলাকার অসহায়-দুস্থদের তালিকা প্রস্তুতের সময় সহযোগিতা করতে পারেন।’

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের এমপি জাহিদুর রহমান  বলেন, ‘আমি সরকারি ত্রাণ বিতরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। সরকারি ত্রাণ নিয়ন্ত্রণ করছেন জেলা প্রশাসক। আমাকে কোনও দিন ডাকেও নাই এবং কোনও পরামর্শও নেননি। সরকার দলীয় এমপিদের গোপনে তারা কিছু দিচ্ছেন কিনা জানি না। সরকারি কী বরাদ্দ হচ্ছে না হচ্ছে এর কিছুই জানি না।’

তবে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম  বলেন, আমি ত্রাণ ইউএনও সাহেবকে দিয়ে দিয়েছি। ওনার কোনও বক্তব্য থাকলে সেখানে বলতে পারেন। আর আমাদের এখানে ওইভাবে কোনও মিটিং করা হয় না। তবে গতকাল সচিব মহোদয়ের সঙ্গে মিটিংয়ে জাহিদ সাহেব উপস্থিত ছিলেন।

সরকারি কোনও ত্রাণ বিতরণে নিজের অংশগ্রহণ নেই উল্লেখ করে বগুড়া-৪ আসনের এমপি মোশাররফ হোসেন বলেন, আমার নিজের সংসদ সদস্য হিসেবে এক মাসের বেতন এক লাখ ৭৩ হাজার ৫০০ টাকা থেকে দুই উপজেলার প্রশাসনকে ৫০ হাজার টাকা করে নগদ এবং সঙ্গে সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্কও দিয়ে এসেছি। এলাকার অসহায় মানুষদের একশ’ মণ চাল এবং একশ’ মণ পেঁয়াজ, ডাল ও তেল দিয়ে এসেছি। এরপরও ব্যক্তিগতভাবে আমি যতটুকু পারছি, সেই সহযোগিতা তো করছিই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা  বলেন, ত্রাণ বিতরণে সরকার থেকে আমি কোনও সহযোগিতা পাইনি। আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ইতোমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলার দুই হাজার পরিবারকে সহায়তা দিয়েছি। রমজানে এই সহায়তা কর্মসূচি আবারও শুরু হবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন  বলেন, কোনও এমপিকে সরাসরি সরকারি ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে না। প্রত্যেক জেলায় এমপি, রাজনৈতিক দলের নেতা, মসজিদের ইমামসহ অন্যান্য ব্যক্তির সমন্বয়ে ত্রাণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারাই এলাকার দুস্থ মানুষদের তালিকা তৈরি করছেন। সেখানে কারও দলীয় পরিচয় দেখা হচ্ছে না। এরপরও বিএনপির এমপিদের দুস্থদের কোনও তালিকা থাকলে তারা জেলা প্রশাসককে দিতে পারেন। সেটা যাচাই-বাছাই করে ত্রাণ দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, এর বাইরে বিএনপি দলীয়ভাবে কাউকে ত্রাণ দিতে চাইলে তারা তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসককে দিলে সহযোগিতা দেওয়া হবে। এ পরিস্থিতি কারও একার পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। আমরা সবাইকে নিয়ে সমন্বয় করে কাজ করছি।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ