আজ শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ফের উত্তপ্ত না’গঞ্জের রাজনীতি

সংবাদচর্চা অনলাইন, এস এম রিফাত:   

আগে উত্তর থেকে হুশিয়ারী আসলে জবাব মিলতো দক্ষিণ মেরু থেকে। তবে, এবার উত্তরে-উত্তরেই সৃষ্টি হয়েছে বিবাদ। মোদ্দাকথায় আইভী-শামীমকে ঘিরে সরগরম থাকা নারায়ণগঞ্জ যখন শান্ত ঠিক তখনই নতুন করে সেলিম ওসমান ও ভিপি বাদলকে ঘিরে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে জেলার রাজনীতি।

সূত্রানুযায়ী, গত ২ মার্চ বন্দরের ফরাজিকান্দা বালুর মাঠে বঙ্গবন্ধুর শততম জন্ম বার্ষিকী ও  আওয়ামী লীগের ৭১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বৃক্ষরোপন ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল। সেসময় তিনি বলেন, বন্দরে আওয়ামী লীগের কোন এমপি নাই। বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ রশিদ ভাই বন্দরের এমপি।

পরদিন পত্র-পত্রিকায় ভিপি বাদলের এমন বক্তব্য সম্বলিত সংবাদ প্রকাশ হয়। তার এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে চঁটে যান সেলিম ওসমান। ২ জুলাই খানপুর হাসপাতালের এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিপি বাদলকে উদ্দেশ্যে করে সাংসদ সেলিম ওসমান বলেন, সব জায়গায় মতলববাজী করবেন না তাহলে সোজা মতলবে পাঠিয়ে দেয়া হবে। আগে তো থাকতেন রেলস্টেশনের কোয়াটারে এখন ‘লেতা’ হইছেন। পত্রিকায় দেখলাম এক নেতা বন্দরে গিয়ে বললেন, সেলিম ওসমান বন্দরের এমপি না। বন্দরের উপজেলা চেয়ারম্যান বন্দরের এমপি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন থাকবে- এমপি সিট বদলায়া দিতে পারে, এটা কি করে সম্ভব? আমরা দেশটাকে স্বাধীন করেছি। আমরা মুক্তিযোদ্ধা। হাজার বার বলি- সেলিম ওসমানের থাবা বাঘের চেয়েও ভয়ঙ্কর।

ভিপি বাদলকে উদ্দেশ্যে করে তিনি আরও বলেন, আপনি কে যে আমার নির্বাচনী আসনে আরেকজনকে এমপি বানানোর। আমি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নির্বাচন করে এমপি হয়েছি। থাকতেন রেলস্টেশনের কোয়াটারে এখন এক সংসদ সদস্যর সাথে থেকে রাজনীতি করে বড় লেতা হইয়া গেছেন। বাদ দেন এ সব রাজনীতি। দেখি কোন ব্যক্তি আমাকে সংসদ সদস্য থেকে সড়িয়ে দেয়। উনি কে, যে আমাকে সংসদ সদস্য থেকে সড়িয়ে দিবে। উনাকে আবার মতলবে ফিরে যেতে হবে। উনি কত পয়সার মালিক হয়েছেন? সেলিম ওসমান দেখে নিবে। আপনি আওয়ামী লীগ করেন, আর যা- মনে করেন তাই।

এর আগে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়েছেন সিটি করপোরেশন মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভি ও সাংসদ শামীম ওসমান। নাসিক নির্বাচন থেকে শুরু করে হকার ইস্যু নিয়ে দু’জনের দ্বন্দ নারায়ণগঞ্জবাসী প্রকাশ্যে দেখতে পেয়েছেন। তাদের এই দ্বন্দ মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে খোঁদ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও। যদিও বর্তমান সময়ে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর এই দুই রাজনীতিককে কাদাঁ ছোড়াছুড়ির রাজনীতি করতে দেখা যায় না। কেউ কাউকে নিয়ে কোন বক্তব্যও দেন না। যার ফলে কিছুদিন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে শান্ত পরিবেশ বিরাজ করছিলো। তবে এবার নতুন করে সেলিম ওসমান ও ভিপি বাদলের দ্বন্দে ফের উত্তাপ ছড়াচ্ছে পুরো নারায়ণগঞ্জজুড়ে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় পার্টির এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে পূর্বের ন্যয় বর্তমানে সরগরম নারায়ণগঞ্জ। যা ভবিষ্যতের জন্য সুখকর বার্তা নয়।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ