আজ মঙ্গলবার, ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

‘প্রধানমন্ত্রীর চিন্তাই সঠিক ছিল’

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেছেন, করোনাকালে বস্ত্র ও শিল্প খাত নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন কথা বললেও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর চিন্তাই সঠিক ছিল। তিনি শিল্পখাতে রেকর্ড পরিমাণ প্রণোদনা দেওয়ায় এই খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং বেশ ভালো টিকে আছে। শুধু তাই নয় করোনার আগে খাতটি যে অবস্থানে ছিল, বর্তমানে তার চেয়ে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্তের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় বস্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ ১ (রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এসময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আব্দুর রউফ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম, এনডিসি, এস.এম.সেলিম রেজা (অতিরিক্ত সচিব), বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী জানান, বিশ্বব্যাপি চলমান করোনা ভাইরাস বিপর্যয়ের অভিঘাতে বস্ত্রখাতকে রক্ষায় অবদানের জন্য আগামী ৪ ডিসেম্বর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় কর্তৃক ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস’ ২০২১ উদযাপন উপলক্ষে ০৭(সাত)টি সংগঠনকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, সরকার বস্ত্রখাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল অংশীজনের সঙ্গে সমন্বয় করে বস্ত্র শিল্পকে স্থিতিশীল রাখার কার্যক্রম গ্রহণ ও দ্রুততম সময়ে সেবা প্রদান করে থাকে। নিবন্ধিত বস্ত্র শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের মাধ্যমে কমপ্লায়েন্স পর্যবেক্ষণ ও নিশ্চিতকরণে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে। বস্ত্র শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী বস্ত্র শিল্পের টেকসই অগ্রগতি নিশ্চিত করার মাধ্যমে অর্থনীতিতে গতি সঞ্চারের জন্য বস্ত্রখাত সংশ্লিষ্ট সকল উদ্যোগকে সমন্বিত করা এবং সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজন, উদ্যোক্তা, শ্রমিক, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতর/সংস্থার বহুমুখী কার্যক্রমে সমন্বয়ের লক্ষ্যে সরকার ২০১৯ সালে ৪ ডিসেম্বরকে ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতিতে বস্ত্রখাতের ভূমিকা অপরিসীম। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে তৈরি পোষাকখাত। দেশের রফতানি আয়ের সিংহভাগ অর্জিত হয় এ খাত থেকে। দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের একটি বড় অংশ আসে বস্ত্রখাত থেকে। তৈরি পোশাক শিল্পের ক্রম-উন্নয়ন বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমাজ জীবনে এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সাধন করেছে। বর্তমানে বস্ত্রখাতে প্রায় ৫০ লাখ শ্রমজীবী কর্মরত রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগ শ্রমজীবী নারী এবং এসব কর্মকাণ্ড নারীর ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

মন্ত্রী বলেন, সোনালী ঐতিহ্যে ফিরেছে ঢাকাই মসলিন, আবারও মাতাবে বিশ্ব। বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়িত একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৭০ বছর পূর্বে হারিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সোনালী ঐতিহ্য ও বিশ্ববিখ্যাত ঢাকাই মসলিন পুনরুদ্ধার করে হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশের সোনালী ঐতিহ্য মসলিনকে বড় পরিসরে বাণিজ্যিক রূপদানের জন্য ‘ঢাকাই মসলিন হাউজ’ প্রতিষ্ঠা করছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। ঢাকার অদুরে রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবতে জুটো-ফাইবার গ্লাস ইন্ড্রাস্ট্রিজের জমিতে এই ‘ঢাকাই মসলিন হাউজ’ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ কার্যক্রমের সুবাদে ঢাকাই মসলিনের বাণিজিক উৎপাদনের ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিপুল সংখ্যক লোকের বিশেষ করে নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে।
এবারের জাতীয় বস্ত্র দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বস্ত্রখাতের বিশ্বায়ন; বাংলাদেশের উন্নয়ন’। এ উপলক্ষে আগামী ৪ ডিসেম্বর ওসমানী মিলনায়তনে বস্ত্র দিবসের মূল অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপি এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মির্জা আজম এমপি বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ