আজ শনিবার, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আগামী সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম ১২ আসনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আওয়ামীলীগ-বিএনপি

প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আওয়ামীলীগ-বিএনপি

আগামী সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম ১২ আসনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আওয়ামীলীগ-বিএনপিপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় আওয়ামীলীগ-বিএনপি

ফারুকুর রহমান বিনজু, পটিয়া প্রতিনিধি : 

সারা দেশের ন্যায় একাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বেশ কিছুদিন আগেই নির্বাচনী প্রচারনার হাওয়া বইতে শুরু হয়েছে। চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার সতের ইউনিয়ন সহ এক পৌরসভায় মোট ভোটার ২৮৩৮৯৪  তম্মধ্যে পুরুষ ১৪৮৬০৫ নারী ১৩৫২৮৯ হালনাগাদ কাজ চলছে এ সংখ্যা বাড়তে পারে বলে নির্বাচন কমিশনার সুত্রে জানা যায়। এই নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম ১২ আসন (পটিয়া) আগামী সাংসদ নির্বাচন বছর খানেক বাকী থাকতেই প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপি সহ অন্যান্য দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে।তবে দলের মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে লবিং চালিয়ে যাচ্ছে। তারা রাজনৈতিক, সামাজিক, সভা-সেমিনার ও ব্যাপক গণসংযোগ সহ নানান ধরনের অনুষ্ঠাণের নামে মূলতই নির্বাচনী প্রচারনায় চালাচ্ছে। ভোটাররা সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে অফিস-আদালত ,ব্যাবসা-বানিজ্য, হাটে- মাঠে, সর্বত্র তুমুল আলোচনার ঝড় বইছে।

ব্যানার, ফের্ষ্টুন, পোষ্টার তেমন চোখে না পড়লেও তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যাম ফেইজবুক ও টুইটারেবেশ প্রচারণার গুরুত্ব পাচ্ছে। ফেইজবুক ও টুইটার স্ট্যাটাসের মাধ্যমে জানান দিচ্ছেআসন্ন আগামী নির্বাচনের উৎসবের আমেজ।আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই মাঠে প্রকাশ্যে থাকলেও বেশ কৌশলে মাঠে সক্রিয় রয়েছে বিএনপি। আগামী নির্বাচনে নৌকার প্রতীকের জয়ের ধারাকে অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা। মনোনীয়ন ঘিরে অভ্যান্তরীণ দলীয় অন্তকোন্দলে ঘর শত্রু বিভীষণ হতে পারে আওয়ামীলীগের। তেমনি বিএনপি টানা দু-দুবার নির্বাচনে হারানো (হাতছাড়া) আসনটি পুর্ণরুদ্ধার করতে ভোটের লড়াইয়ে মরিয়া।

মাননীয় সাংসদের প্রেস সচিব রবিউল আলম ছোটন জানান, ইতোমধ্যে আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় ১৫১ জনের মধ্যে আছেন ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান এমপি ও পরিকল্পনা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য সামশুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, আমি বিগত নয় বছওে (টানা দুই মেয়াদে) পটিয়ায় এক হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে আরও ৩শ কোটি টাকার উন্ন্ধসঢ়;য়নের কাজ চলমান রয়েছে।আমার প্রানের পটিয়াকে সারা দেশের উন্নয়নে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছি। আমি জনগনের সেবক হয়ে আতœপ্রকাশ করার পর থেকে পটিয়াবাসীকে এক মূর্হূতের জন্যও ছেড়ে যায়নি। আমি এলাকায় অনেক উন্নয়ণ কাজ করেছি ।সুষ্টু নির্বাচনে পটিয়াবাসী অবশ্যই আমার কাজের মুল্যায়ন করবে। দলীয় মনোনয়ন প্রত্যার্শীদের প্রতিযোগীতা থাকতে পারে। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় আওয়ামীলীগ তার নেতৃত্বে প্রতিশ্রদ্ধা ও আতœবিশ^াসশীল রয়েছে। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে তেমন কোন্দল থাকার আবশ্যর্কতা নেই। তার ধারণা নির্বাচনকে সামনে ঘিরে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। তাই সব বাধা-বিঘœ-দ্ব›দ্ধ ও প্রতিবন্ধর্কতাকে উর্দ্ধে রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হইবে। নেত্রী আমার উপর পূর্ণ আতœবিশ^াস রাখলে হ্যাটট্রিক বিজয় উপহার দেবো বলে তিনি জানান।

মনোনয়ন প্রত্যাশী আরেক নেতা-আওয়ামীলীগ যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সপ¥াদক বদিউল আলম জানিয়েছেন দীর্ঘদিন ধরে পটিয়ায় অপরাজনীতি চলছে। বর্তমানে নেতৃত্ব শূন্যতা বিরাজ করছে।তাই পটিয়াবাসী আমাকে এমপি হিসেবে দেখতে চাই। দল যদি আমাকে চায় নৌকা প্রতীকের জন্য যেকোন চ্যালেঞ্জের প্রস্তুত আছি। আমি নির্বাচিত হলে এ পটিয়াকে ডিজিটাল জয়ের রুপান্তর করব।তবে বিকল্প নেতৃত্ব গড়ে তুলতে কিছু ভাববেন দলীয় নেত্রী।নেত্রীর সিদ্ধান্ত আমি মাথা পেতে নেব। আমি মনোনয়ন পেলে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ সালে এখানে বিজয়ী হয় ধানের শীষ। যোগ্যপ্রাথী পেলে আসনটি পুর্ণরায় জিতে নেওয়া যাবে বলে মনে করেন বিএনপি।

মনোনয়ন ঘিরে দলীয় অন্তকোন্দল নিয়ে আওয়ামীলীগের চেয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন বিএনপি।১৯৯৬ ও ২০০১ সালের টানা দুই মেয়াদে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন সাবেক এমপি গাজী মুহাম্মদ শাহজাহান জুয়েল। গত ৩ মে পটিয়া উপজেলার ইন্দ্রপোল এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ জেলা বিএনপির কর্মী সম্মেলনে অনাকাঙ্খিত ঘটনায় দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায়বিশেষ তদন্ত কমিটির তদন্তের সাপেক্ষে/সাবেক এমপি ও দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক গাজী মো: শাহজাহান জুয়েলকে দল থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেয়। পরে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় দলীয় হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের নির্দেশে জুয়েলের অব্যাহতি আদেশ প্রত্যাহার করে নেয় বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়।

তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে ঘিরে দক্ষিণ জেলার বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত করে নেতাকর্মীদের নিয়ে কাঁদে কাঁদ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। পটিয়ায় উন্নায়ন কর্মকান্ড যা হয়েছে তা বিএমপির আমলেই। নেত্রী যদি আমার উপর আতœশীল রেখে আমাকে মনোনয়ন দিলেই পটিয়ার জনগন আমাকে পূর্ণরায় বিপুল ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে আমি আশাবাদী।

মননোয়ন প্রত্যাশী আরেক নেতা- চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইদ্রিস মিয়া বলেন, দূর্র্দিনের নেতা কর্মীদের পাশে থেকে তাদের নিয়ে মাঠে-ময়দানে ছিলাম। ছাত্রজীবন থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছি। দলকে সু-সংগঠিত করতে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে কাজ করে  যাচ্ছি। এদিকে আমি দলের সদস্য ফরম সংগ্রহের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তিনি দলের সদস্য সংগ্রহের কর্মসূচিতে মনোনয়ন চাওয়ার ঘোঘনা দেন। দল থেকে মনোনয়ন পেলে নিশ্চিত বিজয় উপহার দেবো।

আরেক নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী- চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা বিএনপির সহসভাপতি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাসের পরিচালক ও চাউল ব্যবসায়ী সভাপতি এনামুল হক এনাম বলেন , আমি মনে করি, দলীয় নেত্রী ত্যাগের মূল্যায়ন করবেন।আর যোগ্যপ্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ে কঠোর ভুমিকা নিয়ে যোগ্যনেতা চুড়ান্ত করবেন। বিএনপি অতীতে যে মারাত্বক ভুল করেছে বলেই , পটিয়ায় নিশ্চিত আসনটি হাতছাড়া হযেছে আমাদের।এবার প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ে অতীতের মত আর ভুল করবেন না বিএনপি নেত্রী। বিগত আট বছরে মামলা-হামলা, জেল সামলে গুলি বিদ্ধ হয়েও পিছপা হয়নি।বর্তমানে আমি নেতাকর্মীদের পাশে রয়েছি। তিনি আরো বলেন, বহিস্কৃত কোন নেতাকে পুর্নরায় মনোনয়ন দেওয়া হলে ভোটের বিরুপ প্রভাব পড়তে পারে বলে  মনে করেন তিনি।নেত্রীর সিন্ধান্ত আমি মাথা পেতে নেবে। তবে দেশ নেত্রীর আমার উপর পূর্ণআতœাবিশ^াস থাকলে , আমি মনোনয়ন পেলে নিশ্চিত ধানের শীর্ষের হারানো আসনটি পুর্ণরুদ্ধার করতেই জয়ের ধারাকে অব্যাহত রাখব।

সম্বাব্য প্রার্থীদের মধ্যেচট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলারজাতীয় পার্টির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র সামশুল আলম মাষ্টার বলেন, ১৯৯৬ সালে নির্বাচন করে ৪৬ হাজার ভোট পেয়ের্ছি। এখন জনসর্মথন আরও বেড়েছে তাই মনোনয়ন চাইব। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কাছে দুই জনের নাম পাঠানো হযেছে। তম্মধ্যে সাবেক সংসদসদস্য সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আরেক জন শামশুল আলম মাষ্টার বলে জানান।

তুখোড় রাজনীতিবিদ বিশিষ্ট সমাজসেক ও ব্যবসায়ী মো: ইয়াকুব আলী ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে ১৮ দলীয় জোটের পক্ষ হতে এলডিপি’র মনোনয়ন নিয়ে প্রতিদ্বন্ধীতামূলক অবস্থানে ছিলেন। হঠাৎ দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ালেও পটিয়াবাসী তাকে আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে পাওয়ার প্রত্যশা করেন।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ