আজ শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পুলিশের নজরদারীতে তারা

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

ফতুল্লার পশ্চিম তল্লায় বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় একাধিক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে কোন আসামীর নাম নেই। তদন্তে যারা দোষী প্রমাণিত হবে তারাই হবে এ মামলার আসামী। পুলিশের সূত্র জানায়, দোষীদের গ্রেপ্তারের জন্য প্রস্তুত রয়েছে তারা। এদিকে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, সন্দেহভাজনরা নজরদারিতে রাখা রয়েছে।

শুক্রবার পশ্চিম তল্লার ওই মসজিদে বিস্ফোরণের পর জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, তিতাস, ডিপিডিসি, সিটি কর্পোরেশন এর আলাদা আলাদা ৫টি তদন্ত কমিটি হয়েছে। ইতিমধ্যে তিতাসের তদন্ত শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিটির প্রধান আব্দুল ওহাব তালুকদার। বুধবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এসে তিনি বলেন, মসজিদের উত্তর পাশের একটি পাইপে ৬ টি লিকেজ পাওয়া গেছে।

তিনি আরো জানান, মসজিদে দুইটি বিদ্যুৎ সংযোগ ছিলো এর মধ্যে একটি অবৈধ সংযোগ। ঘটনার দিন কেউ একজন বিদ্যুতের স্ইুট চেপে ধরেন এতে স্পার্ক হয়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে ফায়ার সার্ভিসের একটি সূত্র জানিয়েছে, বৈদ্যুতিক স্পার্ক হলেও গ্যাসের লিকেজ থেকেই দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা বেশী। এর আগে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান এডিএম খাদিজা তাহেরা ববি জানিয়েছিলেন, তাদের তদন্ত রিপোর্ট বৃহস্পতিবারের মধ্যে পেশ করা হবে।

গতকাল জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন বলেছেন, যারা দায়ী হোক কোন ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, সমস্ত মসজিদে চিঠি দিয়ে কোন ঝুঁকিপূর্ণ কোন সংযোগ থাকলে সে ব্যাপারে সতর্ক হতে বলেছেন।

৪ সেপ্টেম্বর পশ্চিম তল্লার ওই মসজিদে এশা’র নামাজ এর ফরজ শেষে সুন্নাত ও বেতের নামাজ আদায়কালে বিকট শব্দের পর বিদ্যুত চলে যায়। সাথে সাথে অন্ধকার ভেদ করে মসজিদের ভেতর থেকে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার-কান্নাকাটি শুরু হয়। এলাকাবাসী জানান, অন্ধকার থাকায় আর রাস্তায় পানি থাকায় তারা মসজিদের ভেতর প্রবেশ করেনি। তাদের ধারণা ছিলো, রাস্তায় জলাবদ্ধতা থাকায় বিদ্যুতায়িত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যে কারনে তারা প্রথমদিকে দ্বগ্ধ মুসুল্লিদের সহযোগীতায় এগিয়ে আসেননি। পরে ফায়ার সার্ভিস এর টিম তাদের উদ্ধার করে, এসময় স্থানীয়রাও এগিয়ে আসে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উদ্ধার হওয়া মুসুল্লিদের শরীর ছিলো পোড়া। কেউ কেউ দাহ থেকে বাঁচতে মসজিদের সামনে রাস্তায় থাকা ডাইয়িং ও বাসা-বাড়ির বর্জ্য মিম্রিত পানিতে গড়াগড়ি করেন। এ সময়ে সবাই চিৎকার করছিলেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

পুলিশের বিভিন্ন সূত্র জানায়, ঘটনার সাথে জড়িতদের মোটামুটি চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেশ হলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেছেন, কারও না কারও অবহেলায় এ ভয়াবহ ও দুঃখজনক দুর্ঘটনা ঘটেছে। যারা এর সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখানে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। তিনি আরও জানান, সন্দেহভাজনরা পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ