আজ শুক্রবার, ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পুলিশ,র‌্যাব,ডিবি সহায়তায়, নাওড়া গ্রামে পুজাঁ উদযাপন করলো,নাঃঞ্জের শীর্ষস্থানীয় নেতারা, আতংকের জট রইলনা পুজাঁ পালনে

 

বিশেষ প্রতিনিধি ঃ  নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার নাওড়া এলাকায় শারদীয় দূর্গা পুজাকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েক দিন ধরে কয়েকটি গ্রামে থম থমে অবস্থা বিরাজ করছে। স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল নাওড়া এলাকার ২টি মন্ডব প্রধানদের ও তাদের পরিবারের লোকজনদেরকে নির্যাতনসহ মন্ডবের প্রতিমা ত্রিপল দিয়ে ডেকে দেয়। নিরোপায় শ্রী বিধান কৃঞ্চ রায় সার্বজনীন দূর্গোৎসব পালনে প্রশাসনিক সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, প্রশাসনের একাধিক দপ্তরসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যের বরাবর নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেন। উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকায় র‌্যাব-১১, রূপগঞ্জ থানা পুলিশ, নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের নিবির নিরাপত্তায় সনাতন ধর্মবলম্বীদের উৎসব শারদীয় দূর্গা পুজা পালন করেছেন। পুজা পালনে নানা ভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের স্থানীয় ভূখেকোরা নাওড়া এলাকায় হামলা, ভাংচুর চালিয়ে ও হুমকির মুখে রেখে তাদের উৎসব পালন পন্ড করতে পায়তারা অব্যাহত রেখেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, এলাকার ভূখেকো রফিকুল ইসলাম রফিক ওরফে আন্ডা রফিককে প্রধান অতিথি না করায় নাওড়া এলাকার ২টি পুজাঁ মন্ডবে কোন প্রকার অনুষ্ঠান হবেনা বলে সাফ ঘোষণা দেন। তার পর থেকে ভূখেকো বাহিনী এলাকায় অস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মন্ডব প্রধানদের বাড়িতে বাড়িতে মহড়া দিয়ে হুমকির মুখে রাখে। এ উৎসব পালন করলে চরম খেশারত দিতে হবে বলে তার লোকজন ভয়ভীতি দেখান। সূত্র আরো জানান, আন্ডা রফিক বাহিনীর লোকজন নাওড়া এলাকায় সন্ত্রাসের রাজ্য কায়েম করছেন। এ এলাকায় তার ও তার বাহিনীর লোকজনের কথা ও নির্দেশ অমান্যকারীর উপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়াগ।

শুক্রবার বিকালে উপজেলার নাওড়া পূর্বপাড়া রায়বাড়ি সার্বজনীন পুজা উদযাপন অনুষ্ঠানে শ্রী বিধান কৃঞ্চ রায় এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ-১, রূপগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক)। রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুল হাসান তুহিনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসনাত শহিদ বাদল, নারায়ণগঞ্জ বার একাডেমির সভাপতি এ্যাড. আনিছুর রহমান দিপু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে গাজী এমপি বলেন, আমি ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশের গোলাম ছিলাম। অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশে সকল ধর্মের লোকজন র্নিবিঘেœ তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করবে। নাওড়া এলাকাকে যারা দ্বিধাবিভক্ত করার পায়তারা করছে তাদের মুখোস জাতীর সামনে তুলে ধরতে উপস্থিত মিডিয়ার লোকজননের প্রতি আহব্বান জানান। প্রশাসন নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন করছে। আমি আপনাদের পাশে আছি। কোন সন্ত্রাসী, ভূখেকো ও সন্ত্রাসী বাহিনী আপনাদের কিছুই করতে পারবেনা। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের পাশে আছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, অসম্প্রদায়ীক দেশের স্বপ্ন দেখে ছিলেন আমাদের জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু আজ রূপগঞ্জের নাওড়া এলাকায় পুজা মন্ডবে এসে দেখলাম নিযুম পল্লীতে ও থম থমে অবস্থা বিরাজ করছে।সাম্প্রদায়ীক উষ্কানী যারা দিচ্ছেন এ এলাকায় তারা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী হতে পারেন না। আমরাও তাদের দেখে নিব। গাজী এমপি এ দেশের মুক্তিযোদ্ধের বীর সেনা। তিনিই পারবেন যে কোন অপশক্তির বিরোদ্ধে রোখে দাঁড়াতে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসনাত শহিদ বাদল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অতন্ত্রী প্রহরী হিসেবে গাজী এমপির সাথে পুজা মন্ডবগুলো পাহাড়া দিব। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। গাজী আছে, গাজী থাকবে। গাজীই পারবে রূপগঞ্জের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. খোকন সাহা বলেন, আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের উপর হামলা করে কেউ পাড় পাবে না। কিন্তু নাওড়া গ্রামে এসে দেখতে পেলাম এখানকার রাস্তায় মানুষের চলাচল নেই। দোকান পাট বন্ধ। এখানকার লোকজন না কি পুজা মন্ডবে আসতে পারবে না। পুজার পরেও আপনারা সবাই এক সাথে থাকবেন।  আপনাদের উপর কেউ বা কোন গোষ্ঠী হামলা, নির্যাতন চালালে আমরা গাজী এমপিকে সাথে নিয়ে আপনাদের পাশে দাঁড়াব সেই অপশক্তির বিরোদ্ধে।

এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা, কায়েতপাড়া (ইউপি) আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব জায়েদ আলী, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য শ্রীমতি শীলা রানী পাল, যুব মহিলা লীগের সভাপতি ফেরদৌসী আকতার রিয়া, সাধারণ সম্পাদক সেলিনা আকতার রিতা প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ২০১৬ ইং বছর উপজেলার নাওড়া এলাকায় স্থানীয় ভূখেকো আন্ডা রফিক ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী রায়বাড়ি পুজা মন্ডবে এসে হামলা করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে ও প্রতিমা ভাংচুর করে পুজা বন্ধ করে দেয়। প্রশাসনের লোকজন বলেন, নাওড়া এলাকায় কোন প্রকার হামলা, ভাংচুর করতে দেয়া হবে না।  আমরা এখানে কোন প্রকার অইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে দিবনা।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ