আজ মঙ্গলবার, ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পরিবারতন্ত্রের গেড়াকলে আ’লীগের কর্মীরা!

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে তৈরী হওয়া মেরুকরণের কারনে ক্রমেই দূর্বল হয়ে মনোবল হারাচ্ছে আওয়ামী লীগের কর্মীরা-এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। দীর্ঘদিনের নারায়ণঞ্জের ওসমান পরিবার ও চুনকা পরিবারের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব যেনো আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মীদের গেড়াকলে ফেলেছে এমনটাই অভিযোগ করেছেন কর্মীরা।

ঘটনাসূত্রে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে উত্তর মেরু-দক্ষিণ মেরু বিভাজনের সৃষ্টি প্রয়াত দুই নেতা আলী আহমদ চুনকা ও একেএম সামসুজ্জোহার সময় থেকে। বংশ পরম্পরায় সেই বিরোধ লালন করে এসেছেন ডা: সেলিনা হায়াত আইভী ও একেএম শামীম ওসমান। এই বিরোধের সূত্র ধরে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগে গড়ে উঠেছে দুইটি বলয়। শামীম ওসমান নিয়ন্ত্রিত উত্তর মেরু ও আইভীর নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের নিয়ে গড়ে উঠেছে দক্ষিণ মেরু।

আইভীর দক্ষিণ মেরুর তুলনায় শক্তিশালী অবস্থানে ছিলো শামীম ওসমানের উত্তর মেরু। উত্তর মেরুতে একই পরিবার থেকে দুই ভাই (নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সেলিম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে শামীম ওসমান) সংসদ সদস্য হওয়ায় তাদের এই শক্তি দক্ষিণ মেরুর তুলনায় ছিলো অনেক বেশী।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগে সহ সহযোগী অঙ্গ-সংগঠনের প্রতিটি কমিটিতে রয়েছে আলাদা আলাদা দুটি বলয়। যার একটি উত্তর মেরুর ওসমান পরিবার বলয়, অন্যটি চুনকা পরিবারে দক্ষিন মেরুর বলয়।

সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর ঘনিষ্ট জন হলেও সাধারণ সম্পাদক  আবু হাসনাত শহীদ মো: বাদল শামীম ওসমানের বন্ধু। যার লবিং ধরেই ছাত্র রাজনীতি থেকে আওয়ামী লীগের গুরু দায়িত্ব পেয়েছেন ভিপি বাদল।

অন্যদিকে, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কখন কোন পক্ষ্যে থাকেন সেটা স্বয়ং তিনি নিজেও জানেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে কিছুটা দুরুত্ব থাকলেও সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা শামীম ওসমানের বন্ধু এটা নারায়ণগঞ্জের সকল মানুষই জানেন। অন্যদিকে যুবলীগ ঘিরেও রয়েছে পরিবারতন্ত্র রাজনীতি। যেখানে সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন ভূইয়া শামীম পন্থী হলেও সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা উজ্জ্বল আইভীর আপন ছোট ভাই।

তবে, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগকে ওসমান বলয়ই দখল করেছেন বলে জানা যায়। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন যুবলীগ নেতা সারোয়ার হোসেনের বাগিনা হিসাবেই রাজনীতের সঙ্গে জড়িত। আর সাধারণ সম্পাদক নাসিক ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান। অন্যদিকে, ছাত্রলীগের পুরোপুরি নিজেদের কন্ট্রোলে রেখেছেন ওসমান পরিবার।

এদিকে, এই দুই মেরুর দ্বন্দ্ব এখন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে নতুন প্রজন্মের উপর প্রভাব ফেলছে। পরিবারতন্ত্র রাজনীতিতে গেড়াকলে পড়তে হয়েছে সাধারণ কর্মীদের। নিজেদের অধিকার আদায়, কর্মসূচি পালনেও এক না হয়ে আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ