আজ শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নিষ্ক্রিয় স্বেচ্ছাসেবক দল

বিশেষ প্রতিবেদক:

নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের ভেতর সবচেয়ে নিষ্ক্রিয় স্বেচ্ছাসেবক দল। সাংগঠনিক ও মাঠের রাজনীতি কোনটাইতেই দেখা যায়না বড় কোন ভূমিকা। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ব্যক্তিগত উদ্যোগে মাঝে মাঝে সক্রিয় হলেও অধিকাংশ সময়েই থাকেন নিষ্ক্রিয়। শেষবার কেন্দ্রীয় নেতার মৃত্যুতে সিদ্ধিরগঞ্জে এক শোক সভার আয়োজন করেছেন তারা। কিন্তু পুরো বছর জুড়ে তাদের কার্যক্রম জানতে চাইলে তা কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ পাওয়া যাবে বলছেন নেতাকর্মীরা।

২০ আগস্ট সারাদেশে পালিত হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। নারায়ণগঞ্জের নেতারা জানিয়েছেন ভার্চুয়াল মিটিং থাকায় তাদের অনুষ্ঠান রোববার পালন করা হবে। কিন্তু সারাবছর কোন প্রকার সাংগঠনিক কার্যক্রম না করে শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। শুধুমাত্র কুয়োর ব্যাঙ হয়ে পদ আগলে রাখা ছাড়া যেন আর কোন কাজই তাদের দেয়া হয়নি।

নাম হিসেবে স্বেচ্ছাসেবক দলের পদবী বহন করেন দলের নেতাকর্মীরা। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবায় তাদের কে কবে দেখেছে সেটি বোধহয় ইতিহাসের পাতা খোঁজা ব্যতিত পাওয়া সম্ভব নয়। করোনার প্রদুর্ভাব যখন তুঙ্গে তখন স্বেচ্ছাসেবায় দেখা মিলেছিলো নারায়ণগঞ্জের বেশকিছু বাম সংগঠনের নেতাকর্মীদের। একই ভাবে স্বেচ্ছাসেবায় নিয়োজিত রয়েছে নাসিকের ১২ ও ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর যারা উভয়েই বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত। অথচ স্বেচ্ছাসেবক নেতার পদধারীরা তার ধারে কাছেও নেই। তবে কেন এই পদ দখল করে নিজেদের নেতাদাবী করেন তা প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।

জানা যায়, ২০১৮ সালের ৭ জুন নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে সভাপতি হিসেবে আবুল কাউসার আশা ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সাখাওয়াত ইসলাম রানা দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এ কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে ছিলেন জেলার আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক চৌধুরী স্থান পেয়েছিলেন। এই কমিটি ঘোষণার এক বছরের মধ্যেই তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে এসেছেন।

২০১৯ সালের ৭ আগস্ট ১৬১ বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শফিউল বারী বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল। এরপর ৮ আগস্ট গণমাধ্যমে এ তালিকা প্রদান করা হয়। কমিটিতে সভাপতি করা হয় আবুল কাউসার আশা, সাধারণ সম্পাদক করা হয় সাখাওয়াত হোসেন রানাকে ও সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয় অহিদুল ইসলাম ছক্কু। কমিটিতে ১৬ জন সহ সভাপতি, ৭ জন যুগ্ম সম্পাদক, ১৪ জন সহ সম্পাদক, ৮ জন সহ সাংগঠনিক সম্পাদক, ৭৫ জন বিভিন্ন সম্পাদক ও সহ সম্পাদক এবং বাকি ৩৬ জনকে সদস্য করা হয়েছে।

এদিকে ২০১৮ সালের ২৫ জুন কেন্দ্রীয় কমিটি নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আংশিক কমিটির নাম ঘোষণা করেন। আর এতে সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, সেক্রেটারি পদে মাহাবুব রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন দেওয়ানকে আসীন করা হয়। এরপর ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ১৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি কমিটির অনুমোদন করেন দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি শফিউল বারী বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল।

যে কমিটিতে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক ছাড়াও কমিটিতে ১৬ জন সহ-সভাপতি, সাতজন যুগ্ম-সম্পাদক, ১৬ জন সহ-সম্পাদক, নয়জন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, ৭৬ জন সম্পাদক ও সহ-সম্পাদকসহ ৪৪ জনকে সদস্য করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশাল এই কমিটি থাকা স্বত্বেও দলীয় কার্যক্রমে বরাবরই থাকেন নিষ্ক্রিয়। দলের ভাবমুর্তি ফেরাতে অবিলম্বে নেতাদের জবাবদিহির মুখোমুখী আনা প্রয়োজন। অন্যথায় শুধুমাত্র কমিটিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে দলীয় কার্যক্রম। সক্রিয় নেতাকর্মীরা বঞ্চিত হবেন সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ