আজ শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নারায়ণগঞ্জ বিএনপির ভন্ডামী! বিতর্কে মামুন রোজেল রুহুল

নিজেস্ব প্রতিবেদক: চরম বিতর্কে বিঁধছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সেক্রেটারী মামুন মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান রোজেল ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন সিকদার। নানা ইস্যুতে এসব নেতারা বেশ কড়া বক্তব্য আর সাংগঠনিক ইস্যুতে বেশ দৃঢ় অবস্থান রাখলেও বাস্তবে তার কোন প্রতিফলন ঘটছে না। ফলে এসব নেতারা বেশ বিতর্কের সম্মুখীন হচ্ছেন।

গত ১৯ অক্টোবর আওয়ামী লীগের এক সভায় জেলা বিএনপির সহ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস যিনি ফতুল্লা কমিটির সেক্রেটারী ও সদর উপজেলার চেয়ারম্যান। ওই সভায় আজাদ বিশ্বাস বলেন, ‘আমার নেতা হলেন শামীম ওসমান।’ এছাড়া আজাদ বিশ্বাসের কণ্ঠে আওয়ামী লীগেরও প্রশংসা শোনা গেছে।

এসব ঘটনার পর রুহুল আমিন, রোজেল সহ অনেককেই বেশ কড়া ভাষায় বক্তব্য রেখেছেন। কেউ বা আবার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাদের একজন ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব। তিনি এখনো তার অবস্থান অনঢ় আছেন। কিন্তু অপর নেতারা বার বার ভোল পাল্টাচ্ছেন। ওই ঘটনার পর জেলার সেক্রেটারী মামুন মাহমুদ জানান তিনি আজাদ বিশ্বাসকে শোকজ করেছেন।

তবে বৃহস্পতিবার ২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের বালুর মাঠ এলাকায় জেলা বিএনপির একটি বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস।

এখানে উল্লেখ্য গত ১৯ অক্টোবর ফতুল্লার দেলপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে আয়োজিত সমাবেশে উপস্থিত হয়ে আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস তার বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘আমার নেতা শামীম ওসমান। আমি বিএনপি নেতা হয়ে শামীম ওসমানকে স্যালুট জানাই।’

বৃহস্পতিবার আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস যখন বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশের সভাপতিত্ব করছিলেন তখন বিএনপির নেতাকর্মীরাই বলে ওঠেন আজাদ বিশ্বাস তো আওয়ামীলীগের রাজনীতি। সে তো ক’ দিন আগেও বললো আওয়ামীলীগের এমপি শামীম ওসমান তার নেতা। সে হিসেবে আজাদ বিশ্বাস তো শামীম ওসমানের কর্মী। আর শামীম ওসমানের কর্মী বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশের সভাপতিত্ব করলেন! তবে কর্মীদের ওই বিষয়ে জেলা বিএনপির কজন নেতার দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তার কোন মন্তব্য করতে রাজি হন।

পুরো বিক্ষোভ জুড়ে এ কথাটিই বার বার উচ্চারিত হতে থাকে বিএনপি নেতাকর্মীদের কণ্ঠে।

এছাড়াও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রহিমা শরীফ মায়া। তিনি গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় মাসদাইরের এক কর্মী সভায় আজাদ বিশ্বাসের সামনেই বলেছিলেন, এই আজাদ বিশ্বাস শামীম ওসমানের দালাল। সে আওয়ামীলীগের দালাল।’

সম্প্রতি সিদ্ধিরগঞ্জ শিমরাইল এলাকায় জেলা বিএনপির একটি সভায় আজাদ বিশ্বাসকে দেখে জেলা বিএনপির তিনজন নেতা সভা বয়কট করেন। ওই সভায় আজাদ বিশ্বাসকে শামীম ওসমানের দালাল বলেও ঘোষণা দিয়ে শ্লোগান দেন। যদিও জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহমুদ জানিয়েছিলেন আজাদ বিশ্বাসকে শোকজ করা হয়েছে। তবে শোকজ করা হলেও কেন আজাদ বিশ্বাসকে নিয়েই জেলা বিএনপির সমাবেশ? আবার কেনই বা আজাদ বিশ্বাসকে নিয়ে সভা? এমন প্রশ্ন নেতাকর্মীদের।

জানা গেছে, কক্সবাজারের উখিয়ায় সফরে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি। ২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের বালুর মাঠ এলাকায় এ বিক্ষোভ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। তবে এর আগে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হলেও পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারনে সেখানে সমাবেশটি করতে পারেনি। পরে বাধ্য হয়ে প্রেস ক্লাবের পিছনে বালুর মাঠে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান রোজেলের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহামুদ ও বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ