আজ বৃহস্পতিবার, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নগরীতে যানজটের মূল কারণ মানুষ, অবৈধ স্ট্যান্ড ও রিক্সা

যোগাযোগ প্রতিবেদক:

হাজারো গাড়ী আর মানুষের পদচারনায় মুখর ব্যস্ত নগরী নারায়ণগঞ্জ। শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়ায় প্রতিদিনই থাকে তীব্র যানযটে স্থবির। যার কারনে যানজট আগের থেকে আরও বেশী বলে মনে করছেন নগরবাসী। নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের নিতাইগঞ্জ থেকে চাষাড়া পর্যন্ত দুই কিলোমিটার অংশে প্রতিদিন ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যানজটে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নগরীর বাসিন্দারা। এর কারণ হিসেবে আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যাকে দোষারপ করছে অনেকে। নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের মন্ডলপাড়া থেকে চাষাড়া এবিসি স্কুল পর্যন্ত ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে যাত্রীবাহী বিভিন্ন যানবাহন।

অনেকের মতে, সোনালী ব্যাংক, খাজা সুপার মার্কেট ও রাইফেল ক্লাবের পাশে অবৈধ লেগুনা, সিএনজি স্ট্যান্ডের কারনেই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আবার অনেকের মতে, যানজটের প্রধান কারণ রিক্সা। তার কারণ হিসেবে তারা মনে করেন, শহরে বি.বি রোডে বড় গাড়ী আর রিক্সার রাস্তা আলাদা হলেও একটু তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্য রিক্সাওয়ালারা বড় গাড়ীর রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। যার কারনে পাচঁ মিনিটের রাস্তা পাড়ি দিতে অনেকের সময় লাগেছে ৩০মিনিট। ঘন্টার পর ঘন্টা এক জায়গায়ই থাকছে গাড়ী। তবে অন্যন্য সব গাড়ীর থেকে সবচেয়ে বেশী লক্ষ করা যায় রিক্সা। ফলে চরম দূর্ভোগে সাধারণ মানুষ। তাছাড়া নিষেধ থাকলেও প্রতিদিন অসংখ্যা ব্যাটারিচালিত রিক্সা ঢুকছে। যার ফলে যানজট আরও তীব্র হচ্ছে।

সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নগরীতে গাড়ীর আনাগনা পূর্বের চেয়েও বেশি। তবে রিক্সার পরিমাণ অনেক বেশী। বি.বি রোডে গাড়ী আর রিক্সার রাস্তা আলাদা থাকলেও রিক্সাওয়ালারা তাদের রাস্তায় না চলে চলছে বড় গাড়ীর রাস্তায়। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায়ও দেখা গেছে নানান অসঙ্গতি।

এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রাইভেটকার চালক হাসনাত রাশিদ জানান, প্রত্যেকদিন তো শহরে একি চিত্র থাকে। তবে, পূর্বের থেকে যানযট আরও বেশী বলে আমার মনে হয়। কিন্তু তাই বলে ঢাকার মতো যানযট তো আমরা আশা করিনা। অনেক অভিজ্ঞ জনপ্রতিনিধি থাকা স্বত্তে¡ও শহরে রাস্তার পাশে কি কারনে অবৈধ স্ট্যান্ড থাকে। এইসব স্ট্যান্ড গুলোর দায়িত্বে কে থাকে? অতি শীঘ্রই এর একটি সমাধার করা দরকার। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ২নং রেল গেট থেকে চাষাড়া রাইফেল ক্লাব পর্যন্ত আসতে ২ মিনিট সর্বোচ্চ ৫ মিনিট লাগার কথা। সেখানে আধঘন্টারও বেশী হয়ে যায় কিন্তু যাওয়ার কোন খবর নেই।

রিক্সাওয়ালাদের জন্যই যানযটের সৃষ্টি হয় অভিযোগ করে বাস চালক সুলতান মাহমুদ জানান, বি.বি রোডে রিক্সার জন্য এক রাস্তা আর অন্য গাড়ীর জন্য আরেক রাস্তা। যে যার রাস্তা দিয়ে চলবে এটাই নিয়ম। কিন্তু নিয়মের তোয়াক্কা আর কে করে? রিক্সাওয়ালারা ইচ্ছেমতো আমাদের গাড়ীর লাইনে ঢুকে তীব্র যানযটের সৃষ্টি করছে। কিন্তু এইসব দেখার নেই কেউ। আমার মনে হয় এসব বিষয় গুলোর দিকে একটু দৃষ্টি দেয়া দরকার।

বাস চালকের অভিযোগ শিকার করে রিক্সাওয়ালা ইকবাল মিয়া জানান, কী করমু গাড়ী তো চালাইতে অইবো। রাস্তার ভিতর এত পরিমানে রিক্সা থাকে যে মানুষ হাটাচলাও করতে পারে না। আমরা বাধ্য হইয়া আমাগো রাস্তা ছাইড়া বাসওয়ালা গো রাস্তায় ঢুকি। তা না হইলে একজন যাত্রী পার করতেই এক ঘন্টা লাইগা যায়। আমাগোও তো চলতে হইবো।

এ বিষয়ে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর শরফুদ্দিন জানান, শহরের মধ্যে এ সম্যাগুলো সমাধান করতে হলে ২৮ জন ট্রাফিক পুলিশ প্রয়োজন। আমাদের বর্তমানে জনবল সংকট রয়েছে। তা না হলে কীভাবে অতি শীঘ্রই এসব সমস্যার সমাধান দিবো আমরা। তবে আশা করি পরবর্তীতে লোকবল বাড়ানো হলে এসব সমস্যার সমাধান করা হবে। এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা আরও শক্তিশালী হবে। আশা করি তখন যানজটও থাকবে না শহরে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ