আজ বুধবার, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দ্রুত চালু হচ্ছে বিজেএমসি’র বন্ধ মিল

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জ -১ ( রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক বলেছেন, বিজেএমসির বন্ধ মিলসমূহ দ্রুততম সময়ে ভাড়াভিত্তিক বা ইজারা (লীজ) পদ্ধতিতে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পুনঃচালুর বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে । ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞপ্তির আওতায় দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তা লীজ গ্রহণের সুযোগ পাবে। এক্ষেত্রে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) কে অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

বুধবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে মন্ত্রণালয়ের মাসিক সমন্বয় সভায় অন-লাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নান, অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম,এনডিসিসহ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর/সংস্থার প্রধানগণ যুক্ত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, পৃথিবী জুড়ে পাটের কদর ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটচাষীরা বর্তমানে কাঁচা পাটের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন। চলতি পাট মৌসুমে কাঁচা পাটের গড় দর ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০% বেশি। ফলে পাটচাষীরা এ মৌসুমে অধিক পরিমাণে পাট চাষে আগ্রহী হচ্ছে। এতে করে দেশের অর্থনীতিতে পাটখাতের অবদান আরো সুসংহত হবে বলে আশা করা যায়। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম নয়মাসে (জুলাই-মার্চ) পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৯৫৩.৫৭ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২২.৯৪ শতাংশ বেশি। আর তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১০.৬৪ শতাংশ বেশি।

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন , বেসকারি ব্যবস্থাপনায় পুন:চালুকৃত মিলে অবসায়নকৃত শ্রমিকেরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজের সুযোগ পাবে। একই সাথে এসব মিলে কর্মক্ষম ও দক্ষ শ্রমিকদের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সকল শ্রমিককে পর্যায়ক্রমে অবশ্যই পুনর্বাসন করা হবে। বেসরকারি পাটকলগুলোর উৎপাদনশীলতা ও ব্যবস্থাপনার কৌশলের কারণে দেশের অর্থনীতিতে পাটখাতের অবদান আরো বাড়বে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ।

তিনি বলেন, উৎপাদন বন্ধকৃত ২৫টি মিলের মধ্যে ৪টি মিলের (জাতীয়, খালিশপুর, দৌলতপুর ও কেএফডি) মিলের শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি আগস্ট ২০২০ মাসে পরিশোধ করা হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত ও অবসানকৃত ৩৪,৭৫৭ জন স্থায়ী শ্রমিকদের পাওনাদি ২.০০ লক্ষ টাকার উর্ধ্বে পাওনার ক্ষেত্রে অর্ধেক নগদে ও অর্ধেক তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ইস্যুর মাধ্যমে পরিশোধের সিদ্ধান্ত আছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২১টি মিলের সবগুলোতে নগদ অংশ পরিশোধের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ হতে এ পর্যন্ত ১,৭৬৯.৪১ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। অদ্যাবধি ৩১৭৫৭ জন শ্রমিকের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে ১৬৬২.১৭ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। যা বরাদ্দের তুলনায় প্রায় ৯৩.৯৪% । মামলা জনিত সমস্যা, অডিট আপত্তিজনিত সমস্যা, শ্রমিকদের নামের সাথে এনআইডির গরমিল, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের ব্যাংক হিসাব না থাকার কারণে কিছু সংখ্যক শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ বিলম্বিত হচ্ছে । এ সকল সমস্যা নিরসনকল্পে শ্রমিক ও মিল বা সংস্থা হতে মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে এবং শ্রমিকদের নামের গরমিল সংশোধন করে ও ব্যাংক হিসাব খোলা মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। সমস্যা নিরসন করে শ্রীঘ্রই নগদ অংশের শতভাগ পারিশোধের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। বাকী অর্ধেক সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র ইস্যু সার্ভার নির্ভর হওয়ায় বিষয়টি কিছুটা সময় সাপেক্ষ।

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলসমূহের বিরাজমান পরিস্থিত স্থায়ী সমাধানসহ পাটখাতে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি)-এর নিয়ন্ত্রণাধীন ২৫টি পাটকল গত বছর (২০২০ সাল) ১ জুলাই বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ