আজ বৃহস্পতিবার, ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রুমের দরজা বন্ধ করে মারতো- শিশু মাহি

দরজা বন্ধ করে মারতো

দরজা বন্ধ করে মারতো

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:
কারণে অকারণে বা সামান্য খুনসুটিতেই চলতো ভয়াবহ নির্যাতন। রুমের দরজা বন্ধ করে মারতো যাতে স্ত্রী বাঁচাতে না পারতো। শুধু গৃহকর্মী মাহিকেই নির্যাতন করতো না আতাউল্লাহ। তার স্ত্রীকেও মারধর করতো আতাউল্লাহ। এমনটাই জানালেন ফতুল্লার পুর্ব ইসদাইরে মধ্যযুগীয় বর্বতার শীকার এতিম শিশু গৃহ পরিচারিকা মাহি (৮)।
রবিবার (২২ জুলাই) ২২ ধারায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফতাবুজ্জামানের আদালতে শুক্রবারের ঘটনাসহ পুর্বের নির্যাতনের ঘটনা বর্ননা করেন মাহি। আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করার পর তাকে গাজীপুর শিশু পূর্নবাসন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের ঘটনা বর্ননা করতে গিয়ে মাহি জানায়, সামান্য খুনসুটি নিয়েই তাকে নির্যাতন করত আতাউল্লাহ। এমনকি মাঝে মাঝে রুমের দরজা আটকে মারত যাতে আতাউল্লাহর স্ত্রী উর্মি মাহিকে বাঁচাতে না পারে। এমনকি নিজের স্ত্রীকেও মারধর করতো আতাউল্লাহ।
তবে মারপিটে বাদ যেত না উর্মিও, সে নিজেও বিভিন্ন সময়ে মাহিকে মারধর করত কাজের জন্য। তবে পাষন্ড আতাউল্লাহ সর্বদাই অমানুষিক নির্যাতন চালাতো মাহির উপর। পিঠে নির্যাতনের দাগ আর হাতে গরম খুন্তির ছ্যাকা তার জলজ্যান্ত প্রমান।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ফতুল্লার পূর্ব ইসদাইর আনন্দনগর এলাকার শহীদুল্লাহর বাড়ির ভাড়াটিয়া আতাউল্লাহ খোকন ও উর্মি আক্তারের বাসায় ৩ মাস ধরে পিতৃ-মাতৃহীন শিশু মাহিকে গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজে নেয়। এরপর থেকে শিশুটি বাসায় প্রায় সময় কান্নাকাটি করত। শুক্রবার রাতে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন ওই দম্পতির বাসায় গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় খবর দেয়া হয়। পরে পুলিশ গিয়ে শিশুটির হাতে ও মুখে বর্বর নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পায়। তখন শিশুটিকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, তাকে কারনে অকারনে কাজে ভূল ধরে খুন্তি গরম করে হাতে ও শরীরে ছ্যাকা দিতো। কথায় কথায় মারধর করতো। ২০/২৫দিন আগে তার হাতে গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাকা দেয়ায় তার ডান হাতের চামড়া উঠে যায়। শুক্রবারও সেই ক্ষত হাতে ছ্যাকা দেয়া হয়।
শুক্রবার (২০ জুলাই) রাত ১২টায় মাহিকে আবারো নির্যাতন করে আতাউল্লাহ। সে সময় মাহির চিৎকার শুনে আশেপাশের প্রতিবেশীরা এসে দরজা ভেঙ্গে মাহিকে উদ্ধার করে। তবে মাহি অনাথ হওয়ায় অভিযোগ দায়ের করার মত কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় প্রতিবেশী সাংবাদিক মোঃ জাকির শনিবার বাদী হয়ে নির্যাতনের বিভিন্ন দিক উল্ল্যেখ করে ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ