আজ শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তুই বেটা ঘুষখোর

ভিনগ্রহ থেকেঃ

একজন মধ্য বয়স্ক মানুষ সেদিন বললো, এক সময়ে নাটক, চলচ্চিত্র ও গান খুব জনপ্রিয়তা পেতো। মানুষ এখনও সেসব গান গায়, সে সময়ের অনেক ডায়লগ মনে রেখেছে। তেমনি একটি হলো, ‘তুই রাজাকার’। বিটিভির জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক বহুব্রীহির এ সংলাপ পরে একটি আন্দোলনে রূপ নেয়। এখনও ছবি-নাটক, গান হয় তবে আগের মতো জনপ্রিয় হয় না। মানুষের অন্তর ছুঁতে পারে না বলেই হয়তো।

অন্তর অন্দরে থাকে। তা দেখা যায় না। তাই অন্তর কী বলে তা শুধু যার অন্তর তারই জানার কথা। চায়ের দোকানে বসে এক ব্যক্তি এমন আলোচনাই করছিলেন। তার সব কথার সারমর্ম হলো, এখন জাগ্রত বিবেকের মানুষ খুব কম। বিবেক মরে গেছে। তাই বিবেকহীনরা যা খুশী তা-ই করে বেড়ায়। একজন আবার তাকে জিজ্ঞাসা করলো, ভাই কী হয়েছে । উত্তরে ওই ব্যক্তি বললো একটি অফিসের ঘুষ নেয়ার ঘটনা বললো। সে জানালো, তার কাজের ফাইল আটকে রেখেছে।

তিনি যাওয়ার পর কোন পাত্তাই পাননি। পরে অফিসের একজন তাকে কানে কানে বললো, কিছু দেন-কাজ হয়ে যাবে। তার সাথে কথা বলে দেয়ার অংকটা পাকাপাকি করে দিতেই সত্যিই সত্যিই কাজ হয়ে গেলো। তা শুনে কয়েকজন বললো, কাজ হলেতো আপনার খুশী হওয়ার কথা। জবাবে সে যা বললো তা শুনে অনেকেই থ’।
সে জানালো ঘুষের টাকা নেয়ার সময়ে কর্তব্যরত ব্যক্তি ওয়াশ রুম থেকে অজু করে ফিরেছেন। পরে তাড়া দিয়ে বললো, ভাই তাড়াতাড়ি করেন, নামাজ পড়তে যাবো।
ইদানিং এ ঘুষ নিয়ে অনেক জায়গায় আলোচনা শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখলাম, কম বেশী বেশীরভাগ জায়গায় ঘুষ চলছে।

কোন কোন জায়গায় প্রকাশ্যেই ঘুষ লেনদেন হচ্ছে। উপরওয়ালার সামনেই ঘুষ নিচ্ছে কেউ কেউ। উপরওয়ালা দেখেও না দেখার ভান করছে। প্রবীণদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, অতীতে ঘুষ নিলেও তা লুকিয়ে নেয়া হতো। এখন খরচের কথা কিংবা নানা দোহাই দিয়ে তা নেয়। কোন রকম লজ্জাবোধ হয় না তাদের। এ ঘুষের টাকায় বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়ে আবার সমাজেও দাপটের সাথে চলে তারা। আগে ঘুষখোরদের সাথে মানুষ আত্মীয় করতে না চাইলেও এখন করে। টাকা হলেই জাতপাত খুঁজে দেখে না। ঘুষখোর ধনী হয়ে বৃদ্ধ বয়সে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা সমাজের নেতা হতে উঠেপড়ে লাগে। কিছুটা দান করে নিজেকে সমাজ সেবক হিসেবে জাহির করে।

অনেকের মতে, বহুব্রীহি নাটকে স্বাধীনতা বিরোধীকে যেমন করে ‘ তুই রাজাকার’ বলতো ঠিক তেমন করে যদি ঘুষখোরকে সমাজের সবাই ‘তুই বেটা ঘুষখোর’ বলে তবে হয়তো পরিস্থিতির উন্নতি হতো। মোদ্দা কথায়, সমাজের সব ক্ষেত্রে ঘুষখোরদের এড়িয়ে যেতে হবে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ