আজ শুক্রবার, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তারাবতে নারী পাচারকারী চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার বিশ্বরোড মোড়ে শাহ চন্দপুরী রেস্টুরেন্টের সামনে থেকে আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১ । এ সময় ৪ জন তরুণীকে পাচারের সময় উদ্ধার করেছে র‌্যাব সদস্যরা।  শনিবার দিবাগত রাতে তারাব মোড়ের শাহ চন্দপুরী রেষ্টুরেন্ট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন,১। মোঃ অনিক হোসেন (তরুণী সংগ্রহকারী এজেন্ট), বয়স-৩১, থানা-ধুপাউড়া, জেলা-ময়মনসিংহ, ২। মোঃ আক্তার হোসেন (তরুণী সংগ্রহকারী এজেন্ট), বয়স-৪০, থানা-সিদ্ধিরগঞ্জ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ, ৩। মোঃ আফতাউল ইসলাম @ পারভেজ (পাসপোর্ট প্রস্তুতকারী দালাল) বয়স-৩৭, থানা-কচুয়া, জেলা-চাঁদপুর, ৪। মোঃ মনির হোসেন @ সোহাগ (দুবায়ের ড্যান্স ক্লাবের মালিক) বয়স-৩০, থানা-চাটখিল, জেলা-নোয়াখালী এবং ৫। আঃ হান্নান (দুবায়ের ড্যান্স ক্লাবের মালিক) বয়স-৫২, থানা-চান্দিনা, জেলা-কুমিল্লা’দেরকে গ্রেফতার করা হয় এবং গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ডিএমপি, খিলগাঁওয়ের গোড়ান এলাকা অভিযান পরিচালনা করে ৬। মোঃ আকাশ (ট্রাভেল এজেন্সির মালিক), বয়স-২৯, থানা- সদর ও জেলা- মাদারীপুর’কে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের দখল হতে ৭০ টি পাসপোর্ট, নগদ ১,৫৮,০০০/- টাকা, ২০০ টি পাসপোর্টের ফটোকপি, ৫০ টি বিমান টিকেট, ৫০ টি ট্যুরিস্ট ভিসার ফটোকপি, ০১টি সিপিইউ, ০১টি মনিটর ও ০১টি অত্যাধুনিক বিলাসবহুল মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়। বিষয়টি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব ১১ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন।

তিনি জানান,  গ্রেফতারকৃত আসামীরা একটি সংঘবদ্ধ আর্ন্তজাতিক নারী পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী সুন্দরী তরুনীদের উচ্চ বেতনে বিদেশে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করে থাকে। এই পাচারকারী সিন্ডিকেটের সহিত বিপুল সংখ্যক এজেন্ট, পাসপোর্টের দালাল, ড্যান্স বারের মালিক, ট্র্যাভেল এজেন্সী ও অসাধু ব্যক্তি যুক্ত রয়েছে। এই নারী পাচারকারী সিন্ডিকেটের এজেন্টরা নিম্নবিত্ত পরিবারের, পোষাক শিল্পের, ব্রোকেন ফ্যামিলির সুন্দরী তরুণীদের প্রাথমিকভাবে টার্গেট করে থাকে। টার্গেট করার পর প্রথমে তরুণীদের ছবি বিদেশে অবস্থিত ড্যান্স বারের মালিককে পাঠানো হয়। ছবি দেখে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হওয়ার পর ড্যান্স বারের মালিক অথবা তার প্রেরিত প্রতিনিধি সরাসরি উক্ত তরুণীদেরকে নির্বাচনের উদ্দেশ্যে ঢাকা অথবা আশে পাশের কোন রেস্টুরেন্ট, হোটেল অথবা লং ড্রাইভের নামে অত্যাধুনিক বিলাসবহুল মাইক্রোবাসে সাক্ষাৎ করে থাকে। চুড়ান্তভাবে নির্বাচিত তরুণীদের পাসপোর্ট উক্ত নারী পাচারকারী সিন্ডিকেট তাদের নিজস্ব পাসপোর্ট দালালের মাধ্যমে প্রস্তুত করে থাকে। ট্রাভেল এজে›সীর মালিকের মাধ্যমে নথিপত্র ম্যানেজ করে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে এই সকল তরুণীকে মধ্যপাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করে থাকে।

তিনি আরো জানান, তরুণীরা বিদেশে পৌঁছা মাত্র এয়ারপোর্ট থেকে উক্ত সিন্ডিকেটের সদস্যরা রিসিভ করে হোটেলে নিয়ে গৃহবন্দি করে রাখত। বিদেশে অবস্থানকালীন সময়ে এই সকল তরুণীকে কোন অবস্থাতেই নিজের ইচ্ছায় হোটেল তথা ড্যান্স বারের বাইরে যেতে দেওয়া হয় না। প্রাথমিক অবস্থায় তরুণীরা এসকল আসামাজিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হতে রাজি না হলে বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য জোরপূর্বক প্রয়োগ করা হয়ে থাকত। এভাবে দিনের পর দিন উক্ত তরুণীদের উপর পৈশ্বাচিক নির্যাতন চলতে থাকে। কোন খদ্দরের কোন নির্দিষ্ট তরুণীকে পছন্দ হলে উক্ত ড্যান্স বারের মালিকের নিকট হতে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে কয়েক দিনের জন্য ভাড়া নিয়ে থাকে। এই মানব পাচার চক্রের উপর দীর্ঘদিন যাবৎ র‌্যাব-১১ গোয়েন্দা নজরদারী চালিয়ে আসছিল।গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ