আজ শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তাদের থামাবে কে?

বিশেষ প্রতিবেদক:

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বর্তমান ও সাবেক কাউন্সিলরের মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ মামলায় এখন পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুরো ৬ নং ওয়ার্ড পুরুষশুন্য হয়ে পড়েছে। পালিয়েছে খোদ কাউন্সিলররাও। ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে সমস্ত মানুষ যখন উৎসবের জন্য বাড়িতে নিশ্চিন্তে থাকার কথা তখন অজ্ঞাত মামলায় ফেঁসে যাবার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকেই। স্থানীয়রা জানান, এ দুইজনের অনুসারীদের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে ঝামেলা অনেক আগে থেকেই। সংঘর্ষ হলে মামলা হয়, পুলিশ আসে এরপর সব চুপচাপ।

স্থানীয়দের মতে, এ দুইজনকে না থামাতে পারলে বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটতে পারে। গত ২ আগস্ট রাতে সিগারেট ধরানোকে কেন্দ্র করে সুমিলপাড়া আইলপাড়া এলাকায় সংঘাতে জড়ায় মতি কাউন্সিলরের সমর্থক পানি আকতার ও সিরাজের সমর্থক শাকিল। বিষয়টি নিয়ে ওইদিন রাতেই মতির তার কার্যালয়ে মিমাংশায় বসে। কিন্তু মিমাংশা চলাকালীন রাত ১০টায় পুনরায় দুই গ্রæপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়।

পুলিশ জানায়, মামলায় ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতিকে প্রধান আসামী করে সিরাজুল ইসলামের সমর্থক ইয়াসমিন বাদী হয়ে ২৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির সমর্থক লিটন বাদী হয়ে নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলকে প্রধান আসামীকে ৫৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামী করে পাল্টা মামলা দায়ের করেন। বুধবার পুলিশ মামলা দুটি রুজু করেন।

একই সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় গত সোমবার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক মাহবুব উর রহমান বাদী হয়ে নাসিক কাউন্সিলর মতিউর রহমানের সমর্থক আশরাফ, ভাগ্নে মামুন, মানিক মাষ্টার, সাবেক কাউন্সিলর সিরাজ মন্ডলের ভাই মজিবুর রহমান মন্ডলসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ২০০-২৫০ জনকে আসামী করে প্রথম মামলাটি দায়ের করেন। পুলিশের মামলার পর নতুন করে পাল্টাপাল্টি আরও দুই মামলার কারনে পুরো ৬ নং ওয়ার্ড পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে উভয় গ্রুপের লোকজন গা-ঢাকা দিয়েছেন।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সিদ্ধিরগঞ্জের ৬নং ওয়ার্ডে আধিপত্য নিয়ে বর্তমান কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি ও সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে কয়েক বছর ধরে। এই সময়ে তাদের সমর্থকদের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘাত-সংঘর্ষ হয়েছে। একে অপরকে দোষী করে পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়েছে বেশ। কেই কাউকে ছাড়া দিতে নারাজ। তবে তুচ্ছ ঘটনায় ৩টি মামলা দায়ের নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে। তাদের মতে, এই দুজনের বিরোধকে কেন্দ্র করে থানা আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতা সুবিধাভোগ করছেন। তাছাড়া সাংসদ শামীম ওসমানকেও এই ইস্যুতে নীরব ভুমিকায় দেখতে পেয়েছে নেতাকর্মীরা। অথচ তাদের দুজনের কারনে আজ সাধারন নেতাকর্মীরা বাড়িছাড়া।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বর্তমান কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির সমর্থকরা আদমজী ইপিজেডে একচেটিয়া আধিপত্য ও চোরাই তেলের রমরমা ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করায় ক্ষুব্ধ সিরাজ মন্ডলের সমর্থকরা। এসকল সেক্টর দখলে নিতে কদিন পর পরেই অশান্ত হয় সিদ্ধিরগঞ্জ। মূলত তেল চুরির বানিজ্য ও আধিপত্যের জন্যেই উভয় গ্রুপে সংঘর্ষ লেগে থাকে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ