আজ শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঠেকানো গেল না ট্রাম্পকে

যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১২ ডিসেম্বর। প্রচার–প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। এরই মধ্যে লন্ডনে শুরু হয়েছে ন্যাটোর সম্মেলন। এই সম্মেলনে যোগ দিতে দেশটিতে রাষ্ট্রীয় সফরে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর এ সফর সামনে রেখে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টি আগে থেকেই চিন্তায় ছিল। কারণ একটাই, ট্রাম্পের ‘বরিসপ্রীতি’। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কয়েক দিন আগে তাঁর দেশের নির্বাচনে নাক না গলাতে ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তাতেও ঠেকানো গেল না মার্কিন প্রেসিডেন্টকে। বলেই ফেললেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বরিসই ভালো।

লন্ডনে গতকাল মঙ্গলবার ন্যাটো জোটের মহাসচিব জেনস স্টোলটেনবার্গের সঙ্গে বৈঠক করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, তিনি যুক্তরাজ্যের নির্বাচন থেকে দূরে থাকবেন। তিনি বলেন, ‘আমি এটিকে (নির্বাচন) জটিল করতে চাই না।’ এরপরই তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, বরিস অত্যন্ত যোগ্য এবং তিনি ভালো করবেন।’ যুক্তরাজ্য সফরকালে প্রধানমন্ত্রী বরিসের সঙ্গে দেখা করবেন বলেও এ সময় তিনি জানান।

উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের ২৯ দেশের সামরিক জোট ন্যাটোর শীর্ষ বৈঠকে অংশ নিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত সোমবার দুই দিনের সফরে লন্ডন পৌঁছান। যুক্তরাজ্যের নির্বাচনের আগ দিয়ে এ সফরের সময় তিনি দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কিছু বলেন কি না, সেদিকে সবার নজর ছিল। একপ্রকার বাধ্য হয়েই গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী বরিস বলেছিলেন, যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোনোভাবে সম্পৃক্ত না হলেই ‘সবচেয়ে ভালো’ হয়। বিভিন্ন জনমত জরিপে তাঁর দল কনজারভেটিভ পার্টি এগিয়ে থাকলেও দলটির নীতিনির্ধারণীদের আশঙ্কা, নির্বাচন নিয়ে ট্রাম্প বেফাঁস মন্তব্য করে বসলে হিতে বিপরীত হতে পারে। গতকাল ট্রাম্প ঠিক সেই কাজটিই করেছেন।

ট্রাম্প বলেছেন, তিনি যুক্তরাজ্যের নির্বাচন থেকে দূরে থাকবেন। তবে বরিস অত্যন্ত যোগ্য।

উচিত না হলেও ট্রাম্প এর আগেও যুক্তরাজ্যের নির্বাচন নিয়ে নিজের মতামত জানিয়েছেন। গত অক্টোবরে তিনি বলেছিলেন, বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন প্রধানমন্ত্রী হলে তা যুক্তরাজ্যের জন্য ‘খুব খারাপ’ হবে এবং ব্রেক্সিট পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজের সঙ্গে বরিস জনসনের জোট করা উচিত। লক্ষণীয় হলো, যুক্তরাজ্যে দ্বিতীয় যে রাজনীতিককে ট্রাম্প পছন্দ করেন, তিনি হলেন আরেক কট্টর ডানপন্থী নেতা নাইজেল ফারাজ।

বেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ) ইস্যুতে চার বছর ধরে রাজনৈতিক সংকটে টালমাটাল যুক্তরাজ্য। এরই মধ্যে বেক্সিট কার্যকরের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আরও সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরতে ১২ ডিসেম্বর আগাম নির্বাচনের আয়োজন করেছেন বরিস। তিনি বলেছেন, পুনর্নির্বাচিত হলে আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে বেক্সিট কার্যকর করবেন তিনি। ট্রাম্প ব্রেক্সিট সমর্থন করেন। তবে তিনি ব্রেক্সিট–পরবর্তী যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা (এনএইচএস) নিয়ে খুব একটা আগ্রহী নন। করবিনের নির্বাচনী প্রচারণার মূলে রয়েছে এনএইচএস। এ বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের অনুরোধ জানিয়ে সোমবার ট্রাম্পকে এক চিঠিতে অনুরোধ করেন করবিন।

গতকালের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, নির্বাচনে যদি লেবার পার্টি ক্ষমতায় যায় এবং জেরেমি করবিন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন, তাহলে তাঁর সঙ্গে তিনি কাজ করবেন কি না। জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি যে কারও সঙ্গে কাজ করতে পারি। আমার সঙ্গে কাজ করা সহজ।’ এনএইচএস বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কিছু করার নেই। বিষয়টি নিয়ে ভাবিনি আমি।’

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ