আজ বৃহস্পতিবার, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

টিউশন সংকটে শিক্ষার্থীরা

বিশেষ প্রতিবেদক

করোনার প্রদুর্ভাব কমে আসার পর বিভিন্ন পেশার লোকজন নিজ কর্মস্থলে ফিরে এসেছে। তবে অনেকেই যেমন হারিয়েছেন চাকুরি তেমনি তৈরী হয়েছে ছাত্রছাত্রীদের টিউশনি সংকট। বাধ্য হয়ে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সংকট উত্তরণে বাধ্য হচ্ছেন পার্টটাইম চাকুরিতে প্রবেশ করতে। আর এতে করে তাদের পড়াশোনা ও পরীক্ষার প্রস্তুতিতে বিঘ্ন ঘটছে। একই সাথে উপার্জন ও ভালো ফলাফলের চেষ্টা করায় কাঙ্খিত রেজাল্ট নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

টিউশনির সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা বলছেন, পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি করে নিজের ও পরিবারের খরচ বহন করতে হতো। এর বাইরেও পড়ালেখা শেষ করে চাকরির প্রস্তুতি নিতে থাকা শিক্ষার্থীরাও টিউশনি করে খরচ চালাতো। কিন্তু করোনার কারণে টিউশনি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অনেক শিক্ষার্থী স্থায়ীভাবে না করে দিয়েছেন টিউটরদের। এসকল টিউটরদের মধ্যে যারা পরিবারকে সহায়তা করতেন তারা বাধ্য হয়ে পার্টটাইম চাকুরিতে যুক্ত হবার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

তোলারামে মাস্টার্স বিভাগের শিক্ষার্থী জোবাইদা বলেন, লকডাউনের পূর্বে আমাদের কাছে অভিভাবকরা অনুরোধ করে শিক্ষার্থী পাঠাতেন। কিন্তু করোনার পর পরেই সব বন্ধ হয়ে গেলে আমার আয়ের পথ পুরো বন্ধ হয়ে যায়। ৩ মাস কোন বেতন ছিল না আমার। করোনা শেষে সব স্বাভাবিক হয়ে এলেও অভিভাবকরা পড়াতে চাচ্ছেন না তাদের সন্তানদের। এখন আমাদেরই অনেকটা অনুরোধ করতে হয় তাদের কাছে। লকডাউনের আগে প্রায় ২১ জন শিক্ষার্থীকে পড়াতাম আমি, কিন্তু এখন মাত্র ১২ জন রয়েছে।

একই ভাবে বর্ষা আক্তার বলেন, আমার মাত্র ৪টি টিউশনি ছিল। এগুলো দিয়ে আমার পড়াশোনা ও নিজের খরচ বহন করতে হতো। লকডাউন শেষে ফিরে পেয়েছি ২টি। নতুন কোন টিউশনিও পাচ্ছিনা। এখন বাধ্য হয়ে পার্ট টাইম চাকরি খুঁজতে হচ্ছে।

সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর ছাত্রদের মেস ভাড়া এবং প্রাতিষ্ঠানিক খরচ কমানোর দাবী জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছিলো বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। সেসময় নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিনের কাছে ছাত্রদের সুবিধার দাবী জানান। এসময় ডিসিও তাদের দাবীর সাথে একাগ্রতা প্রকাশ করে উর্ধতন মহলে অবগত করবেন।

ব্যাংকে চাকরি প্রত্যাশী আরিফ আলম হিরণ বলেন, কোচিং বন্ধ থাকার কারনে আমি এখন ৬ দিন শহরের ফার্মেসিতে কাজ করি। টানা কাজে অনেক ক্লান্ত লাগে। অথচ আয় সেই কোচিং এর সমান। আসলে লেখাপড়ার জন্য বাড়ি থেকে কোন টাকা আনা আমার সম্ভব না। বরং পরিবারকে আরও দিতে হয় অনেক সময়। যদি বাড়ী ফিরে যাই তাহলে অভাব অনটন বেড়ে যাবে। এই কারণেই চাকরি বেছে নেয়া। কিন্তু এতে করে অন্য ব্যাংক বা সরকারি চাকরির জন্য পড়াশোনা করা সম্ভব হচ্ছে না। সব মিলিয়ে এক অনিশ্চয়তায় দিন অতিবাহিত করছি।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ