আজ বৃহস্পতিবার, ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে ‘মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর’ করার প্রস্তাবে মন্ত্রী গাজীর সমর্থন

নবকুমার:

মন্ত্রি পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক যোগদান করেছেন নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। বৈঠক প্রয়াত সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের নামে গড়ে তোলা ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে’ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তরের জন্য মন্ত্রীসভায় প্রস্তাব দিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।এতে সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহার উশৈসিং এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ।  জাদুঘরটি চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানার কাজির দেউড়ি এলাকায় অবস্থিত। প্রস্তাবে নীতিগত সমর্থন এসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকেও।

সূত্রমতে, বৈঠকে উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, ‘যে ভবনটিকে জিয়া স্মৃতি জাদুঘর বানানো হয়েছে, সেটি বৃটিশ আমলে নির্মিত। বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত একটি ভবন এটি। একসময় সার্কিট হাউজ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এখানে মহান মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ১৯৭১ সালে অনেক নিরীহ বাঙালি ও মুক্তিযোদ্ধা পাকিস্তানি সেনারা ধরে নিয়ে ওই ভবনে রেখে নির্যাতন করেছিল। সেখানে একটি ইলেকট্রিক চেয়ার ছিল। সেখানে বসিয়ে অকথ্য নির্যাতন করা হতো। অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে সেখানে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, চট্টগ্রামে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যখন রাষ্ট্রপতি ছিলেন, তখন এই সার্কিট হাউজে এসে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৯১ সালে তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর সেটিকে আকস্মিকভাবে জিয়া স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে রূপান্তর করেন, যা চট্টগ্রামবাসী এবং আপামর মুক্তিযোদ্ধারা মেনে নেননি। সেখানে জিয়াউর রহমানের কোনো স্মৃতি নেই। শুধু ১৯৭১ সালে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণাটি জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে যে ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে প্রচার হয়েছিল, সেটি এনে সেখানে রাখা হয়েছে। অথচ জিয়াউর রহমানের আগে একই ট্রান্সমিটার ব্যবহার করে এই ঘোষণা দিয়েছেন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান। তাহলে শুধু জিয়াউর রহমানের নামে কেন জাদুঘর হবে?’

নওফেল আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান একজন অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী। আদালতের রায়ে তিনি একজন অবৈধ সামরিক শাসক। তার নামে কেন একটি রাষ্ট্রীয় স্থাপনা এভাবে ব্যবহার করা হবে? তাছাড়া জিয়ার নামে স্থাপনা হওয়ায়, এই দর্শনীয় স্থানটিতে চট্টগ্রামের মানুষ যান না। অথচ এটিকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর করে একটি সার্বজনীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপান্ত করলে এটি দেশের সম্পদে পরিণত হবে।’

নওফেলের বক্তব্য সমর্থন জানিয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা বিরোধীদের পুনবাস করেছে। তার নামে কোন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থাকতে পারে না। ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তরের প্রস্তাবে সমর্থন  করছি।’

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ