আজ শুক্রবার, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জামান হত্যার রহস্য উদঘাটন

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জামান হত্যার মূল আসামী মোঃ সাইফুল ইসলাম (৩২)সহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব -১১। ১৩ জুন আড়াইহাজার থানাধীন নাগেরচর এলাকা হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৪ জুন র‌্যাব -১১ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল ইমরান উল্লাহ সরকার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গত ২৯ মার্চ ২০২০ খ্রিস্টাব্দে মোঃ জামান (৪৫) নামের এক ব্যক্তি নিখোঁজের ঘটনার প্রেক্ষিতে তার ছোটভাই মোঃ জাকির হোসেন(৪২) নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তখন থেকেই অনেক খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে ০৩ দিন পর ৩১ মার্চ ২০২০ সকাল ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানাধীন মাওরাদী এলাকায় হাত-পা বাঁধা ও দুই চোখ উপড়ে ফেলা অবস্থায় জামান এর লাশ পাওয়া যায়। অতঃপর নিহত জামান এর ছোটভাই মোঃ জাকির হোসেন বাদী হয়ে আড়াইহাজার থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০২, তারিখ ০১/০৪/২০২০, ধারা- ৩০২/২০১/৩৯৪/৩৪ দঃবিঃ।

হত্যাকান্ডের পর থেকেই র‌্যাব-১১ এর একটি বিশেষ দল হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনসহ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে। মামলা পরবর্তী সময়ে নিবিড়ভাবে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হলেও নিহত জামান এর নৃসংশ্য হত্যাকান্ড সম্পর্কে ধোঁয়াশা কাটেনি। তাই র‌্যাব-১১ এর বিশেষ গোয়েন্দা দল এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। দীর্ঘ প্রায় আড়াই মাস নিবিড় তদন্তের পর গত কয়েদিন যাবৎ বেশ কয়েকটি স্থানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে অবশেষে ১৩ জুন ২০২০ দুপুর সাড়ে ১২ টায়  নাগেরচর এলাকা হতে মূল হত্যাকারী মোঃ সাইফুল ইসলাম (৩২)’কে আটক করা হয়। গ্রেফতারের পরবর্তীতে আসামীকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, এই নৃসংশ্য হত্যাকান্ডের সাথে সাইফুল জড়িত এবং তার পরিকল্পনায় ও কয়েকজন সহযোগীদের পরস্পর যোগসাজসে জামানকে হত্যা করেছে মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে। অতঃপর তার দেয়া তথ্য মতে ঘটনায় জড়িত অপর এক সহযোগী আসামী মোঃ বাদশা (৩০)’কে ঐদিন রাত ১১৩০ ঘটিকার সময় বগাদি বাজার হতে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত মোঃ সাইফুল ইসলাম এর বাড়ী  আড়াইহাজার থানাধীন নাগেরচর এবং মোঃ বাদশা এর বাড়ী বগাদি এলাকায়। নিহত মোঃ জামান পেশায় ছিলেন একজন অটোরিক্সা চালক। গ্রেফতারকৃত মোঃ সাইফুল ইসলাম ও বাদশা’দের সাথে ভিকটিম নিহত জামানের অটোরিক্সা নিয়ে দীর্ঘ দিনের বিরোধ ছিল। তাছাড়া ঘটনার এক মাস পূর্বে পাওনা টাকা নিয়ে নিহত জামানের ভাই জাকির হোসেন সাইফুলকে রাস্তায় অপদস্থ ও অপব্যবহার করে। তার জের ধরে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে মোঃ সাইফুল ইসলাম, আক্তার ও বাদশাহ’কে নিয়ে জামানকে খুন করার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন জামানকে সাথে নিয়ে সাইফুল, আক্তার ও বাদশাহ একসাথে বাজারে যায় এবং সাইফুল বাজারে গিয়ে আক্তারকে গামছা কিনার জন্য ৪৫ টাকা দেয়। আক্তার গামছা কিনে নিয়ে আসার পর তারা তিনজন জামানকে সাথে নিয়ে নাগেরচর চৌরাস্তায় চা খায়। চা খাওয়ার পর তারা সবাই চৌরাস্তা ব্রীজের কাছে যায়। ব্রীজে পৌছার পর মোঃ সাইফুল ইসলাম আক্তার ও বাদশা দুষ্টামী করে জামান’কে বলে তোর গলা ধরে মেরে ফেলবো। একই সময়ে বাদশা মাফ চাওয়ার কৌশলে জামানের পা ধরে টান দিয়ে জামানকে মাটিতে ফেলে দেয়। তারপর মূলহত্যাকারী সাইফুল ইসলাম জামানের গলা চেপে ধরে। তখন আক্তার বলে গলা চেপে ধরলে শব্দ হবে তার পরিবর্তে আক্তার গামছা দিয়ে মুখে ও গলায় প্যাচিয়ে ধরার পর ছুরি দিয়ে গলায় খুচিয়ে খুচিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলে। অতঃপর তারা জামানের মৃত দেহ পাশের কলাবাগানের ভিতরে ফেলে দিয়ে নিজ নিজ বাড়ীতে চলে যায়। গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত ঘটনার লোমহষর্ক বর্ননা দিয়ে জবানবন্দী প্রদান করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ