আজ শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নারায়ণগঞ্জে দু’টি আসনও হাতছাড়া হচ্ছে জাপার

জাপার

জাপার

নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে ১৪ দলের অন্যতম শরীক জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয়া দু’টো আসনও হারাতে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি। ক্ষমতাসীন দলের জেলার শীর্ষ নেতারা বেশ জোর দিয়েই বলছেন আগামীতে জাতীয় পার্টিকে নারায়ণগঞ্জের কোন আসনেই ছাড় দেয়া হবে না। ফলে নারায়ণগঞ্জ-৫ ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে এবার জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের কপাল পুড়তে পারে।

জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জোটবদ্ধ নির্বাচন হলেও এবার জাতীয় পার্টিকে নারায়ণগঞ্জের কোন আসনে মনোনয়ন দেয়া হবে না। বিষয়টি নিয়ে তারা দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথেও আলাপ করেছেন। যদিও জাতীয় পার্টির প্রধান এইচ এম এরশাদের লাগামহীন বক্তব্যে জোটে এবার জাতীয় পার্টি থাকছে কী না তা-ও নিশ্চিত নয়। সবমিলিয়ে নারায়ণগঞ্জে এবার জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা বেকাদায় পড়ছেন এটা প্রায় নিশ্চিত।

যদিও স্বাধীনতা বিরোধীদের ঠেকাতে প্রয়োজনে নারায়ণগঞ্জে ৫টি আসনেই লাঙ্গলের প্রার্থী দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। গতকাল শনিবার দলীয় প্রধান এইচ এম এরশাদের সাথে ফতুল্লায় নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এক মতবিনিময় সভা শেষে সেলিম ওসমান এ কথা বলেন।

সেলিম ওসমানের এ বক্তব্যকে হাস্যকর বলেছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। তাদের দাবি, যে দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন ও নির্বাচনী বৈতরণী পার হবার জন্য নৌকায় উঠতে পথ চেয়ে থাকেন তাদের মুখে এ ধরণের বক্তব্য এরশাদের মতোই লাগামহীন।

আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, জোটগঠনে জোরালো ভূমিকা রাখায় এর আগে নেত্রী প্রয়াত নাসিম ওসমানকে জোটের মনোনয়ন দেন। নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পরে দলের একাধিক প্রার্থী থাকাস্বত্ত্বেও সেলিম ওসমানকে মনোনয়ন দিয়ে মূলত: এ পার্টির সাথে ‘জোটরক্ষার শেষ সৌজন্যটুকু’ দেখান শেখ হাসিনা। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের একাধিক শক্তিশালী প্রার্থী ও ভোটের আধিক্য থাকার পরে জাতীয় পার্টি নেতা লিয়াকত হোসেন খোকাকে মনোনয়ন দেন। যদিও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, লিয়াকত হোসেন খোকা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দাঁড়ালেও উতরাতে পারবেন না।

তবে জাতীয় পার্টির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, আগামীতে আসনের সমীকরণ না মিললে জোটে না-ও থাকতে পারে দলটি। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জিএম কাদের ইতোমধ্যে বিএনপির সাথে একটি গোপন আসনবণ্টন মিটিংয়ে উপস্থিত থেকে দরকষাকষিতে অংশ নিয়েছেন। ফলে যেদিকে আসনের সংখ্যা বেশি থাকবে জাতীয় পার্টি সেদিকেই যেতে পারে। সবগুলো বিষয়কে সামনে রেখে জাতীয় পার্টির নেতারাও গোপনে নিজেদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এজন্য নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনেও তাদের প্রার্থী ঠিক করতে তলে তলে ছক কষতে শুরু করেছেন।

জাতীয় পার্টির একটি সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ-৫ ও ৩ আসনে দলের ভেরতেই এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে পারেন দুই সাংসদ সেলিম ওসমান ও লিয়াকত হোসেন খোকা। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ওসমান পরিবারের সন্তান আজমেরী ওসমানও বাবার আসনে দলের প্রার্থী হতে পারেন। গতবারও আজমেরী ওসমান আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু পারিবারিক সিদ্ধান্তের কারণে সেবার ছাড় দেন। তবে এবার বেশ জোরেশোরেই তার নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও এ আসনে জাতীয় পার্টি নেতা প্রবাসী তানভীর হায়দার খানও আলোচনায় রয়েছেন।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে এবার লিয়াকত হোসেন খোকাকে ধরাশায়ী করতে পারেন গতবারের বঞ্চিত এরশাদকন্যাখ্যাত অনন্যা হোসাইন মৌসুমী।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ