আজ শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ছাত্রদলে পিছিয়ে ছাত্রলীগ

বিশেষ প্রতিবেদক

করোনার প্রার্দুভাবে গোটা নারায়ণগঞ্জ যখন লকডাউন ঠিক তখনই রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠনকে মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে দেখা গেছে। যে যেভাবে পেরেছে মানুষের জন্য কাজ করেছে। তবে, দীর্ঘসময় ক্ষমতার বাইরে থেকে মানুষের জন্য ছাত্রদল যতটা কাজ করেছে তার এক তৃতীয়াংশও করেনি ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগ। ঠিক এমনটাই মনে করছেন জেলার রাজনৈতিক বোদ্ধামহল।

সূত্রমতে, গত ৮ মার্চ প্রথম করোনায় আক্রান্ত হওয়া তিনজন রোগীর মধ্যে দু’জনই ছিলো নারায়ণগঞ্জের। তারপর থেকে জেলায় বাড়তে শুরু করে সংক্রমন। একপর্যায়ে নারায়ণগঞ্জকে রেডজোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী লকডাউন করে দেয়া হয় পুরো জেলাকে। লকডাউনের ওই সময়টাতেই মানুষ চিনতে পেরেছে প্রকৃত রাজনীতিবিদ কারা কিংবা কোন সংগঠন মানুষের পক্ষে কাজ করে। বাম সংগঠনগুলো থেকে শুরু করে অলিখিত প্রধান বিরোধি দল বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের কাজ ছিলো চোখে পরার মতো। তবে, এক যুগেরও বেশি ক্ষমতায় থাকার পরেও ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগকে তেমনভাবে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি বলে মনে করছেন নগরীর সাধারণ মানুষ।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল মামুন বলেন, সত্যিকার অর্থে আমরা বিরোধি দলে থেকে যতটুকু কাজ করেছি, ক্ষমতায় থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সেই আশানুরূপ কাজ আমরা দেখতে পাইনি। নারায়ণগঞ্জের মানুষ দেখেছে যে, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌছে দিয়ে এসেছে। যতটুকু সম্ভব আমরা চেষ্টা করেছি মানুষের পাশে থাকার। ছাত্রদল সবসময় মানুষের পাশে ছিলো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।

করোনাকালের রাজনীতির বিষয়ে জানতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ ও মহানগরের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদকে ফোন করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।
এদিকে, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহেদ আহম্মেদ জানান, দল ক্ষমতায় আর পকেটে টাকা থাকলেই হয় না। প্রথমেই প্রয়োজন মন আর সাংগঠনিক শক্তি। আমরা সাংগঠনিকভাবে আমাদের কাজ করেছি তারাও হয়তো কমবেশি করেছে। তবে সেভাবে চোখে পরার মতো কিংবা দৃশ্যমান কোন কাজ আমার চোখে পরেনি, আমি দেখিনি।

অন্যদিকে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু বলেন, ছাত্রদলের সাথে ছাত্রলীগের কোন দিক থেকেই তুলনা নেই। আগে ছাত্রলীগের কর্মকান্ড ছিলো শুধু ছাত্রদের নিয়ে। এখন সাধারণ জণগন নিয়ে। ছাত্রলীগ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বৃক্ষরোপণ থেকে শুরু করে সামাজিক এবং সাংগঠনিকভাবে দারিদ্র শ্রেণির মানুষের কাছে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে। আমারা মুখের কথায় বিশ্বাসী না কর্মে বিশ্বাসী। যাদের কাজ নেই তারা মৌখিকভাবে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার করে থাকে। আমরা সাধারণ মানুষদের নিয়ে কাজ করে আমাদের সময়টা পার করছি। ছাত্রলীগের কোন কর্মী এবার রোজার ঈদ করেনি। ঈদের বাজেট দিয়ে আমরা মানুষের জন্য কাজ করেছি। আমাদের কর্মকান্ড ব্যপকভাবে বিস্তৃত।

এদিকে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি বলেন, সংগঠন মানেই মানুষের জন্য কাজ করা মানুষের পাশে থাকা। সে যেকোন সংগঠনই হোক। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আদর্শকে বুকে ধারণ করে আমরা সাধ্যনুযায়ী মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি তা সকলেই দেখেছে। কৃষকের ধান কাটা, দরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্য ও সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ, বৃক্ষরোপণসহ নানান কাজ করেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পরেও মানুষের জন্য ছাত্রলীগের করা কাজ যথেষ্ট ছিলো কিনা জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, তাদের আদর্শে সমস্যা আছে। শেখ মুজিবর রহমান যে আদর্শ নিয়ে সংগঠন করতে চেয়েছিলেন সে আদর্শ বাস্তবায়ন হয়নি। যার কারণে তিনি সেসময় বলেছিলেন, সবাই পায় সোনার খনি আর আমি পেয়েছি চোরের খনি। অন্যদিকে জিয়াউর রহমানের যে উদ্দেশ্যে ছিলো সেই অনুযায়ী তারেক রহমান আমাদের দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় নেই। তারপরেও যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি মানুষের পাশে থাকার, তাদের জন্য কাজ করার। আর মানুষ সেটা দেখেছে দুঃসময়ে কারা তাদের পাশে থাকে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ