আজ শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে ডাক্তার করে ধর্ষণ !

নিজস্ব প্রতিবেদক

নারায়ণগঞ্জে ৩০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এক রোগিকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। রোগীর দাবী চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করে ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষন করে ঐ চিকিৎসক।

অভিযুক্ত চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম খানপুর ৩শ শয্যা হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের রেজিস্টার। তিনি জেনারেল কলোরেস্টাল, ল্যাপারোস্কপি, প্লাস্টিক সার্জন এবং বার্ন বিশেষজ্ঞ। নির্যাতনের শিকার নারী ১২ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের ডাক্তার আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটিকে তদন্তের জন্য পিবিআই-কে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।

মামলার আরজিতে বাদী বলেন- তিনি দীর্ঘদিন যাবত থাইরয়েড রোগে ভুগছিলেন। থাইরয়েডের চিকিৎসার জন্য তিনি নারায়ণগঞ্জ খানপুর ৩শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আমিনুল ইসলামের খানপুরের নিজস্ব চেম্বার (গ্যাস্ট্রোলিভ ডায়াগোনস্টিক এন্ড কনসালস্টেশন সেন্টার) বিগত ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই শরণাপন্ন হন।

পরবর্তীতে বাদী আবারো ওই বছরের ২০ আগস্ট আমিনুল ইসলামের চেম্বারের গেলে বাদীকে কিছু টেস্ট করতে হবে বলে বেডে শুতে বলেন। বাদী আসামীর সরল কথায় শুয়ে পড়েন। ইমার্জেন্সি ইনজেকশন নিতে হবে বলে ডাক্তার আমিনুল ইসলাম বাদীকে ইনজেকশন দিয়ে শরীর অবশ করে দেন। ইনজেকশন দেয়ার পর বাদী শরীরের কোন অংশই নড়াচড়া করতে পারেনি। বাদীকে একা পেয়ে আমিনুল ধর্ষণ করেন। বাদী ধর্ষণের পর ঘুমিয়ে পডেন এবং সজাগ হয়ে চিৎকার করলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ও বাড়াবাড়ি করলে তা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়া হবে বলে হুমকি প্রদান করে। প্রতি সপ্তাহে আমিনুলের কাছে আসতে হবে বলে ভয় দেখায়।

এই ঘটনার পর বাদীকে মোবাইল ফোনে ভয় দেখাতে থাকে। বাদী বিবাহিত নারী এবং আত্মসম্মানের ভয়ে স্বামীর কাছে লুকিয়ে রাখে সেই ঘটনা। পরবর্তীতে নারীর স্বামীর কাছে পিয়ন দিয়ে খবর পাঠায় রোগীকে কিছু টেষ্ট করাতে হবে।

পরবর্তীতে বাদীকে তার স্বামী ডাক্তারের কাছে তার বোনকে সাথে নিয়ে যেতে বলেন। বাদীর বোনকে সাথে নিয়ে ওই ডাক্তারের চেম্বারে গেলে বোনকে বের করে দিয়ে চেম্বারের দরজা লাগিয়ে দেন এবং ধর্ষণ করেন। এ ভাবে কয়েক দফা ধর্ষন করলে গত বছরের শেষের দিকে ওই নারী অন্তঃসত্বা হয়ে পড়ে।

এই ঘটনা বাদীর স্বামী বুঝতে পেরে বাদীকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। ওই সময়ে নারী বর্তমানে অন্ত:সত্বা এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ। এ ব্যাপারে ডাক্তার আমিনুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল দিয়ে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মামলার বাদির আইনজীবি এ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম জানান, বাদি হাসপাতালে গিয়ে থাইরয়েডের চিকিৎসা নিতে গেলে ডাক্তার আমিনুল ইসলামের কাছে গেলে তাকে কৌশলে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে ধর্ষন করে। ধর্ষনের ভিডিও চিত্রি মোবাইল ফোনে ধারন করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবার ভয় দেখিয়ে তিন বছর ধরে ধর্ষন করে আসছে। এক পর্যায়ে ওই নারী আন্ত:সত্তা হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় আদালতে মামলাটি গ্রহন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআইকে) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ