আজ শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চুক্তি বিরোধিতাকারীদের সঙ্গে জাসদের চ্যালেঞ্জ

সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে ভারতের সঙ্গে সই হওয়া চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক নিয়ে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিরোধীতাকারীদের খোলা চ্যালেঞ্জ করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাতে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জের কথা জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে জাসদের শীর্ষ এ দুই নেতা বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্প্রতি ভারত সফরকালে সই হওয়া চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক বিষয়ে একটি বিশেষ মহল মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করছে। এই অপপ্রচারের নিন্দা জানিয়ে তারা বলেন, কারো কাছে যদি বাংলাদেশের স্বার্থ লঙ্ঘিত হয়েছে এমন তথ্য-উপাত্ত থাকে, তা প্রকাশ করার জন্য খোলা চ্যালেঞ্জ প্রদান করছি।

জাসদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সরকার দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, স্বার্থ সমুন্নত ও অক্ষত রেখেই মর্যাদা, সমতা, বিশ্বাস এবং আস্থার ভিত্তিতেই বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সমস্যাগুলোকে একে একে সমাধান করে যাচ্ছে। একটি বিশেষ মহল ভারত বিরোধীতার বস্তাপচা রাজনীতির কৌশল হিসেবে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার ব্যর্থ চেষ্টা করছে।

নেতারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে সেই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ৫৩ দফা যৌথ ঘোষণার কোনো একটি দফাতেও সই হওয়া সমঝোতা স্মারক ও চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বিদ্যমান চুক্তি, সমঝোতা স্মারক এবং বোঝাপড়ার বাইরে নতুন কোনো বিষয়ে সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই হয়নি। বরং বোঝাপড়ার ভিত্তিতে সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে উভয় দেশ সমান লাভজনক অবস্থায় যাওয়ার বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে।

চুক্তি বিষয়ে মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের জবাবে তারা বলেন, ফেনী নদী থেকে ত্রিপুরার সাবরুম শহরের মানুষদের খাবার পানি হিসেবে যে পরিমাণ পানি ভারতকে দেওয়া হবে, তা ফেনী নদীর পানি প্রবাহ, সংশ্লিষ্ট পরিবেশ-প্রকৃতি-কৃষি- মানুষের জীবনে সামান্যতম নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। নদী, পানি, পরিবেশ, প্রকৃতি ও কৃষি বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে সামান্যতম শঙ্কা প্রকাশ করেননি।

‘দেশের প্রাকৃতিক গ্যাস নয়, বিদেশ থেকে আমদানি করা এলপিজি ভারতে রপ্তানি হবে। এতে বাংলাদেশের স্বার্থের সামান্যতম কোনো ক্ষতি তো হবেই না, বরং এ ব্যবসায়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ লাভবান হবে। ভারতের বাজারে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব বাড়বে এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ভূমিকা রাখবে।’

‘বাংলাদেশের সমুদ্রতীর ও সমুদ্র সীমানার নিরাপত্তার স্বার্থে নিজস্ব নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাপনা স্থাপন করবে। বাংলাদেশের নিজস্ব মালিকানা ও পরিচালনাধীন একটি নিজস্ব নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাপনায় এটা করা হবে। ভারত এখানে শুধুই কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হওয়ার বদলে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা আরও জোরদার হবে। বাংলাদেশের আমন্ত্রণে নেপাল, ভূটান ও ভারত যদি মংলা বন্দর ব্যবহার করে, তাহলে বাণিজ্যিক ও আর্থিকভাবে আমাদের দেশই বহুগুণ লাভবান হবে এবং কর্মসংস্থান বাড়বে।’

এই দুই নেতা বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা, সমঝোতা স্মারক ও চুক্তিতে ২০১১ সালে প্রস্তাবিত তিস্তা চুক্তিটি ভারত সরকারের মাধ্যমে বাস্তবায়নের বিষয়ে তাদের অবস্থান আরও সুনির্দিষ্টভাবে পুনর্ব্যক্ত করেছে। একইসঙ্গে মনু, মহুরি, খোয়াই, গোমতি, ধরলা ও দুধকুমার এই ছয়টি নদীর পানি বণ্টনের চুক্তি বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশের পাশে থাকা, সহযোগিতা করার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণেও ভারত ভূমিকা পালনের অঙ্গীকার করেছে।’

ভারত বিরোধীতা বস্তাপচা রাজনীতি পরিত্যাগ করে পারস্পরিক মর্যাদা, সম্মান, বিশ্বাস, আস্থা, বন্ধুত্ব, সহযোগিতা, অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কীভাবে বাংলাদেশ ও ভারত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে পারে, সেই বিষয়েই সবার মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন বলেও জানান জাসদের এই দুই সংসদ সদস্য।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ