আজ বুধবার, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার দুই শিক্ষার্থী।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) নির্মাণাধীন ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইন্সটিটিউটে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন দুই শিক্ষার্থী। ইমতিয়াজ ও হাদি নামে ওই দুই শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা বলে জানা গেছে।

হামলাকারীরা রড ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। পরে তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার পর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করায় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সহকারী প্রক্টর ড. মো. রুহুল আমিনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটির গঠন করা হয়েছে।

কমিটি অন্য সদস্যরা হলেন সহকারী প্রক্টর মো. আতিউর রহমান সদস্য সচিব এবং সদস্য সহকারী প্রক্টর ও সহকারী অ্যধাপক মুহাম্মদ শামসুজ্জামান।

হামলার ঘটনায় বেরোবির ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করেছেন আহত দুই ছাত্রলীগ নেতা।

তাদের অভিযোগ বিশেষ মহলের প্ররোচনায় ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো হয়।

বিশ্ববিদ্যায় ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করে তুলতে এ ঘটনা পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। আহত দুই ছাত্রলীগ নেতা আরও অভিযোগ করে বলেন, নির্মাণাধীন ড. ওয়াজেদ রিসার্স ইন্সটিটিউটের নির্মাণ কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে।

কাজের মান নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাবিব অ্যান্ড কোম্পানির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তোলার কারণে তাদের ওপর হামলা হয়েছে।

ওই অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাবিব অ্যান্ড কোম্পানির ‘সাব-কন্ট্রাক্টর’ মতিয়ার রহমানের বলেন, নির্মাণ শ্রমিকদের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার কারণে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা তাদের গণধোলাই দিয়েছে।

তিনি বলেন, চাঁদাবাজির কারণে তারা অতিষ্ঠ হয়ে তাদের গণধোলাই দিতে বাধ্য হয়েছে।

এর প্রতিকার চেয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে বিষয়টি অবহিত করেছি। কিন্তু এর প্রতিকার পাচ্ছি না। এভাবে চলতে থাকলে আমরা কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব।

নির্মাণাধীন ভবনের ম্যানেজার আব্দুল লতিফ মিয়ার অভিযোগ, সোমবার সকালে ‘সাব-কন্ট্রাক্টর’ মতিয়ারের  লোকজনের কাছে দুই ছাত্রলীগ নেতা চাঁদা বাবদ পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে যান।

পরে রাত এগারোটার দিকে নির্মাণ শ্রমিকদের কাজের মজুরি বাবদ ৩ লাখ টাকা প্রদান করার সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হাদিউজ্জামান হাদী ও শহীদ মুখতার এলাহী হলের বহিষ্কৃত সভাপতি ইমতিয়াজ বসুনিয়া নেতৃত্বে ৮-১০ জনের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে ওই টাকা ছিনিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় শ্রমিকরা তাদের ধাওয়া করে।

এ সময় তারা দুইজনকে আটক করে গণধোলাই দেন। এতে তারা সামান্য আহত হয় বলে তিনি জানান।  এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মুহিবুল ইসলাম মুন জানান, সোমবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রলীগ নেতাকে নির্মাণাধীন ড. ওয়াজেদ রিসার্স  ইন্সটিটিউট থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

পরে তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি হাদিউজ্জামান হাদী ও শহীদ মুখতার এলাহী হল কমিটির বহিস্কৃত সভাপতি ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ বসুনিয়া।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ