আজ শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঘোমটা পরা নারী নয় আইভী

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, আমি এই শহরে ভেসে আসিনি। আমার পৈত্রিক বাড়ি এই নারায়ণগঞ্জে। আমি আমার নারায়ণগঞ্জের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমি কথা বলবোই। নারায়ণগঞ্জের মানুষকে বলতে হবে, আমি নারায়ণগইঞ্জা। সোমবার দুপুরে নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, যে যত কথাই বলুক আমি সেই ঘোমটা পরা নারী নই যে কিছু বললেই লজ্জায় ঘরে ঢুকে যাবো।

মেয়র বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে আপনারাই সাহস জুগিয়েছেন। অনেকেই বলেছেন, তুমি করো, বলো আমরা তোমার পাশে আছি। আপনাদের দোয়া, উৎসাহ, সহযোগিতা সব কিছু মিলিয়ে আজ আমি আইভী। আমি একার আইভী না। আমার সাহস ছিল না, আপনারা আমাকে সাহস দিয়েছেন। আপনারা আমাকে পথ দেখিয়েছেন আর আমি কাজ করেছি।

তিনি আরও বলেন, অনেক অভিযোগ আমাকে শুনতে হয়েছে। তবে আমি আমার জায়গায় অটল ছিলাম। যত কথাই বলো না কেন, আমি সেই ঘোমটা পরা নারী না যে কিছু বললেই লজ্জায় ঘরে ঢুকে যাবো। আমি যখন এসেছি তখন চিন্তাভাবনা করেই এসেছি। যত কথাই বলো না কেন, এখান থেকে পিছ পা হবো না। আমি আর দশজন পুরুষের সঙ্গে সমান তালে তাল মিলিয়ে কাজ করে যাবো। তোমাদেরও তাই করতে হবে।

আইভী বলেন, আগে একটা প্রচলন ছিল, নারায়ণগঞ্জের মানুষ পড়াশোনা করতো না। বাপ-দাদার ব্যবসা ছিল। সেই ব্যবসায় গিয়ে বসে পড়তো। আর মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিতো। আমরা শিক্ষায় পিছিয়ে ছিলাম। কিন্তু এখন গর্বের সঙ্গে সব জায়গায় বলি, আমার জেলার লোকজন অনেক লেখাপড়া করে। আমি সব সময় বলি, মাছের মাথাটা শুধু ছেলেকে নয় মেয়েকেও দেবেন। একজন মেয়ে তার বাবা-মায়ের জন্য অসম্ভব দরকার। মেয়ে যেখানেই থাকুক না কেন সে তার বাবা-মায়ের প্রয়োজনে ছুটে আসে। তাই মেয়েকে ছেলের মত করে গড়ে তুলুন। এর জ¦লন্ত উদাহরণ আমি। নাড়ির টানে আমি আমার সবকিছু ছেড়ে চলে এসেছিলাম।

তিনি বলেন, আমরা সবসময় দেখি অর্থমন্ত্রী সিলেট থেকে আসে। সম্প্রতি কুমিল্লার একজন হয়েছে। দেখা যাবে আগামী ১০ বছর পর নারায়ণগঞ্জ থেকে একজন অর্থমন্ত্রী হবে। অসম্ভব কিছু নাই। আমি কখনো ভাবিনি আমি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মেয়র হবো। আমি চিন্তা করি নাই আমি মেয়র হবো কিন্তু আমার টার্গেট ছিল আমি দেশের সেবা করবো। আমার বাবাকে যেদিকে গেছেন আমিও সেদিকে যাবো। আমি কিন্তু চেয়ারম্যান হয়েই থেমে যেতে পারতাম। ২০১১ সালে পদ ছেড়ে চলে যেতে পারতাম। আমি চাইলে উন্নত দেশে স্বামী, সন্তান নিয়ে আরামে বাস করতে পারতাম। তা না করে পাসপোর্ট জমা দিয়ে আমি ফিরে আসি। আমি যাইনি আমার শহরের টানে, এই মানুষের টানে।

অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের মাঝে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বই উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়। সিদ্ধিরগঞ্জের হলি উইলস্ স্কুলের আয়োজনে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের কমান্ডার শাহ্জাহান ভূইয়া জুলহাস, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কমান্ডের আহ্বায়ক শরীফ উদ্দিন সবুজ, সিদ্ধিরগঞ্জের সফর আলী স্কুল এন্ড কলেজের চেয়ারম্যান জাকিয়া আলী ভূইয়া। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন দৈনিক সংবাদের চীফ রিপোর্টার সালাম জুবায়ের।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ