আজ মঙ্গলবার, ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গুরুর সাহস, খোকার শক্তি

সংবাদচর্চা রিপোর্টঃ

রাজনীতিতে আনোয়ার হোসেন সিনিয়র। সমাজের সব শ্রেনীর মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে এ আওয়ামী লীগ নেতার। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার পর তা আরও বেড়েছে। রাজনীতি সচেতন মহলের মতে, প্রবীন এ রাজনীতিকের তুলনায় জাতীয় পার্টির নেতা লিয়াকত হোসেন খোকা নস্যি। সেই খোকা একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আনোয়ারের নাম ফলক ভেঙ্গে ভুল করেছে বলে মনে করেন সচেতন মহল। তাদের মতে, নিজের নয় গুরুর সাহসে এমন সাহস দেখিয়েছে খোকা। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির নাম ফলক ভেঙে ভুল করেছে খোকা।
আওয়ামী লীগ নেতা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান দিপু বলেন, এ ঘটনা রাজনীতির শিষ্ঠাচারে পরেনা। আমরা খোকা এমপিকে বলবো ওনি যেনো নিজ দায়িত্বে পূণরায় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির নাম ফলক সেখানেই নির্মাণ করে দেন।

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা বলেন, এ ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি মহাজোটের এমপি হয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির নাম ফলক ভাঙেন তা খুবই দুঃখজনক।

মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত এর মতে, আনোয়ার হোসেন জেলা পরিষদের অর্থায়নে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছেন। তা দেখে লিয়াকত হোসেন খোকার মতো এমপি তাকে (আনোয়ার হোসেনকে) ভয় পায়। লিয়াকত হোসেন খোকা ক্ষমতার লোভে বিভিন্ন কর্মকান্ড করে যাচ্ছে, সেগুলো ইতিমধ্যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবার তিনি অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ায় তার অপরাধ দীর্ঘ হচ্ছে। এমপি খোকা কোন সাহসে কিভাবে আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নামফলকে আঘাত করে এমন প্রশ্ন করে সাবেক এ ছাত্রলীগ নেতা বলেন, আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকতে দলীয় নেতার নামফলক ভেঙে ফেলে জাতীয় পার্টির নেতা ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন। আমরা সোনারগাঁয়ের আওয়ামীগের নেতাকর্মীদের পক্ষে আমি এর প্রতিবাদ জানাই।

জানা গেছে, জেলা পরিষদের অর্থায়নে প্রায় ২০ লাখ টাকা খরচ করে সোনারগাঁয়ের জিআর ইনিস্টিটিউশনের মেইন গেট ও ৯০ ফুট লম্বা বাউন্ডারী দেয়াল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন আনোয়ার হোসেন। ওই সময়ে স্কুলের গেটের সামনে নামফলকটি লাগানো হয়। মঙ্গলবার ওই স্কুলে একটি সভায় গেলে নামফলকটি স্থানীয় এমপি ও জাতীয় পার্টি নেতা লিয়াকত হোসেন খোকার নজরে পরে। এরপর তিনি রেগে গিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নানা ভাষায় ভৎসনা করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খোকা এমপি রাগাম্বিত হয়ে চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পর তার লোকেরা এসে নামফলকটি ভেঙ্গে ফেলে।

নামফলক ভাঙ্গার বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে অস্বীকার করেছেন লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি। সেই সাথে তিনি দাবি করেন, এ উন্নয়ন কাজ জেলা পরিষদের নয়। আমার প্রজেক্টে তিনি কেন নামফলক লাগালেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কী আমার চেয়ে উপরে ?

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, খোকা এমপি নিজে এমন সাহস দেখাতে পারবেন না। তিনি সাহস দেখিয়েছেন তার গুরুর প্রভাবে। অতীতে ওই গুরু নিজের রাজনৈতিক গুরু আনোয়ার হোসেনের সাথে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ন্যাক্কারজনক আচরণ করেছিলেন। আনোয়ার হোসেনের মতো সিনিয়র রাজনীতিককে ধাক্কা মেরেছিলেন গুরুর অনেক অনুগতরা। তেড়ে গিয়েছিলেন গুরু নিজেও।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ