আজ শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গভীর রাতে বউ মারে!

গভীর রাতে বউ মারে!

অ.শুভ

১ বছর ৪ মাস ধরে সংসারে নানা ভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বন্দরের কাইতাখালী এলাকার উম্মে সালমা ইতি। ওই গৃহবধূর স্বামী সাঈদ শিকদার সানী তাকে গভীর রাতে মারধর করতো। গৃহবধূর বাবার অভিযোগ, এক ডিসি’র ভাই বলে পরিচয় দিয়ে ভয় দেখাতো তার মেয়েকে। 

ভুক্তভোগীরা জানান, বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাইতাখালী এলাকার মৃত শফিউদ্দিন সিকদারের বড় ছেলে সাঈদ শিকদার সানী। বিয়ের করেন পাশের এলাকার রূপনগরের উম্মে সালমা ইতি কে। বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার ৪ দিন আগে খুন হয় সানীর ছোট ভাই মিজান শিকদার মিশর। এর কয়েক দিন পর নববধু ইতিকে ঘরে তুলে সানী। ইতি ও তার বাবার অভিযোগ, কিছু দিন যেতে না যেতেই তাকে শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে সানিসহ তার পরিবারের সদস্যরা।

একপর্যায়ে বন্দর থেকে ইতিকে নিয়ে যায় নরসিংদীর গাবতলীতে সানীর বোনের বাড়িতে। সেখানে কয়েকমাস নানা ভাবে মানসিক নির্যাতন করে। পরে নিয়ে যায় গাজিপুরের কাশিমপুর রওশন মার্কেট এলাকায়। সেখানে থাকা অবস্থায় কয়েকবার ইতিকে বালিশ চাপা দিয়ে ও গলা টিপে হত্যা করার চেষ্টা করে সানী। সব শেষ দেড় মাস আগে এক গভীর রাতে গৃহবধু ইতিকে নির্যাতন করে হত্যা করতে চায় সানী শিকদার। ওই রাতে পাশের ফ্ল্যাটের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে তার বাবা সেখানে গিয়ে তাকে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে আসে। এ ঘটনার কিছুদিন পর ইতি জাতীয় মহিলা সংস্থা নারায়ণগঞ্জের অফিসে অভিযোগ করেন।

গৃহবধূ ইতি’র বাবা আব্দুর রাজ্জাক গাজী সংবাদচর্চা কে জানান, বিয়ের পর থেকে আমার মেয়ে কে  নানা ভাবে নির্যাতন করেছে তার স্বামী সানী।  ইতিকে একাধিকবার গলা চেপে হত্যার চেষ্টাও করছে। সানী আমাদের নানা ভাবে হুমকি দিয়েছে। সে তার এক ডিসি ভাইয়ের কথা বলে আমার মেয়ে কে ভয় দেখাতো আর মারতো। মেয়ে কে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে এসে বন্দর থানায় একটি অভিযোগ করেছেন বলে জানান গৃহবধূর বাবা।

এ প্রসঙ্গে সাঈদ শিকদার সানী বলেন, আমার স্ত্রী যেসব অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা। আমার মা একজন প্যারালাইস রোগী। আমি গার্মেন্টেস এ চাকুরি করি। আমরা ইতি কে অত্যাচার করিনি। মহিলা সংস্থায় এ ব্যাপারে শালিস করছে এটা সত্য। এক প্রশ্নের জবাবে সানী বলেন, আমার খালাতো ভাই জয়পুর হাট জেলার ডিসি মোহাম্মদ জাকির হোসেন। তবে তিনি আমাদের পারিবারিক বিষয়ে কিছুই জানেন না। আমি কখনো ইতির (স্ত্রী) পরিবার কে ভাইয়ের কে কথা বলিনি।

এ প্রসঙ্গে মহিলা সংস্থা নারায়ণগঞ্জ জেলার কর্মকর্তা বারী জানান, ইতি নামে এক গৃহবধূ তার স্বামী সাঈদ শিকদার সানীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিবাদি সানী কে নোটিশ করা হয়। পরে দুই পক্ষ কে নিয়ে বসে সিদান্ত হয় মেয়ের দেনমোহরসহ তার কাছ থেকে নেয়া আসবাপত্র বুঝিয়ে দিবেন।  বিবাদি সময় চাইলে পরে তাকে সময় দেয়া হয় দুইবার কিন্তু সে আসেনি। আমরা নোটিশ করছি, আশা করছি পরবর্তী নির্ধারিত দিন তিনি আসবেন। 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে সাঈদ শিকদার সানী নামে কোন খালাতো ভাই আছে জানতে জয়পুর হাট জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেনের মুঠো ফোনে কল দেয়া হয় তবে তিনি তা রিসিভ করেননি।  

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ