আজ বৃহস্পতিবার, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কেউ দুর্নীতি করলে জনগণ কিন্তু মাথায় রাখে এমপিদের উদ্দেশ্যে: প্রধানমন্ত্রী

কেউ দুর্নীতি করলে জনগণ

কেউ দুর্নীতি করলে জনগণ

নবকুমার:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন , ‘আমি এমপিদেরও বলব, একটা জিনিস মাথায় রাখবেন, কেউ দুর্নীতি করলে জনগণ কিন্তু মাথায় রাখে। কাজ করতে গিয়ে টাকা নিলে এরপর ভোট চাইতে গেলে বলবে, টাকা দিয়ে কাজ নিছি ভোট দেব কেন? জনগণের চোখ কিন্তু এখন খুলে গেছে। এখন ডিজিটাল যুগ।’

‘আমি এটাই বলব, যারা আমার দলের বিরুদ্ধে কথা বলবে, দলের বিরুদ্ধে বদনাম করবে সে কি এটা বুঝে না যে, তাঁর ভোটও নষ্ট হবে। সে তাহলে কোন মুখে ভোট চাইতে যাবে? ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর যদি দলের বিরুদ্ধে বদনাম করে তাহলে জনগণ তো তাকেও ভোট দেবে না। সেটা তাদের মনে রাখতে হবে। অবশ্য প্রার্থী হওয়ার স্বাধীনতা সবার আছে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘এমপিরা নমিনেশন পাবেন কী পাবেন না সেটা নির্ভর করবে- আপনি এলাকায় কতটুকু জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পেরেছেন আর তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কীভাবে মূল্যায়ন করেছেন তার ওপর।’

বিগত ১০ বছরের আওয়ামী লীগের দুটি সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৃণমূলের নেতাদের দায়িত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যদি টানা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে না পারে তাহলে তার জন্য দায়ী থাকবে তৃণমূল।

আজ শনিবার আওয়ামী লীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে সারা দেশ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আসা চার হাজারের বেশি দলীয় নেতাকর্মীর সামনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সামনে নির্বাচন। এই নির্বাচন… সবসময় মাথায় রাখতে হবে নির্বাচন মানেই এটা চ্যালেঞ্জিং হবে। কাজেই এই নির্বাচনে… এটা কিন্তু মাথায় রাখতে হবে। এটা কিন্তু আমাদের একটানা তৃতীয়বার। এই তৃতীয়বারের জন্য স্বাভাবিকভাবেই সবাইকে কিন্তু এক হয়ে কাজ করতে হবে।’

এ দিন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন ১০তলা নতুন দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীদের এনে সেই শুভ কাজের অংশীদার করে রাখাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। পরে তাদের নিয়ে গণভবনে বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়।

সেখানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর দীর্ঘ বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, ‘এই উন্নয়ন করার ফলে মানুষ যে নৌকায় ভোট দেবে না তা কিন্তু হয় না। যদি না দেয় তার জন্য দায়ী থাকবেন আপনারা তৃণমূলে। এটাই আমার কথা।’

‘কারণ, আপনারা সঠিকভাবে মানুষের কাছে যেতে পারেননি, বলতে পারেননি, বুঝাতে পারেননি, সেবা দিতে পারেননি। সেই জন্যই, নইলে এখানে তো হারার কোনো কথা না। কারণ, এত উন্নয়ন বাংলাদেশে কবে হয়েছে? কোন সরকার করতে পেরেছে? কোনো সরকার করতে পারে নাই। তাহলে কেন অন্যদল ভোট পাবে?’, যোগ করেন শেখ হাসিনা।

দলীয় নেতাদের সতর্ক করে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করছি, কেউ কেউ কিন্তু স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে প্রার্থী হয়ে গেছেন। আর প্রার্থী হয়ে তাদের বক্তব্যে বিএনপি কী লুটপাট করল, সন্ত্রাস করল সেটা বলেন না। তার বক্তব্য এসে যায় আমার আওয়ামী লীগের এমপির বিরুদ্ধে, সংগঠনের বিরুদ্ধে।’

(এ সময় নেতারা হাততালি দিয়ে দলীয় সভানেত্রীর কথায় সায় দেন।)

সভাপতি ফের বলেন, ‘আমি এখানে একটা ঘোষণা দিতে চাই। কেউ যদি আমার দলের… এত কাজ আমরা করেছি। দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি, কীভাবে দেশটাকে উন্নত করব। যে উন্নয়নের কাজগুলো করছি। সেগুলো না বলে, সেগুলো ভুলিয়ে দিয়ে কোথায় কার দোষ আছে সেটা খুঁজে জনগণের কাছে যাঁরা বলবেন, তাঁরা কখনো আওয়ামী লীগের নমিনেশন পাবেন না। পরিষ্কার কথা। তাঁরা কখনো আওয়ামী লীগের নমিনেশন পাবেন না। কারণ, আমি রেকর্ড করছি। আজকাল ডিজিটাল বাংলাদেশ।’

এ সময় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মহাজোট করেছি। সেটা থাকবে। আমরা বন্ধু হারাবো না। এই ত্যাগ আমাদের করতে হবে। কিন্তু কে প্রার্থী হয়েছে সেটা চিন্তা না করে নৌকায় মার্কায় ভোট চাইতে হবে। এখন থেকেই মানুষের কাছে যেতে হবে।’

দলে অনুপ্রবেশকারী প্রসংঙ্গে এমপি ও নেতাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা অন্যদল থেকে আসে তারা আপনার কাছে মধু খেতে আসে থাকতে নয়।বিপদের সময় ওকে কাছে পাবেন না। দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে।

সারা দেশে দলের নেতাকর্মীদের কোন্দলে না জড়িয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার পক্ষে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, সামনের নির্বাচন হবে চ্যালেঞ্জের।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ